• ছাপা বইয়ের কৌলিন্য ফেরাতে নরেন্দ্রপুরে বইমেলা শুক্রবার থেকে, থাকবে বাংলা ভাষার ভবিষ্যৎ নিয়েও আলোচনাসভা
    আনন্দবাজার | ১৪ আগস্ট ২০২৫
  • এখন বই পড়ার ঝোঁক কমছে বলে অনুযোগ শোনা যায় হামেশাই। সত্যিই কি তা-ই? এ নিয়ে তর্ক চলতেই থাকবে। কেউ বলবেন, আসলে ‘বই বিমুখতা’ বাড়েনি। ছাপা বই পড়ার বদলে এখন বেড়েছে ‘ই-বুক’ পড়ার চল। কিন্তু তা কি আর হাতে বই নিয়ে পড়ার স্বাদ দিতে পারে?

    ছাপা বইয়ের কৌলিন্য ফেরানোর বার্তা দিতেই কলকাতা সংলগ্ন নরেন্দ্রপুরে বইমেলার আয়োজন করল একটি আবাসন। শুধু তা-ই নয়, আয়োজকদের আরও একটি লক্ষ্য— পরবর্তী প্রজন্মকে বাংলা ভাষার গুরুত্ব বোঝানো। এই বিষয়ে একটি আলোচনাসভারও আয়োজন করা হয়েছে।

    সুগম পার্ক আবাসনের সাংস্কৃতিক শাখা ‘কৃষ্টি’ এবং ‘কলকাতা ক্রিয়েটিভ পাবলিশার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’-এর যৌথ উদ্যোগে ‘সুগম পার্ক বইমেলা’র আয়োজন করা হয়েছে। ১৫ অগস্ট, স্বাধীনতা দিবসে বিকেল ৪টেয় বইমেলার উদ্বোধন করবেন জাদুকর পিসি সরকার (জুনিয়র)। উপস্থিত থাকবেন টেকনো ইন্ডিয়ার কর্ণধার মানসী রায়চৌধুরী, সাহিত্যিক সমীরণ দাস, জয়দীপ চক্রবর্তী, সৈকত মুখোপাধ্যায়।

    বইমেলা চলবে তিন দিন, ১৭ অগস্ট পর্যন্ত। সময়, দুপুর ২টো থেকে রাত ৮টা। স্থান, নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনের ঠিক উল্টো দিকে। ‘সুগম পার্ক বইমেলা’য় মিলবে আনন্দ, অভিযান পাবলিশার্স, দে’জ, মিত্র ও ঘোষ, কথোপকথন প্রোডাকশনস্, অক্ষর সংলাপ, সুলেখা-সহ ২৫টি প্রকাশনা সংস্থার বই। থাকবে লিটল ম্যাগাজ়িনের স্টলও।

    বইমেলায় নানা অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম হল, বাংলা ভাষার ভবিষ্যৎ নিয়ে একটি আলোচনাসভা। বিষয়: ‘নিজের ভাষার ভবিষ্যৎ নিয়ে বাঙালি ভাবে কি?’ তাতে অংশগ্রহণ করবেন ভাষাবিদ পবিত্র সরকার, নাট্য নির্দেশক বিভাস চক্রবর্তী, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন অধ্যাপক সঞ্জয় মুখোপাধ্যায় এবং লেখক বৈজয়ন্ত চক্রবর্তী।

    ঘটনাচক্রে, সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতির আঙিনাতেও ঢুকে পড়েছে বাংলা ভাষা। তা নিয়ে শাসক-বিরোধী সংঘাত তুঙ্গে। দেশের অন্তত ৫-৭টি রাজ্যে বাংলাভাষীদের উপরে নিগ্রহের অভিযোগ ওঠার পরেই এ নিয়ে সুর চড়িয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সূত্রে রাজনৈতিক আলোচনায় বাঙালি জাতিসত্তার পরিচিতিও ঢুকে পড়েছে।

    সেই আবহে বাংলা ভাষার ভবিষ্যৎ নিয়ে এই আলোচনাসভার আয়োজন যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। ‘কৃষ্টি’র সভাপতি গোপা ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘প্রথম থেকেই আমাদের লক্ষ্য ছিল যে, আমরা বাংলা ভাষার উপরেই জোর দেব। আর এখন যা পরিস্থিতি, তাতে বাংলা ভাষার ভবিষ্যৎ কী, কার হাতে, আমরা জানি না। পরবর্তী প্রজন্মকে যদি আমরা বাংলা ভাষার গুরুত্ব বোঝাতে না পারি, তা হলে বিপদে পড়তে হবে।’’
  • Link to this news (আনন্দবাজার)