শুভেন্দুর কথা রাখতে বন্যার জলের খোঁজ, হন্যে কর্মীরা
আনন্দবাজার | ১৪ আগস্ট ২০২৫
‘একটু জল পাই কোথা বলতে পারেন?’
সুকুমার রায়ের ‘অবাক জলপান’-এ এই সহজ প্রশ্নই ঘোরতর জটিল করে তুলেছিল পরিস্থিতি। আপাতত সেই জলেরই খোঁজে ঘাটালের বিজেপি কর্মীরাও বেশ বিপাকে পড়েছেন। না, তৃষ্ণা নিবারণের জল নয়, তাঁরা খুঁজছেন বন্যার জল।
এ বার বর্ষায় টানা প্রায় দু’মাস জলবন্দি ছিল ঘাটাল। এখন অবশ্য অনেক জায়গায় জল কমেছে। সকালে যেখানে মানুষ সমান জল ছিল বিকেলে সেখানেই হাঁটু সমান জল। জলস্তর দ্রুত নামছে। স্বস্তি ফিরছে ভুক্তভোগীদের। তবে তাতেই বিপাকে পড়েছেন স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব। নৌকা ভাসানোর জন্য জলমগ্ন এলাকা খুঁজে বেড়াচ্ছেন তাঁরা।
দিন সাতেক আগে ঘাটালে এসেছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তখনই জানিয়েছিলেন বানভাসিদের নিয়ে আগামী ১৫ অগস্ট ঘাটালে নৌকায় করে প্লাবিত এলাকায় গিয়ে জাতীয় পতাকা তুলবেন। কিন্তু গত কয়েকদিনে ঘাটালের জলমগ্ন পরিস্থিতির সার্বিক উন্নতি হয়েছে। ফলে, শুভেন্দুর দেওয়া কথা রাখতে জলের খোঁজে হন্যে ঘাটালের বিজেপি কর্মীরা।ঘাটালের বিজেপি বিধায়ক শীতল কপাট মানলেন, “কোথায় নৌকা চলবে, সেই জায়গা কিছুতেই চূড়ান্ত করা যাচ্ছে না। জলস্তর খুব দ্রুত কমছে। এটা অবশ্যই ভাল। আপাতত মনসুকার একটা জায়গা চিহ্নিত করা হয়েছে। ওখানে সামনেই নদী। বিরোধী দলনেতার কর্মসূচি ঘোড়ুইঘাট এলাকায় করার চিন্তাভাবনা হয়েছে।”
পদ্ম কর্মীরা জানাচ্ছেন, গত তিন-চার দিনে ঘাটালে প্লাবিত এলাকা থেকে বন্যার জল কমেছে। ঘাটাল শহর সহ ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকার রাস্তাও প্রায় জলমুক্ত। নীচু এলাকায় জল থকলেও বহু জায়গাতেই নৌকা চলার মতো পরিস্থিতি নেই। তার উপর এমন জলমগ্ন এলাকা চাই যেখানে বিজেপির শক্তি রয়েছে। না হলে তো কর্মসূচিই করা যাবে না। সব দিক ভেবেই মনসুকার ঘোড়ুইঘাট এলাকাটি বাছা হয়েছে। অপেক্ষাকৃত নীচু ওই এলাকার কাছে নদীও রয়েছে। ফলে, সেখানে অন্তত নৌকা ভাসানো যাবে।
শুভেন্দুর বিজেপির বিশেষ ত্রাণ শিবিরের ঘোষণাও করে গিয়েছেন। ১৪ থেকে ১৬ অগস্ট ওই ত্রাণ শিবির হওয়ার কথা। তড়িঘড়ি পাল্টা কর্মসূচি নিয়েছে ঘাটালের তৃণূমলও। বিজেপির রান্না করা খাবার বিলির উদ্যোগের পাশাপাশি রাজ্যের শাসক দল শুকনো খাবার বিলির কর্মসূচি নিয়েছে। জানা গিয়েছে, আজ,বৃহস্পতিবার বিজেপির তরফে খিচুড়ি বিলি করা হবে। কাল, শুক্রবার থাকবে সব্জি-ভাত। শনিবারও বানভাসিদের খিচুড়ি খাওয়াবে গেরুয়া শিবির। তৃণমূল আগেই রান্না করা খাবার বিলি করেছিল। এ বার চাল, ডাল, আলু, মশলাপাতি দিয়ে শুকনো খাবারের প্যাকেট বিলির সিদ্ধান্ত হয়েছে। আগামী দু’দিনে সে সব বিলি করা হবে বলে জানিয়েছেন তৃণমূলের ঘাটাল সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অজিত মাইতি। এই ত্রাণ-রাজনীতিতে অবশ্য বিরক্ত প্লাবিত এলাকার বাসিন্দারা।