চার দিন কেটে গেলেও তৃণমূলের যুব নেতা সঞ্জীব রায় ওরফে অমর খুনে দুষ্কৃতীরা এখনও ধরা পড়েনি। তা নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে তৃণমূলের অন্দরে। বুধবার কোচবিহার জেলা পুলিশ সুপার দ্যুতিমান ভট্টাচার্যের সঙ্গে দেখা করেন অমরের মা কুন্তলা রায়। সেখান থেকে বেরিয়ে সিআইডি তদন্তের দাবি করেন তিনি। এর আগে তিনি সিবিআই তদন্তের দাবি করেছিলেন।
এ দিন কুন্তলা বলেন, ‘‘রাজ্য পুলিশের উপরে আমার ভরসা আছে। আমি সিআইডি তদন্ত চাই।’’ সিবিআই তদন্তের প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ‘‘আমি মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছিলাম। আমার রাজ্য পুলিশে আস্থা আছে।’’
কোচবিহারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কৃষ্ণগোপাল মিনা বলেন, ‘‘ওই ঘটনার তদন্ত চলছে। সুনির্দিষ্ট কিছু পেলে আমরা জানিয়ে দেব। কুন্তলা রায়ের দাবির কথা নির্দিষ্ট জায়গায় জানানো হবে।’’ তদন্তকারী আধিকারিকদের এক জন জানান, কয়েক জন সন্দেহভাজনের নাম পুলিশের হাতে এসেছে। তবে তারা প্রত্যেকেই পলাতক। তাদের খুঁজে বার করতে বেগ পেতে হচ্ছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত শনিবার কোচবিহারের পুন্ডিবাড়ি থানার ডোডেয়ার হাটে কোচবিহার ১ নম্বর ব্লকের যুব তৃণমূলের সহ-সভাপতি সঞ্জীব রায় ওরফে অমরকে গুলি করে খুন করে দুষ্কৃতীরা। অমরের গাড়ির চালক আলমগির হোসেনও গুলিবিদ্ধ হন। অমরের বাড়ি ওই ব্লকেরই ডাউয়াগুড়িতে। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরে, দু’টি মোটরবাইকে চেপে দুষ্কৃতীরা ডোডেয়াহাট পৌঁছয়। হত্যাকাণ্ডের সময় হেলমেট ও মাস্ক দিয়ে মুখ ঢাকা ছিল দুষ্কৃতীদের। তারা যে মোটরবাইক ব্যবহার করেছিল তা নম্বরপ্লেটহীন। নাইন এমএম পিস্তল থেকে গুলি ছুঁড়েছিল দুষ্কৃতীরা। সেই গুলিতেই অমরের মৃত্যু হয়। ঘটনার পর বাণেশ্বরের দিকে পালিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। দুষ্কৃতীদের হদিস পেতে রাস্তায় একাধিক নজর ক্যামেরার ফুটেজ পরীক্ষা করেছে পুলিশ। ঘটনার কিনারা করতে এখনও পর্যন্ত প্রায় কুড়ি জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ।
গত ৩ জুলাই কোচবিহার ২ ব্লকের যুব তৃণমূল নেতা রাজু দে গুলিবিদ্ধ হয়েছিল চকচকায়। এর পরে গুলিবিদ্ধ হয়ে খুনের ঘটনায় শাসক দলের ছোট-বড় অনেক নেতাই উদ্বেগে রয়েছেন। সূত্রের খবর, কেউ কেউ নিরাপত্তারক্ষী বা দলের সক্রিয় সদস্যদের ঘেরাটোপ ছাড়া বেশি প্রকাশ্যে বেরোতে চাইছেন না। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহ বলেন, ‘‘এমন ভয়ের ব্যাপার নেই। দুষ্কৃতীরা শীঘ্রই ধরা পড়বে বলে আশা করছি।’’ তৃণমূল মুখপাত্র পার্থপ্রতিম রায় বলেন, ‘‘আতঙ্ক হওয়াটা স্বাভাবিক। তবে পুলিশ দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে মানুষের মনোবল বাড়াবে বলেবিশ্বাস রাখি।’’