সিঙ্গুরের নার্সিংহোমে উদ্ধার তিন দিন আগে কাজে যোগ দেওয়া নার্সের ঝুলন্ত দেহ, খুনের অভিযোগ! পথ অবরোধ
আনন্দবাজার | ১৪ আগস্ট ২০২৫
এক নার্সিংহোমে নার্সের মৃত্যু ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়াল হুগলির সিঙ্গুরে। বুধবার রাতে ওই নার্সিংহোমের চারতলা একটি ঘর থেকে ওই নার্সের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে উত্তেজনা ছড়ায় নার্সিংহোমের বাইরে। পথ অবরোধ করেন স্থানীয়েরা।
দিন কয়েক আগে সিঙ্গুরের ওই নার্সিংহোমে নার্সের কাজে যোগ দিয়েছিলেন নন্দীগ্রামের দীপালি জানা। তাঁর বাবা সুকুমার জানা জানান, বেঙ্গালুরু থেকে নার্সিং পড়ে বাড়ি ফিরেছিলেন দিন কয়েক আগে। এক বান্ধবীর সূত্র ধরে চাকরি পান সিঙ্গুরের বোড়াই তেমাথা এলাকায় শিবম সেবাসদন নার্সিংহোমে। বুধবার রাতে সেই নার্সিংহোমের একটি ঘর থেকে পাওয়া যায় দীপালির ঝুলন্ত দেহ। কী কারণে মৃত্যু, তা এখনও স্পষ্ট নয়। পুলিশ অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে। তবে মৃতার পরিবারের দাবি, দীপালিকে খুন করা হয়েছে!
বছর চব্বিশের দীপালির বাড়ি নন্দীগ্রামের রায়নগরে। মৃতার বাবার অভিযোগ, বুধবার রাত ১১টা নাগাদ নার্সিংহোম থেকে ফোন করে আসার জন্য জানানো হয়। কারণ জিজ্ঞাসা করলে বলা হয়, দীপালি গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন। ভোর সাড়ে ৩টে নাগাদ পরিবারের অন্য লোকদের নিয়ে নার্সিংহোমে পৌঁছোন সুকুমার। কিন্তু সেখানে দীপালিকে দেখতে পাননি তাঁরা। সুকুমারের কথায়, ‘‘আমাদের বলা হয়, পুলিশ এসে দীপালির দেহ নিয়ে গিয়েছে। কেন আমাদের না দেখিয়ে পুলিশ দেহ নিয়ে গেল?’’ নার্সিংহোমের তরফে আত্মহত্যার কথা বললেও মৃতার পরিবার খুনের অভিযোগ তুলেছে। সুকুমারের কথায়, ‘‘আমার মেয়ে কোনও দিন আত্মহত্যা করতে পারে না। আমার মেয়েকে ওরা খুন করেছে। ওই নার্সিংহোমের মালিকের শাস্তি চাই।’’
পরিবারের দাবি, কাজে যোগ দেওয়ার পর একাধিক বার দীপালির সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছে। কথাবার্তা শুনে কখনই মনে হয়নি দীপালি মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত। ভাল ভাবেই কথা হয়। তার পরে এই কাণ্ড। মৃতার বান্ধবী মল্লিকা বাউরি জানান, দীপালিকে কারও সঙ্গে কথা বলেননি। বুধবার রাতে যখন নার্সিংহোমে চার তলায় যান, তখন ওই ঘরের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ ছিল। জানলা দিয়ে উঁকি মেরে মল্লিকা দেখেন দীপালি গলায় ফাঁস দিয়ে সিলিং থেকে ঝুলছে।
ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। হুগলি গ্রামীণ পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কৃশানু রায় জানান, নার্সিংহোমে একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলে মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হবে। খুনের অভিযোগ প্রসঙ্গে কৃশানু বলেন, ‘‘মৃতার পরিবার মৌখিক ভাবে যেটা বলছে সেটা লিখিত আকারে জমা পড়লে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’