প্রাথমিকে রাজ্যে মেয়েদের স্কুলছুটের হার শূন্য শতাংশ, মমতা বললেন, 'পারে না বলে কোনও কথা মেয়েদের অভিধানে নেই'...
আজকাল | ১৪ আগস্ট ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: মমতা ব্যানার্জির জমানায় রাজ্যে একযোগে প্রায় একশ প্রকল্পের সুযোগ পায় রাজ্যবাসী। তার মধ্যে অবশ্যই উল্লেখযোগ্য বিশ্বের দরবারে বহিল প্রশংসিত কন্যাশ্রী প্রকল্প। সমাজে মেয়েদের ক্ষমতায়নের কথা বারেবারে বলেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। ভাবনার রূপায়নে এনেছেন কন্যাশ্রীর মতো প্রকল্প। বিশ্বের মঞ্চে প্রশংসিত এই প্রকল্পের বারো বছর। সেই উদযাপনেই মমতা জানালেন, এখনও পর্যন্ত প্রায় ৯৩ লক্ষ মেয়ে এই প্রকল্পের দ্বারা উপকৃত হয়েছে। জানালেন, ৬২ দেশের ৫৫২ প্রকল্পের মধ্যে সেরার সেরা বাংলার কন্যশ্রী প্রকল্প। ধনধান্য স্টেডিয়ামে নিজের লেখা কবিতাও পাঠ করলেন মমতা।
২০২৪-২৫ সালের কন্যাশ্রী রূপায়নের ভূমিকার নিরিখে প্রথম হয়েছে বাঁকুড়া, দ্বিতয় স্থানে পূর্ব বর্ধমান, তৃতীয় স্থানে পশ্চিম বর্ধমান, বিশেষ পুরষ্কার পেয়েছে ঝাড়গ্রাম এবং উত্তর দিনাজপুর। স্কুলগুলির মধ্যে প্রথম হয়েছে বরিশা গার্লস হাই স্কুল, দ্বিতীয় বেহালা সারদা বিদ্যাপীঠ ফর গার্লস, তৃতীয় স্থানে উচ্চ বালিকা বিদ্যামন্দির ফর উচ্চ মাধ্যমিক। কলকাতার কলেজগুলির মধ্যে এই প্রকল্পের রূপায়নে প্রথম হয়েছে বঙ্গবাসী কলেজ, দ্বিতীয় স্থানে বিবেকানন্দ কলেজ ফর উইমেন্স, তৃতীয় স্থানে আশুতোষ কলেজ।
এদিন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বারেবারে যেমন তাঁর জমানার প্রকল্প কীভাবে সাধারণ মানুষকে এগিয়ে দিচ্ছে কয়েক কদম তা বলেন, তেমনই নানা দিকের কথা তুলে ধরেন বক্তব্যে। বলেন নেদারল্যান্ডে ইউনাইটেড নেশনস-এর ফোরামে দাঁড়িয়ে থাকার আবেগঘন মুহূর্তের কথা। মেয়েরা সমাজে কী করতে পারে, সেকথা বলতে গিয়ে সমাজের নানা খাতে মহিলাদের ভূমিকার কথা তুলে ধরেন তিনি। বলেন, 'আমি গর্বের সঙ্গে বলতে পারি, ২০১১ সালের পর থেকে, প্রাথমিক শিক্ষায় ২০১১-১২-তে মেয়েদের স্কুলছুটের হার ছিল পৌণে পাঁচ শতাংশ, আজ তা শূন্য। সেকেন্ডারিতে ২০১১-১২ বর্ষে মেয়েদের স্কুলছুটের হার ছিল ১৬.৩২ শতাংশ, ২০২৩-২৪-এ তা হয়েছে ২.৯ শতাংশ। হায়ার সেকেন্ডারিতে ২০১১-১২ বর্ষে মেয়েদের স্কুলছুটের হার ছিল ১৫.৪১ শতাংশ, চলতি শিক্ষা বর্ষে তা ৩.১৭ শতাংশ। এটা কি গর্ব করার বিষয় নয়?'
এই সরকার মহিলাদের ক্ষমতায়নে যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে, তাতে রাজ্যের নানা জেলার, নানা স্থানের কিশোরী, যুবতীরা যেভাবে উপকৃত হচ্ছেন, সেকথা বলতে নিয়ে নিজের ছোটবেলার পরিস্থিতির কথাও তুলে ধরেন। বলেন, সেই সময়ের সমস্যার মধ্যে দিয়ে যেন এখনকার পড়ুয়াদের যেতে না হয়। বাবা-মায়েদের উদ্দেশে বলেন, 'আমি অনুরোধ করব, আপনারা মেয়েদের বিয়ে দেওয়ার জন্য চাপ দেবেন না। তারা নিজেদের ভাগ্য নিজেরাই গড়ে নিতে পারে। তাদের নিজেদের পায়ে দাঁড়াতে দিন। তাদের আত্মনির্ভর হতে দিন। যখন সে ১৮ বছর পূর্ণ করছে তখন সে ২৫ হাজার টাকা পাচ্ছে, সেই টাকা ব্যাঙ্কে রেখে দিন। একজন ছোট্ট বন্ধু এসে বলে গেল সে একটা বেকারি করেছে। মেয়েদের বিয়ের সময়ের রূপশ্রী প্রকল্পেও ২৫ হাজার টাকা পায়। সুতরাং বাবা মায়ের চিন্তার প্রয়োজন নেই। মেয়েরা যেমন সংসার চালায়, মেয়েরা দেশ চালায়, প্লেন চালায়, সারা বিশ্ব চালায়, পারে না বলে কোনও কথা মেয়েদের অভিধানে নেই।' মেয়েদের কোন বয়সে, কোন কোন প্রকল্প রাজ্য সরকার দিয়ে থাকে, সবুজ সাথী থেকে তরুণের স্বপ্ন, নানা প্রকল্পের উল্লেখ করেন তিনি।
স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যবাসীকে বার্তা দেন, মাথা উঁচু করে এগিয়ে যাওয়ার। রবীন্দ্রনাথ আওড়ে বলেন, 'চিত্ত যেথা ভয়শূন্য, উচ্চ যেথা শির...।'