জনপ্রিয় চরিত্র এক ধরনের চাপ মুক্ত করে রাখে: ঋত্বিক চক্রবর্তী
হিন্দুস্তান টাইমস | ১৪ আগস্ট ২০২৫
সমস্ত অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে, নানা জটিলতা কাটিয়ে অবশেষে মুক্তি পেতে চলেছে ‘অ্যাডভোকেট অচিন্ত আইচ ২'। চলতি বছরের ১৫ অগস্ট অর্থাৎ স্বাধীনতা দিবসের আবহে মুক্তি পেতে চলেছে এই সিরিজ। ইতিমধ্যেই সিরিজের ট্রেলার প্রকাশ্যে এসেছে। সেখানে একেবারে ‘অচিন্ত আইচ’-এর সেই চেনা ছন্দে নজর কেড়েছেন অভিনেতা ঋত্বিক চক্রবর্তী। কিন্তু এত অপেক্ষা পর অবশেষে সিরিজ মুক্তি পাওয়া নিয়ে তিনি ঠিক কতটা উৎসাহিত তিনি? হিন্দুস্তান টাইমস বাংলার সঙ্গে সে কথাই ভাগ করে নিলেন অভিনেতা।
এতটা অপেক্ষার পর আবার ফিরছে ‘অচিন্ত্য’, এতে অভিনেতার অনুভূতিটা ঠিক কেমন? প্রশ্নে নায়ক জানান, ‘খুবই ভালো। আসলে অচিন্ত্য আমার পছন্দের একটা চরিত্র। দর্শকদরাও এই চরিত্রটিকে পছন্দ করেছিলেন। ফলে তাঁদের মধ্যেও একটা অপেক্ষা ছিল। পাশাপাশি আমিও অপেক্ষা করেছিলাম কবে আসবে। আসলে আমি সিরিজ যে খুব বেশি করেছি তেমনটা নয়, আবার খুব কম করেছি তেমনটাও নয়। তবে 'গোড়া' আর ‘অচিন্ত্য’ এই দুটোর দ্বিতীয় সিজন করলাম। এই কাজটা করতে গিয়ে অভিনেতা হিসেবে একটা নতুন অভিজ্ঞতা হয়েছে। তাই সবটা মিলিয়ে ভালো লাগছে।’
তবে দ্বিতীয় সিজন মানেই সেটা ঘিরে দর্শকদের অনেকখানি প্রত্যাশা থাকে। আর এই সিরিজের ক্ষেত্রে প্রোমোর একদম শুরুতে 'অচিন্ত্য আইচ'কেই বলতে শোনা যায়, ‘সিজিন ওয়ানের পর আমি তো দারুণ ফেমাস হয়ে গিয়েছি।’ ফলে এই জনপ্রিয়তা কি চরিত্রটা সঠিক ভাবে ফুটিয়ে তোলার চাপ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে? এই কথার সঙ্গে একেবারেই বিপরীত মত পোষণ করেন অভিনেতা। তাঁর কথায়, ‘না, আমার ক্ষেত্রে চাপ বাড়ায় না, বরং জনপ্রিয় চরিত্র এক ধরনের চাপ মুক্ত করে রাখে। তবে জনপ্রিয়তার ফলে একটা প্রত্যাশা সত্যি তৈরি হয়। সেই প্রত্যাশা পূরণের জন্য আমরা পরিশ্রম করি। কিন্তু সেই প্রত্যাশার চাপ নিয়ে কাজ করা যায় না। কাজটা ভালো করার জন্য এগুলো সরিয়ে রেখে কাজটা করতে হয়। তারপর কাজটা দর্শকদের সামনে রাখা হয়। তখন তাঁরা তা আবার গ্রহণ করবেন কিনা সেটা তাঁদের উপরই নির্ভর করে।’
এই সিরিজের প্রোমোতে যতটুকু দেখানো হয়েছে তা সমাজের ভয়াবহ কিছু দিককে তুলে ধরেছে। যে সব ঘটনা কখনওই কাম্য নয়। সিরিজে দেখানো হয়। একটি ধনী পরিবারের স্কুল পড়ুয়া মেয়েকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। সকলের দাবি মেয়েটির বাড়ির ড্রাইভার এই নারকীয় কান্ড ঘটিয়েছে। তবে সেই ড্রাইভার বার বার জানাতে থাকে সে নির্দোষ, তাকে ফাঁসিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আর তার মেয়ের অনুরোধেই তার পক্ষের উকিল হিসেবে দেখা মেলে 'অচিন্ত'র। সব মিলিয়ে এই সিরিজ যেন বর্তমান সময়ের অহরহ ঘটে চলা ভয়ঙ্কর নারকীয় ঘটনার এক নিপাট কোলাজ, সমাজ চেতনার দর্পণ।
তবে অভিনেতা এরকম একটি বিষয় নিয়ে যে কাজ করলেন সেখানে তাঁর অভিজ্ঞতা ঠিক কেমন ছিল? কোথাও গিয়ে কি এই কাজ করতে গিয়ে তিনি বিচলিত হয়েছিলেন? এই প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আসলে আমরা যখন কোনও অভিনয় করি, তখন চরিত্রটা আমাদের ভাবায়। কিন্তু সেখানে এই বিষয়টার মধ্যে আমি আছি, কিন্তু সেটাকে নিয়ে সামগ্রিক ভাবে কাজ তো করছি না। আমি মূলত চরিত্রটা নিয়ে কাজ করছি। তাই আমার কাজের সময় চোখের সামনে কেবল অচিন্ত্যই ছিল। আমরা জানি এই ধরনের ঘটনা অহরহ ঘটে। কিন্তু যখন আমি এই কাজটা করছিলাম তখন আমি গল্পটা আর চরিত্রটা নিয়েই কেবল ভেবেছি। তার বাইরে আর কাউকে বা কিছু নিয়ে ভাবিনি।’
তবে এই সিরিজে অভিনেতার সঙ্গে দেখা মিলবে শিশুশিল্পী অনুমেঘা কাহালির। তার সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতাটা ঠিক কেমন ছিল নায়কের? ঋত্বিকের কথায়, ‘অনুমেঘার বয়স অনুযায়ী যে অভিনয় দক্ষতা সেটা চমকে দেওয়ার মতো। সত্যি কথা বলতে আমি যখন কারুর সঙ্গে অভিনয় করি, তখন তার অভিনয় ক্ষমতার পাশাপাশি দেখি মানুষটার কী কী অভিজ্ঞতা রয়েছে, কারণ সেটার একটা প্রভাব থাকে চরিত্রে। তবে ওর যা বয়স তাতে এসব থাকার কথাও নয়। তার সত্ত্বেও ও যেভাবে কাজটা করেছে সেটা খুবই উচ্চপর্যায়ের। খুব অবাক হয়েছি আমি ওর সঙ্গে কাজ করে।’ সব মিলিয়ে ফের ‘অ্যাডভোকেট অচিন্ত আইচ' ফিরছে তাই তা নিয়ে যথেষ্ট আশাবাদী অভিনেতা। এবার অপেক্ষা ১৫ অগস্টের।