নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাসত: মিড ডে মিল নিয়ে অভিযোগের অন্ত নেই। কোথাও খাবারের মান খারাপ, কোথাও রান্না ঘরের অবস্থা তথৈবচ। এমন অবস্থায় ভিন্ন চিত্র দেখা গেল উত্তর ২৪ পরগনার হিঙ্গলগঞ্জের একটি হাইস্কুলে। খাবারের মান এবং উপকরণে খুশি পড়ুয়া ও অভিভাবকরা। কারণ, বিদ্যালয়ের জমিতেই তৈরি হচ্ছে মিড ডে মিলের জোগান। মাঠের টাটকা সবজি থেকে পুকুরের মাছ, সবই স্কুলে পাওয়া যাচ্ছে। তা দিয়ে রান্না করা মিড ডে মিলে পেয়ে পড়ুয়ারাও খুশি। পড়ুয়াদের উপস্থিতি বাড়ছে, দাবি বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের।
হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের সান্ডেলের বিল গ্রাম পঞ্চায়েতের কনকনগর সৃষ্টিধর ইনস্টিটিউশন মিড ডে মিলের নতুন দিশা দেখাচ্ছে। উচ্চ মাধ্যমিক এই স্কুলে প্রায় দু’বিঘা একটি পুকুর রয়েছে। রয়েছে পর্যাপ্ত চাষের জমিও। সেই জমিতে সম্পূর্ণ জৈব পদ্ধতিতে সবজি চাষ করে মিড ডে মিলে ব্যবহার করা হয়। অন্যদিকে, মিড ডে মিলের পাতে থাকে পুকুরের চাষ করা মাছ। পাশাপাশি পুকুরের পাড় লাগোয়া জায়গায় আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু, নারকেল, পেয়ারা ও সবেদা সহ বহু ফলের গাছ লাগানো হয়েছে। স্কুলে রয়েছে প্রায় দেড় হাজার ছাত্রছাত্রী। তারা সকলে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে শিক্ষকদের সঙ্গে সবজি চাষ থেকে শুরু করে স্কুলের উন্নয়নমূলক কাজে নিযুক্ত রয়েছে। বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র রিজু সরকার বলে, আমাদের স্কুলের মিড ডে মিলের খাবার পুরোপুরি স্বাস্থ্যসম্মত। সমস্তরকম সবজি ফসল থেকে মাছ, নিজেরাই চাষ করি। আমরা আনন্দের সঙ্গে সে সব করি। সপ্তম শ্রণির ছাত্রী রিয়া দে বলে, বিদ্যালয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি আমরা বাগানেরও যত্ন করি। স্কুলের কিছুটা দূরেই আমাদের বাড়ি। তাই স্কুল শেষ হয়ে গেলেও বিকেলের পর আমরা এসে বাগানের দেখভাল করি। পাশাপাশি যে পুকুরে মাছ চাষ হচ্ছে তাতে নজরদারি চালায়। কারণ এটা আমাদের সম্পদ। বাঁচিয়ে রাখার দায়িত্ব আমাদেরই।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পুলক রায়চৌধুরী বললেন, মিড ডে মিলে আমরা বাইরের সবজি কম ব্যবহারের চেষ্টা করি। শিক্ষার্থীরা খাওয়াদাওয়ার পাশাপাশি আগামীতে যাতে কর্মসংস্থানের নতুন দিশা দেখতে পায়, আমরা সেদিকে লক্ষ্য রেখেছি। তাছাড়া নিজেদের উৎপাদিত সামগ্রীতে রান্না করার আনন্দই আলাদা। নিজস্ব চিত্র