• জেলার ৮ ব্লকে ৫০০০ হেক্টর জমি জলমগ্ন, ধান চাষে ক্ষতির আশঙ্কা
    বর্তমান | ১৪ আগস্ট ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কৃষ্ণনগর: লাগাতার বৃষ্টির জেরে নদীয়া জেলায় জলমগ্ন কয়েক হাজার হেক্টর কৃষিজমি। তার উপর গঙ্গার জলস্তর বৃদ্ধির কারণে নদী তীরবর্তী এলাকাগুলোতেও জল ঢুকে গিয়েছে। ধানজমি জলের তলায় চলে যাওয়ায় ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। ‌নদীয়া জেলার ৮টি ব্লকের প্রায় ৫ হাজার হেক্টর জমি জলমগ্ন। এমনটাই কৃষিদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে। যা নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে কৃষি আধিকারিক থেকে চাষিদের। জল নামলে বোঝা যাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ‌। তবে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, জেলায় প্রায় ২ হাজার হেক্টর জমির ফসল পুনরায় রোপণ করা সম্ভব নয়। তাই সেগুলো ক্ষতির খাতাতেই চলে যাবে। আগামী রবি মরশুমে সেই সমস্ত জমিতে ভুট্টা, তৈলবীজ জাতীয় ফসল রোপণে চাষিদের উৎসাহ দিচ্ছে কৃষিদপ্তর। নদীয়া জেলার কৃষি উপ অধিকর্তা জয়দীপ মুখোপাধ্যায় বলেন, বৃষ্টির কারণে বহু জমি জলমগ্ন। আমরা চাষিদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। তাঁদের সমস্ত রকম সাহায্য করা হবে। কৃষিদপ্তর সূত্রে খবর, নদীয়া জেলার ৮টি ব্লক করিমপুর-১, কালীগঞ্জ, নাকাশিপাড়া, নবদ্বীপ, শান্তিপুর, হাঁসখালি, চাকদহ, কল্যাণী ব্লকের চাষের জমি জলমগ্ন হয়ে গিয়েছে। যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি জলমগ্ন জমি নবদ্বীপে। এছাড়াও নাকাশিপাড়া, শান্তিপুর, চাকদহ, কল্যাণীর মতো নদী তীরবর্তী এলাকাগুলোর চাষের জমি জলের তলায়। সবমিলিয়ে মোট ৪ হাজার ৯৪৫ হেক্টর ধানের জমি জলমগ্ন হয়ে রয়েছে।‌ যার মধ্যে ১৭০০ হেক্টর জমি আর চাষযোগ্য নেই। তাই সেখান নতুন করে ধানের চারা লাগিয়ে চাষ করা সম্ভব নয়। জানা গিয়েছে, চলতি মরশুমে ধান চাষে হয়েছে ১ লক্ষ ১৭ হাজার ৫৮৮ হেক্টর জমিতে। 

    এক কৃষি আধিকারিকের কথায়, সাধারণত আগস্ট মাসে ২৭০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়। সেখানে বুধবার পর্যন্ত প্রায় ১৬০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়ে গিয়েছে। অর্থাৎ ইতিমধ্যেই গড় বৃষ্টির ৬০ শতাংশ হয়েছে। অন্যদিকে সেচদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, নদীয়া জেলায় এক বছরে গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ১২৫০ মিলিমিটার। সেখানে আগস্ট মাস পর্যন্ত প্রায় ১৩০০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। যা এখনও পর্যন্ত রেকর্ড। এত বৃষ্টিপাতেই নদীর জলস্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং নিচু জায়গায় জল জমে যাচ্ছে। কয়েকদিন আগে পর্যন্ত, ভাগীরথী নদীর জলস্তর বিপদসীমার উপরে ছিল। যার জেরে নদীর তীরবর্তী এলাকাগুলো বানভাসি হয়। কালীগঞ্জ ব্লকের নয়াচর জলের তলায় চলে যায়। যার ফলে নৌকা করে যাতায়াত করতে হয় গ্রামবাসীদের। নাকাশিপাড়ার চাষি বিজয় হাজরা বলেন, তিন বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছিলাম। কিন্তু গোটা জমিটাই জলের তলায় চলে গিয়েছে। জল নামানোর চেষ্টা করছি। কিন্তু অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে অনেকটাই ক্ষতি হল। 

    নদীয়া জেলা পরিষদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ সিরাজ শেখ বলেন, প্রশাসন চাষিদের পাশে রয়েছে। আমারও নজরে রাখছি কোথায় কোথায় জমিতে জল আটকে গিয়েছে। চাষিরা যাতে ক্ষতির সম্মুখীন না হয় তা সুনিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকারের।‌
  • Link to this news (বর্তমান)