• বেহুঁশ করে কিশোরীদের পাচার রাজস্থানে, শিল্পাঞ্চলে এজেন্টদের খোঁজে সিবিআই হানা
    বর্তমান | ১৪ আগস্ট ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান এবং আসানসোল: রাজস্থান গ্যাংয়ের সঙ্গে এরাজ্যের মহিলারাও হাত মিলিয়েছে। তারাই মাসি, মামি সেজে কিশোরীদের রাজস্থানে পৌঁছে দিচ্ছে। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজস্থান গ্যাংয়ের বাছাই করা এজেন্ট ‘প্রেমিকরা’ কিশোরীদের জালে জড়ানোর পর আগে থেকে ঠিক করে রাখা বাড়িতে তাদের নিয়ে যায়। সেখানে তিন-চার দিন থাকার পর খাবারের সঙ্গে নেশার ট্যাবেলেট মিশিয়ে খাওয়ানো হয়। তারপরই ট্রেনে বা অন্য গাড়িতে করে তাদের রাজস্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। রাস্তায় কেউ কিছু জানতে চাইলে, ওই মহিলারা নিজেদের মাসি বা মামি বলে পরিচয় দেয়। মহিলাদের চক্রটি আসানসোলে সব থেকে বেশি সক্রিয় রয়েছে। বুধবার এরকম এক মহিলার খোঁজে আসানসোলে তল্লাশি চালানো হয়। 

    এদিন দুপুরে খাওয়া দাওয়া করে সবে শুয়ে ছিলেন আসানসোল উত্তর থানার গুলজার মহল্লার বাসিন্দারা। তখন শহরের ঢালাই রাস্তায় ভারী বুটের শব্দ আসে। এলাকায় আসে কেন্দ্রীয় বাহিনী। রায়নায় এক মহিলাকে রাজস্থানে পাচারের ঘটনার তদন্তেই গুলজার মহল্লায় তখন অভিযান চালাচ্ছিল চার সদস্যের সিবিআই টিম। দীর্ঘক্ষণ অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে খালি হাতেই বের হন তাঁরা। অল্পের জন্য শিকার হাতছাড়া হয়। 

    এলাকা সূত্রে জানা গিয়েছে, সন্দেহভাজন মহিলার স্বামী নৈশপ্রহরীর কাজ করে। ছেলে বিভিন্ন জায়গায় কাপড় ফেরি করে। আর ঘরণী দরিদ্র মেয়েদের দূর দূরান্তে বিয়ে দিয়ে ‘সমাজ সেবা’ করেন। এলাকায় নিজের এই ইমেজই তৈরি করেছিলেন। অভিযান চলাকালীনই এক মহিলা বলেন, ভালোই তো করে গরিব মেয়েদের বিয়ে হচ্ছে। তবে, এই বিয়ে কোনও অভিশাপের থেকে কম নয়। রাজস্থানের শেঠদের হাতে তুলে দেওয়া হয় মেয়েগুলিকে। তাঁদের নামমাত্র বিয়ে করে শারীরিক চাহিদা মিটিয়ে ফের অন্যত্র বিক্রি করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। গুলজার মহল্লার এই ভাবিই নয়, রেলপাড়জুড়ে এমনই একাধিক ভাবির সন্ধান পেয়েছে সিবিআই। তাই সকাল ১১টা থেকে দুপুর ৪টে পর্যন্ত দিনভর অভিযান চালিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। হাইকোর্টের নির্দেশে নারী পাচার চক্রের তদন্ত করছে সিবিআই। এই মামলায় এখনও পর্যন্ত আসানসোল রেলপাড়ের ঝিংরি মহল্লার বিলাল খান ও তার স্ত্রী রানু খাতুন ওরফে রানিকে গ্রেপ্তার করেছে সিবিআ‌ই। এদিন প্রথমে তাদের বাড়িতেই তল্লাশি চালায় সিবিআ‌ই অফিসাররা। সেখা঩নেই তাঁরা খোঁজ পায়, বিলাল খানের আরও একটি স্ত্রী রয়েছে মাক্কু মহল্লায়। সেখানেই তার বাবা সহ বাকি পরিবার রয়েছে। এরপরই দীর্ঘক্ষণ ধরে সেই বাড়িতে অভিযান চলে। ব্যাপক ভিড় জমে যায় এলাকায়। সিবিআই অফিসাররা বেরিয়ে যাওয়ার পর বিলালের বাবা জামাল খান বলেন, আমরা সব্জি বিক্রি করি। এই বিষয়ে কিছু জানি না। আমরা তদন্তে তাঁদের সহযোগিতা করেছি। তারপরই টিম হানা দেয় গুলজার মহল্লায়।  নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)