• কাজের লোক নয়, কাছের লোকদের সংগঠনে গুরুত্ব, দলের হাল খারাপ নিয়ে মিঠুনের সামনে ক্ষোভ
    বর্তমান | ১৪ আগস্ট ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: ভাঙাচোরা সংগঠনকে জোড়া লাগানোর ভার দেওয়া হয়েছে বিজেপির তারকা নেতা মিঠুন চক্রবর্তীকে। তিনি জেলায় জেলায় ঘুরতে শুরু করেছেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বর্ধমানে জেলার নেতাদের সঙ্গে তিনি বৈঠক করেন। পরিচয়পর্ব মেটার পর তিনি সবস্তরের নেতাকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে বলেন। সংগঠন জোরালো না হলে ২০২৬-এর বিধানসভা নির্বাচনে লড়াই করা যাবে না বলে তিনি জানান। সেইসময় বর্ধমানের এক নেতা বলেন, সংগঠনে ‘কাজের লোকজনে’র গুরুত্ব নেই। তাঁদের বসিয়ে রাখা হয়েছে। যাঁরা ‘কাছের লোক’ তাঁরাই সংগঠনে গুরুত্ব পাচ্ছেন। এভাবে চললে সংগঠন কোনওদিনই মজবুত হবে না। যত দিন যাবে পরিস্থিতি ততই খারাপ হবে। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শুধু পূর্ব বর্ধমান নয়, দক্ষিণবঙ্গের অধিকাংশ জেলাতেই সংগঠনের বেহাল অবস্থা। আন্দোলন কলকাতা এবং উত্তরবঙ্গের কয়েকটি জেলাতেই থমকে রয়েছে। সংগঠন চাঙ্গা করতে রাজ্যস্তরের নেতারা একাধিকবার জেলায় এসে বৈঠক করছেন। তাতেও পূর্ব বর্ধমানের মতো জেলাগুলিতে তেমন লাভ হচ্ছে না। বর্ধমান সাংগঠনিক জেলায় সংগঠনের অবস্থা বহুদিন ধরেই বেহাল রয়েছে। সেকারণে দিলীপ ঘোষের মতো হেভিওয়েট প্রার্থী এই কেন্দ্রে দাঁড়িয়েও বিপুল ভোটে হেরে গিয়েছেন। সংগঠন মজবুত থাকলে এই অবস্থা হতো না। এমনটা মানছেন খোদ মিঠুন চক্রবর্তীও। তিনি বলেন, নিজেদের মধ্যে সমস্যা তো ছিলই। সেকারণেই পরাজয় হয়েছে। সেই সব সমস্যা মেটানোর জন্যই জেলায় এসে বৈঠক করছি। 

    বিজেপির এক প্রবীণ নেতা বলেন, দল স্ট্র্যাটেজি না বদল করলে সাফল্যের মুখ দেখা সম্ভব হবে না। নেতাদের আগে জানতে হবে কে ‘কাজের ছেলে’ আর কে ‘কাছের ছেলে’। কোনও নেতার কাউকে বিভিন্ন কারণে ভালো লাগতেই পারে। তারজন্য তাঁকে গুরুত্বপূর্ণ পদে বসিয়ে দিতে হবে? যাঁরা ভালোভাবে সংগঠনের কাজ করতে পারেন তাঁদেরই গুরুত্ব দিতে হবে। বিজেপি সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, দলের বৈঠকে আরও কয়েকজন তারকা নেতার সামনেই ক্ষোভ উগরে দেন। মিঠুন নেতাদের উদ্দেশে বলেন, এসব ছেড়ে আপনাদের মানুষের কাছে যেতে হবে। তাঁদের সমস্যার কথা শুনতে হবে। মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে থেকে কাজ করতে হবে। তবেই সাফল্য আসবে। 

    তৃণমূল নেতা দেবু টুডু বলেন, অভিনেতা মিঠুনের সিনেমা দেখতে আমরা এক সময় হলে যেতাম। তাঁর অভিনয় দক্ষতা মুগ্ধ করেছিল। রূপালি পর্দার সেই নায়কের এই অবস্থা দেখে খারাপ লাগছে। শুনেছি, তিনি বৈঠক করার আগেই অনেকে হল ছেড়ে চলে গিয়েছেন। তাঁর সামনেই নেতারা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। তিনি অপাত্রে দান করছেন। তিনি হাজারবার এলেও এই জেলায় বিজেপির সংগঠন চাঙ্গা হবে না। এই জেলায় ওদের লোকজন নেই।
  • Link to this news (বর্তমান)