• জগন্নাথদেবের নব আলয়ে ক্রমশ বাড়ছে যানজট, দীঘার ট্রাফিক ব্যবস্থা ঢেলে সাজাচ্ছে রাজ্য পুলিস
    বর্তমান | ১৪ আগস্ট ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: দীঘায় জগন্নাথ মন্দির তৈরি হওয়ার পর প্রতিদিনই লাখ লাখ দশনার্থী যাচ্ছেন। বাড়তি ভিড়ের কারণে যানজটে অবরুদ্ধ হয়ে থাকছে মন্দিরের সামনের সড়ক ও সংলগ্ন রাস্তা। ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকায় পুণ্যার্থী থেকে শুরু করে কাজে আসা আমজনতা সকলের ভোগান্তি হচ্ছে। সেই সমস্যা মোকাবিলায় এবার দীঘার ট্রাফিক ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে চলেছে রাজ্য পুলিস। এরজন্য একগুচ্ছ প্রস্তাব নবান্নে পাঠানো হয়েছে বলে খবর।  

    মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধায় কয়েক মাস আগেই দীঘায় জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধন করেন। তারপর এক ধাক্কায় লোক আসার সংখ্যা কয়েক গুণ বেড়ে গিয়েছে। তার সঙ্গে পাল্লা গিয়ে বেড়েছে ছোট-বড় গাড়ি, ট্যুরিস্ট বাসের সংখ্যা।  নবান্নের কাছে অভিযোগ আসছিল, যানজটের ঠেলায় দীঘায় নাকাল হতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। এরপরই রাজ্য পুলিসের ট্রাফিক বিভাগকে এলাকা পরিদর্শন করে দেখতে বলা হয়। যানজটের কারণ কী এবং কীভাবে তার সমাধান করা যায়, তার রূপরেখা তৈরির নির্দেশ যায়।  দুই দিন আগেই ট্রাফিকের শীর্ষ কর্তারা মন্দির সামনের ও তার সংলগ্ন রাস্তা ভালোভাবে খতিয়ে দেখে বুঝতে পারেন, অতিরিক্ত টোটো-অটোই যানজট হওয়ার কারণ। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে পারমিটহীন বাস। উভয়মুখী যান চলায় ও স্বয়ংক্রিয় সিগন্যালিং সিস্টেম না থাকায়, ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে সমস্যা হচ্ছে।

    এলাকা পর্যবেক্ষণের পর একটি প্রস্তাব তৈরি করা হয়। নবান্ন সূত্রে জানা যাচ্ছে, পুলিসের তরফে বলা হয়েছে, ওই এলাকার রাস্তা চওড়া করা জরুরি। তা না হলে বাড়তি গাড়ির চাপ নেওয়া সম্ভব নয়। সেই কারণে পিডব্লুডির সঙ্গে কথা বলবেন অফিসাররা। পুলিস আধিকারিকরা চাইছেন,  জোড়-বিজোড় নম্বরে  টোটো চলুক। অর্থাৎ জোড় সংখ্যার টোটো সকালে চললে, বিকেলে চলুক বিজোড় নম্বর। এরজন্য তাঁরা দীঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্যদ বা স্থানীয় পঞ্চায়েতের সাহায্য চাইছেন। পর্ষদ বা পঞ্চায়েত টোটো-অটো চালকদের জন্য টোকেন ইস্যু করুক। এতে যানজট অনেকটাই কমে আসবে। অটোকে ‘যাত্রীসাথী’ অ্যাপের মধ্যে ঢুকিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব রাখা হয়েছে। অটোর জন্য নির্দিষ্ট স্ট্যান্ড করা হলে তারা যেখানে সেখানে দাঁড়াবে না। ট্রাফিক পুলিসের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ইদানিং দীঘায় রুটের পারমিটহীন প্রচুর বাস ঢুকছে। এহেন বাসগুলিকে দীঘা মোড়ে আটকে, যেখান থেকে তারা এসেছে, সেখানে ফিরিয়ে দেওয়ার কথা উল্লেখ রয়েছে প্রস্তাবে। তবে একমুখী যান চলাচল ও স্বয়ংক্রিয় ট্রাফিক সিগন্যাল তৈরির উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। পরিকল্পনায় রয়েছে, বাস, গাড়িগুলি মন্দিরের পিছনের রাস্তা দিয়ে হেলিপ্যাডে আসবে। সেখানে পাকাপাকিভাবে পার্কিংয়ের ব্যবস্থা থাকছে। বেরোনোর সময় অন্য রাস্তা ধরে তারা শহরের বাইরে বেরিয়ে যাবে। একমাত্র স্থানীয় বাসকে মন্দিরের সামনে দিয়ে চলতে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।  তবে অবৈধ বাস, অটো নিয়ন্ত্রণে পরিবহণ দপ্তরের সহযোগিতা চাইছেন পুলিস কর্তারা। যাতে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যায়। একইসঙ্গে রেলের কর্তাদের সঙ্গে কথা বলবেন পুলিস আধিকারিকরা। যাতে দীঘায় আসা ট্রেনের সংখ্যা আরও বাড়ানো যায়। কর্তারা মনে করছেন, ট্রেন বাড়লে, বাস ও গাড়ির সংখ্যা অনেকটা কমে যাবে। সেক্ষেত্রে ট্রাফিক সামলানো অনেকটাই সহজ হবে।  
  • Link to this news (বর্তমান)