• শিক্ষক-শিক্ষিকাদের উদ্যোগে মাড়গ্রামের স্কুলে চালু স্মার্ট ক্লাস, বায়োমেট্রিক হাজিরা
    বর্তমান | ১৪ আগস্ট ২০২৫
  • সংবাদদাতা, রামপুরহাট: বেসরকারি স্কুলকে টক্কর দিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েও স্মার্ট ক্লাসের বন্দোবস্ত করলেন শিক্ষক শিক্ষিকারা। তাঁদের ব্যক্তিগত উদ্যোগেই শুরু হয়েছে স্মার্ট ক্লাস। মাড়গ্রামের কুদরত-ই-খোদা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বুধবার থেকে শুরু হল স্মার্ট ক্লাস। একই সঙ্গে চালু হল ‌‌‌পড়ুয়াদের বায়োমেট্রিক হাজিরার ব্যবস্থা। বুধবার যার উদ্বোধন করলেন জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান প্রলয় নায়েক। বর্তমানে অভিভাবকরা বেসরকারি স্কুলে শিশুদের পড়াতে আগ্রহী। তাই বেসরকারি স্কুলের সঙ্গে টক্কর দিতে স্মার্ট ক্লাস গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। শিশুরা যেটা খাতায়-কলমে শিখছে সেটাই অডিও এবং ভিডিওর মাধ্যমে নিজের চোখে দেখলে ও কানে শুনলে তাদের বুঝতে সুবিধে হয়। মাড়গ্রামের কুদরত-ই-খোদা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তিনতলা ভবনে রয়েছে ন’টি ক্লাস রুম। যেখানে বহু প্রাথমিক বিদ্যালয় ‌পড়ুয়ার অভাবে ধুঁকছে। সেখানে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত এই স্কুলে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ৬০২। শিক্ষক শিক্ষিকা রয়েছেন ১২ জন। বিদ্যালয়টি দেখে মনে হবে কোনও কর্পোরেট অফিস। নানা রঙের ১৭৪টি লাইট দিয়ে সাজানো এই স্কুল। ৮৮টি ফ্যান, এয়ার কুলার, ওয়াটার কুলার, ওয়াটার ফিল্টার, প্রাথমিক চিকিৎসা কক্ষ, সভাকক্ষ, গ্রন্থাগার, স্মার্ট বোর্ড, ডিজিটাল ক্লাস রুম, একাধিক কম্পিউটার, ই-লার্নিং, ফটো গ্যালারি, ইনভার্টার সহ নানা ব্যবস্থা। এছাড়াও রয়েছে স্মার্ট টয়লেট। অর্থাৎ পড়ুয়ারা টয়লেটে প্রবেশ করলেই আলো জ্বলে উঠবে। বেসিনে হাত পাতলেই জল পড়বে। গোটা স্কুলে মার্বেল ও টাইলস বসানো। রয়েছে ডিজটাল ডিস প্লে বোর্ড। এবার ছাত্র-ছাত্রীদের উপস্থিতির হারে শৃঙ্খলা আনতে এদিন থেকে চালু করা হল বায়োমেট্রিক হাজিরা। স্কুলের শিক্ষক নূর মহম্মদ বলেন, সরকারি-বেসরকারি একাধিক প্রতিষ্ঠানে হাজিরায় নজর রাখতে বায়োমেট্রিক ব্যবস্থা চালু হয়েছে। ‌এই ‌পড়ুয়ারা বড় হয়ে সেইসব প্রতিষ্ঠানে যাবে। তাই আগাম জানাতে ও সময়ানুবর্তিতা শেখাতে বায়োমেট্রিক হাজিরা পদ্ধতি চালু করা হল। প্রতিটি মুহূর্তে ক্লাসে পাঠদানের ভিডিও অভিভাবকদের নিয়ে তৈরি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে পাঠানো হয়। যাতে স্কুল সম্পর্কে অভিভাবকরা ধারণা পেতে পারেন।

    অত্যাধুনিক স্মার্ট ক্লাসের সুবিধা মেলায় ছাত্রছাত্রীদের পাশাপাশি খুশি অভিভাবকরাও। প্রধান শিক্ষিকা আনোয়ারা খাতুন বলেন, ক্লাসের একঘেয়েমি কাটাতে স্কুলকে আধুনিক করা হল। পড়ুয়াদের আগ্রহ বাড়াতে ও তাদের বিদ্যালয়মুখী করতেই এই উদ্যোগ। 

    স্মার্ট ক্লাসের মাধ্যমে পড়াশোনা উপভোগ্য হয়ে উঠেবে। আগামদিনে ক্লাসরুমগুলি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত করা হবে। পড়ুয়া আনিশা খাতুন, পল্লবী মণ্ডল বলে, এতদিন শুধু বইয়ে পড়েছি, দেখেছি। এখন সবকিছু ডিজিটালের মাধ্যমে দেখে দারুণ লাগছে। এখন থেকে রোজ স্কুলে আসব। প্রলয়বাবু বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির যুগে এই স্কুল মডেল হয়ে উঠেছে। আগামীদিনে অন্যান্য স্কুলও এই বিদ্যালয়কে অনুসরণ করবে বলে আশা রাখি।  
  • Link to this news (বর্তমান)