খাদি মসলিনের জাতীয় পতাকার চাহিদা তুঙ্গে রাজ্যের বিভিন্ন জেলা বরাত পাচ্ছেন শিল্পীরা
বর্তমান | ১৪ আগস্ট ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, সিউড়ি: বীরভূম জেলার মসলিন তীর্থে তৈরি খাদি মসলিনের জাতীয় পতাকার কদর তুঙ্গে। এই পতাকার চাহিদা ক্রমশ বাড়ছে। রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে এখনও বরাত আসছে। ইতিমধ্যে মসলিন তীর্থে তৈরি খাদি মসলিনের জাতীয় পতাকার ৯০শতাংশই বিক্রি হয়ে গিয়েছে। যদিও শেষ মুহূর্তেও নতুন করে পতাকা তৈরির কাজ চলছে। পশ্চিমবঙ্গ খাদি ও গ্রামীণ শিল্প পর্ষদের আধিকারিকদের দাবি, বর্ষার মরশুমে টানা বৃষ্টি ও খারাপ আবহাওয়ার কারণে উৎপাদনে খানিকটা ভাটা পড়েছে। তবে দক্ষ শ্রমিকদের চেষ্টায় প্রথম ধাপেই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা সম্ভব হয়েছে।
পর্ষদের তরফে গোপালকৃষ্ণ বসু বলেন, প্রতিকূল আবহাওয়ার জেরে উৎপাদন কিছুটা কম হয়েছে। যদিও লক্ষ্যমাত্রা ছাপিয়ে উৎপাদন হয়েছে। বিক্রিও যথেষ্টই ভালো হয়েছে। তবে, আমরা এখানেই থেমে থাকছি না। স্বাধীনতা দিবস পেরিয়ে গেলে নতুন করে পতাকা তৈরির কাজ শুরু হবে। আগামী বছর নেতাজির জন্মদিন, সাধারণতন্ত্র দিবস সামনে রেখে নতুন লক্ষ্যমাত্রায় পতাকা তৈরির কাজ চলবে।
রাজ্যের উদ্যোগে ২০১৮সালে সিউড়ির আবদারপুরে মসলিন তীর্থ গড়ে ওঠে। প্রথম থেকেই এই মসলিন তীর্থে থান তৈরির কাজ চলছে। তবে পাঁচ মাস আগে মসলিন তীর্থের দক্ষ বয়নশিল্পীদের হাত ধরে উত্তরীয় তৈরির কাজ শুরু হয়। তারপরই পর্ষদের উদ্যোগে খাদি মসলিনের জাতীয় পতাকা তৈরির কাজ শুরু হয়। মে মাসের শেষ দিক থেকে জেলার একমাত্র মসলিন তীর্থে সেই কাজ চলছে। রীতিমতো সংবিধানে উল্লেখিত নিয়ম মেনেই জাতীয় পতাকা তৈরি করা হচ্ছে। কোনও প্রকার স্টিচিং অর্থাৎ সেলাই ছাড়াই শুধুমাত্র তাঁতযন্ত্রের সাহায্যে পতাকা তৈরি করা হচ্ছে।
পর্ষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথম পর্যায়ে ৫০০টি পতাকা তৈরির লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছিল। মাত্র তিন মাসের চেষ্টায় তিন বা দু’ফুটের সাড়ে পাঁচশো পতাকা তৈরি করা হয়েছে। অধিকাংশ পতাকাই ইতিমধ্যে বিক্রি হয়ে গিয়েছে। এক্ষেত্রে বেশিরভাগই অনলাইনে বরাত মিলেছে। পর্ষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্ষার মরশুমের শুরু থেকেই টানা বৃষ্টির জেরে পতাকা তৈরির কাজ অনেকটাই বিঘ্নিত হয়েছে। তা না হলে আরও বেশি পতাকা তৈরি করা সম্ভব হতো।
আধিকারিকরা জানান, স্বাধীনতা দিবস পেরিয়ে যাওয়ার পরপরই নতুন উদ্যমে আবারও কাজ শুরু করা হবে। ২৩ ও ২৬ জানুয়ারিকে সামনে রেখে জোরকদমে জাতীয় পতাকা তৈরির কাজ চলবে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা বাড়ানো হবে। সেইসঙ্গে কাস্টমাইজড পতাকা তৈরির পথেও হাঁটবে মসলিন তীর্থ। জানা গিয়েছে, নির্দিষ্ট কোনও দপ্তর কিংবা ব্যক্তি বিশেষের তরফে ছোট কিংবা বড় পতাকা তৈরির বরাত দেওয়া হলে তা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তৈরি করে দেওয়া হবে।