মুর্শিদাবাদে ‘আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান’, অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিকদের নাম নবীকরণের লাইন শিবিরে
বর্তমান | ১৪ আগস্ট ২০২৫
সংবাদদাতা, বহরমপুর: মুর্শিদাবাদে প্রায় ১৯ লক্ষ নথিভুক্ত অসংগঠিত শ্রমিক রয়েছে। এই তালিকায় নির্মাণ শ্রমিক, পরিবহণ শ্রমিক সহ আরও ৬৬ রকমের অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিক রয়েছে। সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, সারা রাজ্যের মধ্যে নথিভুক্ত অসংগঠিত শ্রমিকের সংখ্যা মুর্শিদাবাদেই সবথেকে বেশি। জেলা শ্রমদপ্তরের দাবি, এই সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। শুধু তাই নয় ‘আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান’ শিবিরে নাম নথিভুক্তির জন্য অসংগঠিত শ্রমিকদের ভিড় সব থেকে বেশি হচ্ছে। মুর্শিদাবাদ জেলার জয়েন্ট লেবার কমিশনার বিতন দে বলেন, অসংগঠিত সমস্ত শ্রমিককে আমরা শ্রমদপ্তরের নিজস্ব পোর্টালে অর্ন্তভুক্ত করতে সব রকমের প্রচেষ্টা চালাচ্ছি। ভালো সাড়াও মিলছে। অসংগঠিত শ্রমিকদের একগুচ্ছ আর্থিক সুবিধা দিচ্ছে রাজ্য সরকার। তারজন্য তাঁদের শ্রমদপ্তরে নাম লেখাতে হয়। বয়স আঠারো বছর পূর্ণ হলেই যে কোনও অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিক রেজিস্ট্রেশন করতে পারবে। প্রতি তিনমাস অন্তর নাম নবীকরণ করতে হয়। তারজন্য কোনও টাকা লাগে না।
সরকারি খাতায় অসংগঠিত শ্রমিক হিসেবে নাম থাকলেই পিএফ, পেনশন, ফ্যামিলি পেনশন, স্বাভাবিক অথবা দুর্ঘটনায় মৃত্যু বা অঙ্গহানির ক্ষতিপূরণ পাবেন। পরিবহণ শ্রমিকরা ৬০ বছর বয়স হলেই মাসিক ১৫০০ টাকা পেনশন পাবেন। শ্রমিকের মৃত্যুতে তাঁর পরিবার ৭৫০ টাকা ফ্যামিলি পেনশন পাবেন। নির্নাণ শ্রমিকরা পাবেন মাসিক এক হাজার টাকা। ফ্যামিলি পেনশন ৫০০ টাকা। স্বাভাবিক মৃত্যু হলে পরিবার ৫০ হাজার টাকা, দুর্ঘটনায় মৃত্যু হলে সে পরিবার এককালীন ২ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ পাবেন। দুর্ঘটনায় অঙ্গহানি হলে চিকিৎসার খরচ মিলবে। শ্রমিকদের নামে প্রভিডেন্ট ফান্ড খুলে প্রতিমাসে নির্দিষ্ট টাকা জমা দেয় রাজ্য সরকার। ১৮ বছর বয়সে কেউ নাম রেজিস্ট্রেশন করলে ৬০ বছর বয়সে সেই ব্যক্তি প্রভিডেন্ট ফান্ড থেকে ২ লক্ষ ৫২ হাজার টাকা আর্থিক সাহায্য পাবেন। জেলা শ্রমদপ্তর সূত্রে খবর, মুর্শিদাবাদ জেলায় এই মূহূর্তে ৩ হাজার ৯২৫ নির্মাণ শ্রমিক পেনশন পাচ্ছেন। ৬৭৬ পরিবহণ শ্রমিক পেনশনের আওতায় রয়েছেন। জেলায় রেজিস্ট্রিকৃত নির্মাণ শ্রমিকের সংখ্যা ৬ লক্ষ ৬ হাজার ২৫৪ জন। পরিবহণ শ্রমিকের সংখ্যা ৪৩ হাজার ৮২১জন। এছাড়া ৬৬টি অসংগঠিত ক্ষেত্রের (ছুতোর, সাফাই কর্মী, নাপিত, কর্মকার, কাগজ কুড়ানি ইত্যাদি) শ্রমিকের সংখ্যা ১২ লক্ষ ৩৩ হাজার ১৬৬ জন। বিতনবাবু বলেন, অসংগঠিত শ্রমিকরা সরকারি একাধিক সুবিধা পাওয়ায় পরিযায়ী শ্রমিকের সংখ্যা কমছে। এসএলও (সেলফ লেবার অর্গানাইজেশন) নাম নবীকরণ করেন। শিবিরে এসএলওদের টেবিলে নবীকরণের ভিড় বাড়ছে বলে দাবি শ্রমদপ্তরের।