সংবাদদাতা, আলিপুরদুয়ার: মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার দুপুর পর্যন্ত টানা বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে আলিপুরদুয়ার জেলা শহরের কয়েকটি ওয়ার্ড। শহরের ১, ৫, ৬, ৮, ৯, ১০, ১৫, ১৮ ও ২০ নম্বর ওয়ার্ড জলমগ্ন হয়ে পড়ে। কোথাও হাঁটু, কোথাও কোমর সমান জল জমেছে। জলবন্দি অবস্থা তৈরি হতেই পুরসভার বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন বিরোধীরা। তাঁদের অভিযোগ, পুরসভার নিকাশি ব্যবস্থা ভেঙে পড়াতেই শহরে এই অবস্থা। পুরসভা জানিয়েছে, শহরের জমা জল বের করতে ১৪টি পাম্প চালু করা হয়েছে। কোনও সমস্যা নেই।
এদিকে, বুধবার দুপুরের দিকে শহরের পাশে কালজানি নদীর জলস্তর ৪৫.৩০ মিটারে পৌঁছে যাওয়ায় সেচদপ্তর হলুদ সঙ্কেত জারি করে। দপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় আলিপুরদুয়ারে ২১০.৪০ ও হাসিমারায় ১০৪.৬০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। কালজানি, তোর্সা, গরম, সঙ্কোশ, বাসরা, পানা ও ডিমা সহ জেলার সমস্ত নদীই ফুঁসছে। শালকুমারের ‘ত্রাস’ শিসামারা নদীর পুরনো বাঁধ বেহাল হয়ে পড়েছে। এদিন দুপুরে ওই বাঁধ পরিদর্শনও করেন বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলাল।
টানা বৃষ্টিতে আলিপুরদুয়ারে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের বগড়িবাড়ি কলোনি, সঞ্জয় কলোনি ও সুভাষপল্লি কলোনির। কোমর সমান জল বইছে। স্থানীয় কাউন্সিলার পার্থপ্রতিম মণ্ডল নৌকা করে জলবন্দিদের খোঁজ নেন। ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের প্রমোদনগর কলোনিতেও একই অবস্থা। কালজানি নদীর ওপারে এই ওয়ার্ডের দ্বীপচর এলাকাটি জলমগ্ন হয়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে।
শহরের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের নিউ আলিপুরদুয়ারের বিজি রোড এদিন জলের তলায় চলে যায়। ২০ নম্বর ওয়ার্ডের সারদাপল্লি, আনন্দনগর, পূর্ব শান্তিনগর, ৮ নম্বরের নেতাজিপল্লি, ডিমা নদীর হঠাৎ কলোনি চর এবং ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বিদ্যাসাগরপল্লি, শিক্ষকপল্লি সহ বিভিন্ন এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে।
২০ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস কাউন্সিলার শান্তনু দেবনাথ বলেন, তৃণমূলের পুরবোর্ডের কারণেই শহরের মানুষের জলবন্দি দশা। শহরের নিকাশি ব্যবস্থা ঢেলে সাজাতে পুরসভা মাস্টার প্ল্যান তৈরিতে ব্যর্থ। এদিকে, শহরের জলমগ্ন অবস্থা দেখে প্রাক্তন বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তী উষ্মা প্রকাশ করে বলেন, আমি বিধায়ক থাকার সময় জমা জল বের করতে পাম্প হাউস তৈরির প্রস্তাব দিয়েছিলাম রাজ্যে। পুরসভায় যাঁরা আছেন, তাঁরা দেখুন বিষয়টি।
পুর চেয়ারম্যান প্রসেনজিৎ কর বলেন, শহরের জমা জল বের করে কালজানিতে ফেলতে ১৪টি পাম্প চালু করা হয়েছে। কোনও সমস্যা নেই। জল নেমেও গিয়েছে। পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে।