• এক রাতে রেকর্ড বৃষ্টি, শিলিগুড়িতে ১২টি এলাকার বাসিন্দা জলবন্দি
    বর্তমান | ১৪ আগস্ট ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি ও সংবাদদাতা, বাগডোগরা: এক রাতে রেকর্ড বৃষ্টি শিলিগুড়িতে। এখানে বৃষ্টির পরিমাণ ১৪৩ মিলিমিটার। এর জেরে শহর ও গ্রামের ১২টি এলাকার হাজার হাজার মানুষ জলবন্দি। বুধবার তাঁরা চরম ভোগান্তির শিকার হন। শুধু তাই নয়, পঞ্চনই নদীর স্রোতে সুকনায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় একটি সেতু। সমগ্র পরিস্থিতি নিয়ে ভুক্তভোগীরা পুরসভা ও মহকুমা পরিষদের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ। তাঁদের একাংশ নিকাশি ব্যবস্থা নিয়ে তুলেছেন প্রশ্ন। পরিস্থিতির মোকাবিলায় পাম্পসেট, কোদাল নিয়ে রাস্তায় নেমেছে পুরসভা ও মহকুমা পরিষদ। 

    কয়েকদিন ধরেই শিলিগুড়িতে বৃষ্টি চলছে। গত ১১ ও ১২ আগস্ট এখানে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল ৭৬ মিলিমিটারের আশেপাশে। মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত একনাগাড়ে বৃষ্টি হয়। যার পরিমাণ ১৪৩ মিলিমিটার। যা গত দু’দিনের বৃষ্টির প্রায় দ্বিগুণ। মঙ্গলবার রাতে কোথাও একহাঁটু, কোথাও কোমর সমান বৃষ্টির জল দাঁড়িয়ে যায়। বুধবার সকালের মধ্যে শহরের অধিকাংশ জায়গা থেকে নেমে যায় জল। তবে, অধিকাংশ রাস্তার খানাখন্দে ছিল জল। কিছু রাস্তায় ছিল কাদা। এর বাইরে ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের পলডেন মোড়, ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের জোড়াপানি নদী সংলগ্ন পাড়া এবং ১ নম্বর ওয়ার্ডে জল দাঁড়িয়ে ছিল। 

    স্থানীয়দের একাংশ বলেন, বেহাল নিকাশি ব্যবস্থার জেরে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। শিলিগুড়ি পুরসভার জঞ্জাল অপসারণ ও পরিবেশ বিভাগের মেয়র পরিষদ সদস্য মানিক দে বলেন, পাম্প চালিয়ে ওই এলাকাগুলি থেকে জল বের করা হয়েছে। ডেপুটি মেয়র রঞ্জন সরকার বলেন, ৪১ নম্বর ওয়ার্ডে প্রায় ৩০ জনকে ত্রিপল দেওয়া হয়েছে। 

    গ্রামীণ এলাকায় ধরা পড়েছে জল যন্ত্রণার আরও শোচনীয় চিত্র। মাটিগাড়ার শিবমন্দিরের শরৎনগর জল থইথই। রাস্তায় জমেছে একহাঁটু জল। কিছু বাড়িতেও উঠেছে নোংরা জল। এর ফলে জল পেরিয়েই পড়ুয়ারা স্কুলে যায়। বাসিন্দাদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে নালা সংস্কার না করায় এমন ভোগান্তি। মাটিগাড়ার বিডিও বিশ্বজিৎ দাস বলেন, পরিস্থিতির মোকাবিলায় ১০ জন শ্রমিক নামানো হয়েছে। জমা জল নামাতে সেখানে নালাও কাটা হয়েছে। 

    একই অবস্থা মাটিগাড়ার তুম্বাজোত, চম্পাসারির বাবুবাসা, মহিষমারি, শিশাবাড়ি, উত্তর পলাশ ও যদুভিটা গ্রামের। সংশ্লিষ্ট গ্রামগুলির রাস্তা, মাঠে জল  দাঁড়িয়ে আছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন আগে বসতি গড়ে উঠলেও গ্রামগুলিতে নিকাশি নালা তৈরি করা হয়নি। এ ব্যাপারে পঞ্চায়েত, ব্লক ও মহকুমা পরিষদের মধ্যে তেমন কোনও উদ্যোগ নজরে পড়ছে না। শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের সভাধিপতি অরুণ ঘোষ অবশ্য বলেন, ভারী বৃষ্টি হওয়ায় কিছু গ্রামে জল জমেছে। তা বের করার কাজে নামা হয়েছে। শুখা মরশুমে গ্রামবাসীদের সঙ্গে আলোচনা করে বিভিন্ন গ্রামে নিকাশি নালা  তৈরি করা হবে। অন্যদিকে, পঞ্চনই নদীর স্রোতের তোড়ে সুকনায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় সেতু। যার ফলে, সুকনা ও পুন্ডিং বনবস্তির মধ্যে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
  • Link to this news (বর্তমান)