২২ দিন আগে ‘পুশব্যাক’ হয়ে যাওয়া মালদহের যুবককে বাংলাদেশ থেকে ফেরাল রাজ্য, মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ পরিবারের
আনন্দবাজার | ১৩ আগস্ট ২০২৫
প্রায় ২২ দিনের অপেক্ষার অবসান। মালদহ জেলার কালিয়াচকের জালালপুরের বাসিন্দা আমির শেখকে দেশে ফিরিয়ে আনল বিএসএফ। বুধবার সন্ধ্যায় বসিরহাট থানা থেকে তাঁকে পরিবারের হাতে তুলে দেয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী। দীর্ঘ অনিশ্চয়তার পরে দেশের মাটিতে ফিরে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন আমির ও তাঁর পরিবারের লোকজন।
রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ এবং রাজ্য পরিযায়ী কল্যাণ পর্ষদের চেয়ারম্যান সামিরুল ইসলাম সামাজমাধ্যমে পোস্ট করে আমিরের দেশে ফেরার খবর জানান। তিনি দাবি করেছেন, এই কাজে বড় ভূমিকা নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। তাঁর কথায়, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে নবান্ন সক্রিয় ভাবে চেষ্টা করেছে। তার ফলেই আজ আমির নিজের বাড়িতে ফিরতে পেরেছে।” বাড়ির ছেলের ‘পুশব্যাক’ হয়ে যাওয়ার খবর পেয়ে কলকাতা হাই কোর্টে একটি মামলাও দায়ের করেছে পরিবার। সাংসদের দাবি, সেই মামলা দায়ের করার জেরেই কেন্দ্রীয় সরকার তড়িঘড়ি আমিরকে দেশে ফিরিয়ে এনেছে।
বাংলাদেশে ‘পুশব্যাক’ হওয়ার পর থেকেই আমিরকে ফেরানোর জন্য প্রশাসনিক স্তরে তৎপরতা শুরু হয়েছিল। মঙ্গলবার থেকেই ফেরানোর প্রক্রিয়া আনুষ্ঠানিক ভাবে শুরু হয়। মালদহ দক্ষিণের কংগ্রেস সাংসদ ইশা খান চৌধুরী জানান, বিএসএফ তাঁকে ফোন করে তাঁর লোকসভা এলাকার এক বাসিন্দাকে বাংলাদেশ থেকে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে অবহিত করেছিল। প্রায় তিন সপ্তাহ আগে রাজস্থান পুলিশ আমিরকে সেই রাজ্য থেকে আটক করে বিএসএফের হাতে তুলে দেয়। এর পরই সীমান্তরক্ষী বাহিনী তাঁকে বাংলাদেশে পুশব্যাক করে বলে অভিযোগ ওঠে। এই ঘটনায় তীব্র সমালোচনা হয়েছিল। পরিবারের সদস্যদের বক্তব্য, বিনা দোষে আমিরকে দেশের বাইরে পাঠানো হয়েছিল, যা ছিল মানসিক ভাবে ভয়াবহ অভিজ্ঞতা।
দেশে ফেরার পর আমিরের পরিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে। পরিবার জানিয়েছে, এতদিন ধরে তাঁরা আতঙ্ক ও দুশ্চিন্তায় ছিলেন, তবে আজ তাদের মনে শান্তি ফিরেছে।
ঘটনাটি সীমান্ত ব্যবস্থাপনা, নাগরিক অধিকার এবং প্রশাসনিক সমন্বয়ের ক্ষেত্রে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে। যদিও পরিবারের কাছে প্রিয়জনকে ফেরানোই এখন সবচেয়ে বড় সাফল্য। প্রশাসনিক মহলে এ নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ ও তদন্তের দাবি উঠছে।