ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সমীক্ষা (এসআইআর) আপাতত জাতীয় রাজনীতির অন্যতম মুখ্য বিষয় হয়ে উঠেছে। বিরোধীরা লাগাতার এই প্রক্রিয়া নিয়ে সরব হচ্ছেন। সেই আবহে রাহুল গান্ধী, অখিলেশ যাদবের মতো একাধিক বিরোধী সাংসদের কেন্দ্র উল্লেখ করে বিজেপি নেতা অনুরাগ ঠাকুর দাবি করলেন, তাঁদের সকলের কেন্দ্রে ভুয়ো ভোটার রয়েছে। অনুরাগের তালিকায় রয়েছে লোকসভায় তৃণমূলের দলনেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কেন্দ্র ডায়মন্ড হারবারও। অনুরাগ অভিষেকের কেন্দ্রকে নিশানা করার পরেই তৃণমূল পাল্টা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর লোকসভা কেন্দ্র বারাণসীকে নিশানা করেছে।
যে কায়দায় রাহুল পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে গ্রাফিকের সাহায্যে ‘ভোটচুরি’র অভিযোগ তুলেছিলেন, সেই একই কায়দায় সাংবাদিক বৈঠক করেন অনুরাগ। অভিষেকের কেন্দ্র সম্পর্কে অনুরাগের দাবি, গত চার বছরে ডায়মন্ড হারবারের ৩০১টি বুথে ১৫ শতাংশ ভোটার বৃদ্ধি পেয়েছে। তাঁর বক্তব্য, ২০২৪ সালের ভোটার তালিকা অনুযায়ী ডায়মন্ড হারবারে নকল ভোটারের সংখ্যা ৩ হাজার ৬১৩, ভুয়ো ঠিকানায় নাম রয়েছে ১ লক্ষ ৫৫ হাজার ৩৬৫ জনের। পাল্টা তৃণমূলের তরফে বলা হয়েছে, মোদীর কেন্দ্রে গত চার বছরে ১২ শতাংশ ভোটার বৃদ্ধি পেয়েছে, তা কি অনুরাগের চোখে পড়েনি?
তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘অভিষেক এ বার সাত লক্ষের বেশি ভোটে জিতে রেকর্ড গড়েছেন। বিজেপি তাতে হাবুডুবু খাচ্ছে। দেশের সর্বত্রই দু’একটা ভোটার এ দিক, ও দিক থাকে। তা দিয়ে সার্বিক ফলাফলকে প্রভাবিত করা যায় না।’’ কুণালের এ-ও বক্তব্য, ভোটার তালিকা তো নির্বাচন কমিশনই করেছিল। সেই সঙ্গে তৃণমূল মুখপাত্র প্রশ্ন তুলেছেন, সুকান্ত মজুমদারের স্ত্রীর নামও দু’জায়গায় রয়েছে। সেটা নিয়ে বিজেপি চুপ কেন?
মহারাষ্ট্র এবং দিল্লিতে যে ভাবে ভোটার বৃদ্ধি হয়েছে, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই সন্দেহ প্রকাশ করেছে বিরোধীরা। তাদের দাবি, কৃত্রিম ভাবে ভোটার বৃদ্ধি করেই মহারাষ্ট্র এবং দিল্লির ভোটে জিতেছে বিজেপি। ইতিমধ্যে অভিষেক দাবি করেছেন, চলতি লোকসভা ভেঙে দিয়ে এসআইআর করুক কমিশন। কারণ, ২০২৪ সালের ভোটার তালিকা যদি ত্রুটিপূর্ণ হয়ে থাকে, তা হলে সব সাংসদই সেই ভোটে জিতেছেন। তিনি নিজেও ইস্তফা দিতে রাজি বলে ঘোষণা করেছেন অভিষেক। তবে তৃণমূল নেতার দাবি, শুরুটা করতে হবে নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহকে। এই চাপানউতরের মধ্যেই অনুরাগ নিশানা করলেন ডায়মন্ড হারবারকে। পাল্টা তৃণমূল বিঁধল বারাণসীকে।