বাঁকুড়ায় ‘আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান’ এবং ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’-কে কটাক্ষ মিঠুনের, পাল্টা তোপ তৃণমূলের
আনন্দবাজার | ১৩ আগস্ট ২০২৫
বাঁকুড়া জেলায় বুধবার ঝটিকা সফরে এসে শাসকদল তৃণমূলকে একহাত নিলেন বিজেপি নেতা, অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী। প্রথমে শহরের একটি বেসরকারি লজে বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলার নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে বিশেষ সাংগঠনিক সভা করেন তিনি। সেখানেই দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে একটি প্রশ্নোত্তর পর্ব মিঠুন বলেন, “আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান ও লক্ষ্মীর ভান্ডার— এই সব ভিক্ষা দিতে রাজি নয় বিজেপি। ভিক্ষা নিয়ে কোনও কাজ করবেন না। সম্মানের সঙ্গে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে লড়ব আমরা। এ সব ভিক্ষা নিয়ে লড়াই করার দরকার নেই। এসব ভিক্ষা ছাড়া কিছুই নয়।” সেই পর্বের একটি অংশের ভিডিও পরে সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
মিঠুনের এই মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছে শাসকদল। তৃণমূলের বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তারাশঙ্কর রায় বলেন, “তিনি বড় অভিনেতা। জনগণ তাঁর সিনেমা দেখে বলেই তিনি আজ এত বড় জায়গায় পৌঁছেছেন । অভিনেতা হিসাবে আমি তাঁকে সম্মান জানাই। কিন্তু এই মন্তব্যের দ্বারা তিনি আসলে জনগণকেই অপমান করলেন। এই মন্তব্যকে আমি ধিক্কার জানাই।”
সাংগঠনিক সভা সেরে মিঠুন বাঁকুড়ার বড়জোড়া ব্লকের মালিয়াড়া গ্রামে বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার নেতা-কর্মীদের নিয়ে একটি সম্মেলন করেন। সেখানে তিনি বলেন, “এ বার তৃণমূলের বিসর্জন অনিবার্য। অন্তত নির্বাচন পর্যন্ত আমরা সকলে সমস্ত মনোমালিন্য ও বিদ্বেষ মুছে লড়াই করলে আমরা নিশ্চিত জিতব।” এর পরেই দলীয় কর্মীদের প্রতি তাঁর নিদান, “মার খেয়ে বাড়ি আসবেন না। ওরা যে ভাবে ব্যবহার করবে আমরাও ওদের সঙ্গে সে ভাবেই ব্যবহার করব। এত দিন তো আমরাই মার খেয়ে এলাম। এ বার দেওয়ার পালা।”
বক্তব্যের শেষে মিঠুন কর্মীদের মন রাখতে তুফান সিনেমার জনপ্রিয় সংলাপ বলেন। তিনি বলেন, “নাম তুফান। বছরে এক আধবার আসি। যখন আসি তখন প্রলয় ঘটে। আর যখন যাই তখন যারা নিজেদের ভগবান মনে করে তারা তখন নিজেদের অস্তিত্ব খুঁজে বেড়ায়।”
মিঠুনের এই বক্তব্যেরও কড়া সমালোচনা করেছে তৃণমূল। বড়জোড়ার তৃণমূল বিধায়ক অলোক মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের রাজ্যে প্রায় প্রতি বছর বন্যা হয়। সেই বন্যাও সুন্দর ভাবে মোকাবিলা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এখন তুফান আসুক বা ঝড় এ রাজ্যের মানুষও তা মোকাবিলা করতে প্রস্তুত। মিঠুন চক্রবর্তী বিনোদন জগতের মানুষ। এখন নিজের পরিবারকে বাঁচাতে বিজেপি করছেন। তাঁর সংলাপ শুনতে আসা মানুষের সংখ্যা কমে গেছে। তাই তিনি এই ধরনের অপ্রাসঙ্গিক কথা বলে বেড়াচ্ছেন।”