ছাব্বিশের লক্ষ্যে একাধিক কমিটি গঠন প্রদেশ কংগ্রেসের, অধীরের অনুরোধ রেখেও বাড়তি গুরুত্ব শুভঙ্করকে
প্রতিদিন | ১৪ আগস্ট ২০২৫
সোমনাথ রায়, ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: ‘পরিবর্তিত পরিস্থিতি’তে রাজ্যে ২৯৪ আসনেই লড়তে হবে। সেই মতো ছাব্বিশের ভোট প্রস্তুতি শুরু করে দিল কংগ্রেস। এআইসিসির তরফে বিধানসভা ভোটের কথা মাথায় রেখে রাজ্যস্তরের একাধিক কমিটি গড়ে দেওয়া হল। একই সঙ্গে রাজ্যের প্রায় সব জেলার সভাপতিদের নামও ঘোষণা করা হল। সার্বিকভাবে প্রদেশ কংগ্রেসের নতুন কমিটিতে সব পক্ষের প্রতিনিধিদের রাখা হলেও, কিছুটা বাড়তি গুরুত্ব পেলেন প্রদেশ সভাপতি শুভঙ্কর সরকার।
বুধবার প্রদেশ কংগ্রেসের নতুন কার্যকরী কমিটি, নির্বাচন কমিটি এবং পলিটিক্যাল অ্যাফেয়ার্স কমিটির সদস্যদের নাম ঘোষণা করেছে এআইসিসি। সেই তিন বৃহৎ কমিটিতেই কমবেশি সব শিবিরের নেতাকে জায়গা দেওয়া হয়েছে। তাতে যেমন শুভঙ্কর শিবিরের লোক রয়েছেন, তেমনই অধীর শিবিরের লোক রয়েছেন। গুরুত্বপূর্ণ কমিটিগুলির উপরের দিকে নাম রয়েছে দীপা দাশমুন্সীর। যারা অধীরের আমলে দলে একেবারে কোণঠাসা হয়ে গিয়েছিলেন তাঁদেরও অনেককে বিভিন্ন কমিটিতে জায়গা দেওয়া হয়েছে। সন্তোষ পাঠক, অমিতাভ চক্রবর্তীদের মতো প্রদেশ সভাপতি ঘনিষ্ঠ নেতা একাধিক গুরুত্বপূর্ণ কমিটিতে জায়গা পেয়েছেন। প্রদেশ সভাপতি ঘনিষ্ঠ নেতাকে মানস সরকারকে মধ্য কলকাতা জেলা সভাপতি করা হয়েছে, তার সঙ্গে একাধিক কমিটিতেও রাখা হয়েছে।
জেলা সভাপতি বাছাইয়ের ক্ষেত্রেও বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে শুভঙ্কর সরকারের মতামতকে। প্রদেশ সভাপতি হওয়ার পর থেকেই রাজ্যের একাধিক বড় জেলাকে ভেঙে ছোট ছোট সাংগঠনিক জেলা হিসাবে গড়ে তোলার প্রচেষ্টায় ছিলেন শুভঙ্কর। তাঁর সেই দাবি মেনে একাধিক সাংগঠনিক জেলাকে ভেঙে দিয়েছে প্রদেশ কংগ্রেস। উদাহরণ হিসাবে বলা যেতে পারে নদিয়া জেলাকে দুই ভাগে ভাগ করা, বা উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় অতিরিক্ত একটি সাংগঠনিক জেলা তৈরি। হাওড়া, হুগলি জেলাকেও ভাগ করা হয়েছে। অধীরের অনুরোধ রেখে মুর্শিদাবাদ জেলার সংগঠনকে ভাঙা হয়নি। ওই জেলায় সভাপতিও করা হয়েছে অধীর ঘনিষ্ঠ মনোজ চক্রবর্তীকে। তবে মিলটন রশিদ, অসীম সাহার মতো অধীর ঘনিষ্ঠ একাধিক জেলা সভাপতিকে সরিয়ে তাঁদের অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়া হয়েছে। উত্তর কলকাতা মধ্য কলকাতা, দুটি জেলাতেই প্রদেশ সভাপতি ঘনিষ্ঠদের সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
পলিটিকাল অ্যাফেয়ার্স কমিটি আর ইলেকশন কমিটি দুটির মাথাতেই দায়িত্বে থাকছেন রাজ্যের কংগ্রেস পর্যবেক্ষক গোলাম আহমেদ মীর। সচরাচর ওই কমিটির মাথায় থাকে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতিই। সম্ভবত গোষ্ঠীকোন্দল এড়াতেই শুভঙ্করকে ওই পদ দেওয়া হল না।