ইতিহাস বাঁচিয়ে রাখার দায়িত্ব যেমন মানুষের তেমনই প্রশাসনের। নবাব সিরাজদ্দৌলা স্মৃতি সুরক্ষা ট্রাস্টের অভিযোগ, বাংলা শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজদ্দৌলার হীরাঝিল প্রাসাদ ভগ্নপ্রায় অবস্থায় রয়েছে। কিন্তু প্রশাসন এই ঐতিহাসিক সম্পত্তি রক্ষার জন্য কোনওরকম পদক্ষেপ নিচ্ছে না। এই ঐতিহাসিক সম্পত্তি রক্ষার জন্য কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়েছিল। কিন্তু কলকাতা হাইকোর্ট এই মামলা খারিজ করে দিয়েছে। বুধবার বিচারপতি সুজয় পাল ও বিচারপতি স্মিতা দাসের ডিভিশন বেঞ্চ স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, বৃহত্তর জনগণের স্বার্থ এই মামলার দ্বারা কার্যকর হচ্ছে না, তাই একে জনস্বার্থ মামলা বলা চলে না।
নবাব সিরাজদ্দৌলার কথা উঠলেই মনে পড়ে পলাশীর প্রান্তর, হাজারদুয়ারি এবং সর্বোপরি মুর্শিদাবাদ। কিন্তু মুর্শিদাবাদের গঙ্গার তীরে অবস্থিত হীরাঝিল প্রাসাদ যে নবাবের স্মৃতির চাদর গায়ে জড়িয়ে অযত্নে দাঁড়িয়ে রয়েছে সেই কথা প্রায় সকলেই ভুলতে বসেছে। নবাব সিরাজদ্দৌলা স্মৃতি সুরক্ষা ট্রাস্ট জানিয়েছে, হীরাঝিল প্রাসাদকে রক্ষা করা তো দূর প্রশাসন হেরিটেজের তালিকা থেকেও বাদ রেখেছে এই প্রাসাদকে। আদালত জানিয়েছে, নথি অনুযায়ী এই প্রাসাদ নির্মাণের বেশ কিছু দিন পরই এটি ভেঙে পড়েছিল। আর তা ছাড়া সিরাজদৌল্লার বংশের লোকজনই এই প্রাসাদ ভেঙে দেয়। ভাগীরথীর জলে সেই ভগ্ন অংশ তলিয়েও গিয়েছে। এছাড়াও বৃহত্তর কোনও জনস্বার্থ এক্ষেত্রে নেই।
জানা গিয়েছে, আগে এই ঐতিহাসিক স্থাপত্যের অংশ নদীগর্ভ থেকে উদ্ধারের চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু দেখা যায় এই কাজ এত সহজসাধ্য নয়। একপ্রকার অসম্ভব। তাই আদালত পরিষ্কার জানিয়েছে, এই মামলায় আবেগ থাকলেও এর জন্য জনস্বার্থ মামলা করা যায় না। কারণ বাস্তবের পটভূমিকায় বিচার করলে এই মামলা বৃহত্তর জনগণের স্বার্থের মধ্যে পড়ে না।