আচমকা সজোরে ধাক্কা মারল গাড়ি, খাবার পৌঁছতে গিয়ে রেলিংয়ে আটকে ঝলসে মৃত্যু ডেলিভারি বয়-এর...
আজকাল | ১৪ আগস্ট ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: খাবার পৌঁছতে গিয়ে পুড়ে মৃত্যু হল এক ডেলিভারি বয়-এর। ঘটনায় ক্ষিপ্ত জনতা পুলিশের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখায়। তাঁদের দাবি, সময়মতো চেষ্টা করলে এভাবে পুড়ে মৃত্যু হত না ওই ডেলিভারি বয়-এর। বুধবার ঘটনাটি ঘটেছে কেষ্টপুর ও বিধাননগরের মাঝে ৮ নম্বর ফুটব্রিজের কাছে।
জানা গিয়েছে, বুধবার বিকেলের দিকে কেষ্টপুরের দিক থেকে একটি চার চাকার গাড়ি কেষ্টপুরের দিক থেকে বিধাননগরের দিকে আসার পথে একজন ডেলিভারি বয়কে ধাক্কা মারে। স্থানীয় বাসিন্দা সনৎ সরকার বলেন, 'আমার একটি দোকান রয়েছে। এদিন যখন আমি দোকান খুলছিলাম তখন একটি বিরাট আওয়াজ কানে যেতে আমি দৌড়ে আসি। দেখি চার চাকার গাড়িটি একজন ডেলিভারি বয়কে ধাক্কা মারে। ধাক্কার জেরে ওই ছেলেটি পাশে একটি রেলিংয়ের সঙ্গে আটকে যায়। গাড়িটিতেও আগুন ধরে যায়। আমি দৌড়ে গিয়ে আশেপাশের লোকজনকে ডেকে এনে আগুন নেভানোর কাজে হাত লাগাই। কিন্তু দুঃখের বিষয়, ডেলিভারি বয় আটকে থাকায় আগুনে পুড়ে মারা যায়।' জানা গিয়েছে, ওই চার চাকার গাড়িতেও কয়েকজন যাত্রী আটকে পড়ে ছিলেন। তাঁরা কোনও রকমে বেরিয়ে এসে রক্ষা পান। তাঁদের মধ্যে কয়েকজনকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে।
ঘটনার পরেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে গোটা এলাকা। পুলিশের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন স্থানীয়রা। তাঁদের অভিযোগ, খবর পাওয়ার পরেও দমকল অনেক দেরিতে এসেছে। রাস্তা অবরোধ শুরু করেন স্থানীয়রা। আটকে যায় ব্যস্ত সময়ে ওই রাস্তায় যান চলাচল। ঘটনাস্থলে বিরাট সংখ্যক পুলিশ আসে। তারা বুঝিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করলেও বাসিন্দারা তাদের কথা শুনতে চায়নি। এরপরেই পুলিশের উদ্দেশে পাথর ছুঁড়তে শুরু করেন বিক্ষোভকারীরা। পাল্টা পুলিশের তরফে কাঁদানো গ্যাসের শেল ফাটিয়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন পুলিশের সিনিয়র অফিসাররাও। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে পুলিশের যদি কোনো গাফিলতি থাকলে সেই বিষয়টিও দেখা হবে। এই ঘটনায় ইট বৃষ্টির জেরে আহত হয়েছেন কয়েকজন পুলিশকর্মী।
পথ দুর্ঘটনা রোধে রাজ্য সরকারের তরফে একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। নেওয়া হয়েছে 'সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ'-এর মতো কর্মসূচি। পুলিশের তরফে বারবার অনুরোধ করা হচ্ছে অকারণে গতি বাড়িয়ে গাড়ি না চালাতে। গাড়ির এই গতি পরিমাপের জন্য ইতিমধ্যেই রাস্তায় রাস্তায় লাগানো হয়েছে গতি পরিমাপের যন্ত্র। স্থানীয় থানার তরফে পথ দুর্ঘটনা কমাতে নেওয়া হচ্ছে একাধিক কর্মসূচি। সেখানে সামিল করা হচ্ছে স্কুল পড়ুয়াদেরও। তাঁরাও পুলিশ কর্মীদের পাশাপাশি দাঁড়িয়ে জনসাধারণের প্রতি অনুরোধ করছে গতির বিষয়ে সরকারের যে নির্দেশ আছে সেই নির্দেশ মেনে চলতে। কিন্তু তারপরেও এক শ্রেণির লোক এই বিষয়ে যথেষ্ট সচেতন নয় বলেই অভিযোগ। যার প্রমাণ বিধাননগরে ঘটে যাওয়া এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা।
এর পাশাপাশি আরও যে বিষয়টিতে রাজ্যের পরিবহন দপ্তরের তরফে বারবার বলা হচ্ছে সেই বিষয়টি হল গাড়ির 'ফিটনেস'। দেখা যাচ্ছে মেয়াদ উত্তীর্ণ অনেক গাড়ি রাস্তায় চলছে। যার ফলে ছড়াচ্ছে দূষণ। অনেক সময় দেখা যাচ্ছে যান্ত্রিক ত্রুটি।