নবান্ন অভিযানে পুলিশকে আক্রমণ, গালিগালাজ শুভেন্দুর! প্রতিবাদে পথে পুলিশ পরিবারের মেয়ে-বউরা
প্রতিদিন | ১৩ আগস্ট ২০২৫
অর্ণব আইচ: আরজি কর কাণ্ডে ন্যয়বিচারের ইস্যুতে ৯ আগস্টের নবান্ন অভিযান চলাকালীন কলকাতার পুলিশ কমিশনারকে কদর্য ভাষায় গালিগালাজ ও পুলিশকর্মীদের উপর হামলার প্রতিবাদ। পথে নামলেন পুলিশ পরিবারের মেয়ে-বউরা। মঙ্গলবার বিকেলে কলকাতা প্রেস ক্লাব থেকে গান্ধী মূর্তি পর্যন্ত হাঁটেন তাঁরা।
গত শনিবার নবান্ন অভিযানের নামে পার্ক স্ট্রিটে পুলিশের উপর হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ। আহত অবস্থায় এক পুলিশ কনস্টেবল এখনও হাসপাতালে ভর্তি। এ ছাড়াও সেদিন পার্ক স্ট্রিটে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী কলকাতার পুলিশ কমিশনারকে অত্যন্ত খারাপ ও কদর্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। পুলিশকে জুতো দেখান বিজেপি নেতারা, অভিযোগ এমনই। এদিন পুলিশ আবাসন সমিতির সদস্য, তথা কলকাতার ৮২টি পুলিশ আবাসনের অধিবাসী মহিলারা বিরোধী দলনেতা ও বিজেপি নেতা-কর্মীদের এ হেন আচরণের প্রতিবাদ জানান। তাঁদের দাবি, হাই কোর্টের রক্ষাকবচ হাতে নিয়ে বিরোধী দলনেতা ইচ্ছামতো পুলিশকে অপমান ও অপদস্থ করে চলেছেন। প্রেস ক্লাবে এই ব্যাপারে বক্তব্য রাখার সময় তৃণমূল কংগ্রেস নেতা অনুব্রত মণ্ডলের সম্প্রতি পুলিশের পরিবার নিয়ে কটূক্তির প্রসঙ্গ ওঠে। কেন তাঁরা অনুব্রতর মন্তব্যের নিন্দা করছেন না, তা নিয়ে তাঁদের ক্রমাগত প্রশ্ন করা হয়। এর উত্তরে পুলিশ পরিবারের মহিলারা বলেন, অনুব্রতর এই আচরণেরও তাঁরা প্রতিবাদ জানিয়েছেন ও এখনও জানাচ্ছেন। রাজ্যের শাসক দলের নির্দেশ মতো অনুব্রত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ক্ষমা চেয়েছিলেন। কিন্তু রাজ্যের বিরোধী দলনেতা কোনওরকম ক্ষমা চাননি। এই প্রসঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের অন্যতম রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘অনুব্রত নিয়েও ওনারা দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন। গত ৯ আগস্ট পার্ক স্ট্রিটে পুলিশের উপর হামলা হয়। পুলিশের পরিবারের লোকেরা উদ্বেগ ও নিন্দা প্রকাশ করেছেন। সেটাই বলা হয়েছে।’’
এদিন পুলিশ আবাসন সমিতির পক্ষে সালমা সুলতানা ও অন্য মহিলা সদস্যরা জানান, যে পুলিশকর্মী ও আধিকারিকরা সমাজের রক্ষক, কর্তব্যরত অবস্থায় তাঁদের উপর হামলা চালানো হচ্ছে। তাঁদের প্রকাশ্যে হেনস্তা করা হচ্ছে। পুলিশকে কটূক্তি ও কদর্য ভাষায় গালিগালাজ করা হচ্ছে। পুলিশ কমিশনার সাফল্যের সঙ্গে তাঁর কর্তব্য পালন করছেন ও অতীতেও বহু কৃতিত্বের অধিকারী, তাঁকে যে ভাষায় আক্রমণ করা হয়েছে, তার প্রতিবাদ জানাচ্ছেন পুলিশের পরিবারের মহিলারা। কেউ যদি পুলিশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদও জানায়, তবে শালীনতা বজায় রেখে করুক। পরিবারকে নিয়ে যে সমস্ত কুরুচিকর মন্তব্য হচ্ছে,তার প্রতিবাদ জানানো হচ্ছে। এতে পুলিশের পরিবারের স্ত্রী ও মেয়েরা ভীত ও সন্ত্রস্ত। একবার বা দু’বার একই ঘটনা ঘটলেও পরিবার প্রতিবাদ জানায়নি। কিন্তু এতবার একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হওয়ার পর তাঁরা প্রতিবাদ জানিয়ে রাস্তায় নেমেছেন। ফের কেউ পুলিশকর্মীদের হেনস্তা করলে বা তাঁদের জুতো বা চটি দেখালে তাঁদের প্রত্যেকের বাড়ির সামনে আরও বৃহত্তর আন্দোলন করা হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশকর্মী ও আধিকারিকদের পরিবারের মহিলারা।