• অতি বর্ষণে শোলার দাম বাড়ল তিনগুণ, পুজোর আগে ক্ষতির আশঙ্কা শিল্পীদের
    প্রতিদিন | ১৩ আগস্ট ২০২৫
  • স্টাফ রিপোর্টার, কাটোয়া: অতি বর্ষণের জেরে ক্ষতি শোলা চাষের। এবছর শোলার জোগানের অভাবে সংকটের মধ্যে পড়েছেন মঙ্গলকোটের বনকাপাসি গ্রামের শিল্পীরা। শোলার যে বাজারমূল্য থাকে তার চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে। অথচ পুজোকমিটি বা উদ্যোক্তাদের সঙ্গে দামের চুক্তি সাত-আট মাস আগেই হয়ে গিয়েছে। চড়া দামে শোলা কিনে সাজসজ্জা বিক্রি করে আখেরে এবছর ক্ষতির মুখে পড়তে চলেছেন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন শোলাশিল্পীরা।

    মঙ্গলকোটের বনকাপাসি গ্রাম। পঞ্চাশটির কাছাকাছি শোলারসাজ তৈরির কারখানা রয়েছে। এই গ্রামের প্রায় হাজার দেড়েক মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরক্ষোভাবে শোলা শিল্পের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। সারা বছরই কমবেশি শোলার সাজের চাহিদা কমবেশি থাকে। তবে সবচেয়ে বেশি শোলার সাজ তৈরি ও বিক্রি হয় শারদোৎসবের মরশুমে। দুর্গাপুজো থেকে জগদ্ধাত্রী পুজো পর্যন্ত কয়েক কোটি টাকার শোলার সাজের কারবার চলে।

    কিন্তু এবছর অতিবর্ষণের প্রভাব পড়েছে শোলাশিল্পে। স্থানীয় শোলাশিল্পী প্রসাদ ঘোষ, কাশীনাথ পালরা বলেন, ‘‘গ্রামে বেশিরভাগ কাঁচামাল আসে নদিয়া ও মুর্শিদাবাদ থেকে। কিছু আসে জয়নগর এলাকা থেকে। কিন্তু এবছর অতিবর্ষণের কারণে শোলার জোগান একেবারে কম। যেটুকু মাল পাওয়া যাচ্ছে তা দ্বিগুণ, আড়াই গুণ দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে। কিন্তু আমরা অর্ডার ধরেছি জানুয়ারি ফ্রেবুয়ারি মাস থেকেই। তাই চড়া দামে শোলা কিনে আমাদের ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে।’’

    আগে শোলার একটি বান্ডিল (১২ পিস) কেনা পড়ত ৪০-৫০ টাকা। এখন প্রতি পিস ১০-১২ টাকা অর্থাৎ ওই বান্ডিলের দাম পড়ছে ১২০-১৪০ টাকা। প্রায় তিনগুণ দাম বেড়ে গিয়েছে।
    শোলাশিল্পীরা জানান, বনকাপাসি গ্রামের শোলার কাজ দুর্গাপুজোর সময় অসম, উত্তরপ্রদেশ, ত্রিপুরা, দিল্লি ও দক্ষিণ ভারতেও যায়। এছাড়া বিদেশ থেকেও অর্ডার আসে। সেই অনুযায়ী, বছরের প্রথম দিকেই বরাত নিয়ে নিয়েছেন শোলাশিল্পীরা। কিন্তু এবছর শোলার দাম যে এতটা চড়া হবে তা অনুমান করতে পারেননি কেউ।

    শিল্পী ভুবন গড়াই বলেন, “সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যেই আমরা শোলার সাজ অর্ডার অনুযায়ী পাঠিয়ে দিতে শুরু করব। তার সমস্ত মাল তৈরি রাখতে হবে। কিন্তু একদিকে যেমন শোলার যোগান কম, পাশাপাশি শ্রমিকেরও অভাব রয়েছে। তাছাড়া এই পেশায় নতুন প্রজন্ম আসতে চাইছে না। তাই সবদিক থেকেই আমাদের এবছর খারাপ পরিস্থিতি চলছে। কীভাবে বরাত অনুযায়ী, সাজ নির্দিষ্ট সময়ে ডেলিভারি দেব তাই নিয়ে চিন্তায় রয়েছি।”
  • Link to this news (প্রতিদিন)