মনোরঞ্জন মিশ্র: পুরুলিয়াকাণ্ডে চাঞ্চল্যকর মোড়। বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরে কাজল মাছুয়ার (২৫)কে খুন। তারপর টার্গেট হয় কাজলের বোন রাধা মাছুয়ার (১৩) এবং কাজলের মেয়ে রাখি মাছুয়ার (৮)। একই সময়ে মা, মাসি ও মেয়েকে খুন করে প্রমাণ লোপাটের জন্য তিনজনের দেহ ফেলে দেওয়া হয় রেল লাইনে। জিআরপি ও পুলিসের যৌথ তদন্তে নারকীয় হত্যাকাণ্ডের ঘটনার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার কাজলের প্রেমিক বাবুজান মৌমিন এবং তার ঘনিষ্ট বন্ধু বিজয় মাছুয়ার।
উল্লেখ্য, রবিবার গভীর রাতে দক্ষিণ পূর্ব রেলের মুরি-চাণ্ডিল শাখার সুইসা রেলস্টেশন সংলগ্ন এলাকায় রেল লাইনের মধ্যে শায়িত অবস্থায় কাজল মাছুয়ার (২৫) এবং তাঁর বোন রাধা মাছুয়ার (১৩) ও কাজলের মেয়ে রাখি মাছুয়ার (৮) এর দেহ উদ্ধার হয়। তিনজনের শরীরে রেলে কাটা পড়ার কোনও দাগ নেই, রাধার শরীরে ধারাল অস্ত্রের ক্ষত চিহ্ন, কাজলের মুখে নখে আঁচড়ানোর দাগ। ঘটনায় খুনের মামলা রুজু করে যৌথ তদন্তে নামে জিআরপি ও পুলিস।
ঘটনার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই বাঘমুন্ডির সুইসায় মা, মেয়ে, মাসি এই তিন খুনের ঘটনায় দুই আততায়ীকে মঙ্গলবার রাতে বাঘমুন্ডি থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার করে জিআরপি এবং পুলিস। এসআরপি (খড়্গপুর) দেবশ্রী সান্যাল সাংবাদিক সম্মেলনে জানান, ধৃত দুজনের নাম বাবুজান মোমিন (৪৫)। তার বাড়ি ঝাড়খণ্ডের সরাইকেলা-খরসোওয়া জেলার তিরুলডি থানার চড়া গ্রামে। আরেক জনের নাম বিজয় মাছুয়ার (১৮)। তার বাড়ি বাঘমুন্ডির কোরাং গ্রামে। ধৃত দুজনকেই পুলিস হেফাজতের দাবি জানিয়ে পুরুলিয়া আদালতে তোলা পেশ করবে পুলিস।
জিআরপি পুলিস সূত্রে খবর, ধৃত বাবুজান মোমিনের বাড়ি ঝাড়খণ্ডের সরাইকেলা-খরসোওয়া জেলার তিরুলডি থানার চড়া গ্রামে হলেও তার ইটভাটা রয়েছে বাঘমুন্ডির জিলিং গ্রামে। ওই ইটভাটারই শ্রমিক ছিল নিহত কাজল মাছুয়ার। ইটভাটার কাজের সূত্র ধরেই মালিক বাবুজানের সঙ্গে নিহত কাজলের প্রেম এবং পরকীয়া হয়। কিন্তু কয়েকদিন ধরে তাদের মধ্যে বনিবনা হয় এবং ঝামেলা হয়। তাই পথের কাঁটাকে সরাতে কাজলকে খুনের পরিকল্পনা নেওয়া। খুনের ঘটনার দিনই কাজলের সঙ্গে তার বোন এবং তার মেয়ে একসঙ্গে থাকায় তিনজনকেই খুন করে প্রমাণ লোপাটের জন্য রেল লাইনে ফেলে দেওয়া হয়।