• রহড়ায় অস্ত্র উদ্ধারের তদন্ত এসটিএফের হাতে
    আনন্দবাজার | ১৩ আগস্ট ২০২৫
  • রহড়ার একটি আবাসন থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র এবং কার্তুজ উদ্ধারের ঘটনার তদন্তভার ব্যারাকপুর কমিশনারেটের হাত থেকে তুলে দেওয়া হল রাজ্য পুলিশের এসটিএফের হাতে। মঙ্গলবারই এসটিএফের তরফে ব্যারাকপুর পুলিশের ডিডি-র হাত থেকে মামলার বিভিন্ন নথি এবং কেস ডায়েরি সংগ্রহকরা হয়েছে। হেফাজতে নেওয়া হয়েছে ওই মামলায় গ্রেফতার হওয়া দুই অভিযুক্তকে।

    গত ৪ জুলাই রহড়ার রিজেন্ট পার্কের একটি আবাসনে অভিযান চালিয়ে ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র, ৯০৪ রাউন্ড গুলি এবং কয়েক লক্ষ টাকা উদ্ধার করে ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের গোয়েন্দা দফতর। ওই আবাসন থেকেই লিটন মুখোপাধ্যায় নামে এক অস্ত্র কারবারিকে ধরা হয়। পরে তাকে জেরা করে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুর থেকে কংস প্রামাণিক নামে আরও এক অস্ত্র কারবারিকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

    পুলিশ সূত্রের খবর, ধৃত অভিযুক্ত বিহারের মুঙ্গেরে অস্ত্র বানানোর বরাত দিয়ে সেখান থেকে সেগুলি কিনত। মূলত বিহারের অস্ত্র কারবারিরাই এ রাজ্যে লিটনের কাছে অস্ত্র পৌঁছে দিত। ২০২২ সাল থেকে ওই আবাসনের একটি ফ্ল্যাটে নিজের অস্ত্র ভান্ডার তৈরি করেছিল লিটন। একাধিক বার বিহার থেকে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আসা হয়েছে সেখানে। ধৃতের দাবি, সে উত্তর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও নদিয়ার বিভিন্ন দুষ্কৃতীকে চাহিদা মতো অস্ত্র সরবরাহ করত। উত্তর ২৪ পরগনার এক দুষ্কৃতীর হাতে ওই অস্ত্র তুলে দেওয়ার কথা ছিল তার।

    গোয়েন্দারা জানান, যে পরিমাণ কার্তুজ উদ্ধার হয়েছে, তা থেকে পরিষ্কার, বিভিন্ন লাইসেন্সপ্রাপ্ত অস্ত্রের দোকান থেকে বেআইনি ভাবে তা সংগ্রহ করা হত। মাস তিনেক আগে এসটিএফের গোয়েন্দারা কয়েক জন অস্ত্র কারবারিকে গ্রেফতার করেন। তাদের জেরা করে জানা যায়, কলকাতার দু’টি নামী ও প্রাচীন অস্ত্র বিপণি থেকে ওই সব অস্ত্র ও কার্তুজ বেআইনি ভাবে বিক্রি করা হয়েছিল। ওই ঘটনার সঙ্গে রহড়ার অস্ত্র উদ্ধারের কোনও যোগসূত্র রয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হবে বলে গোয়েন্দা সূত্রের খবর।

    উল্লেখ্য, রাজ্য পুলিশের এসটিএফ তৈরি হওয়ার পরে তারা নিজেরাই অস্ত্র উদ্ধার, জঙ্গি কার্যকলাপ বা জাল নোট উদ্ধার করে তা নিয়ে তদন্ত করত। এই প্রথম এসটিএফ জেলা বা কমিশনারেট এলাকার কোনও তদন্তের দায়িত্ব নিল। সূত্রের দাবি, রহড়ার ওই ঘটনার সঙ্গে আন্তঃরাজ্য অস্ত্র পাচারকারীদের যুক্ত থাকার পাশাপাশি এ রাজ্যের বেশ কয়েক জনের নামও উঠে এসেছে। মনে করা হচ্ছে, সেই কারণেই ভোটের আগে গুরুত্ব বুঝে ওই ঘটনার তদন্তভার তুলে দেওয়া হয়েছে এসটিএফের হাতে।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)