প্রসূতির শারীরিক অবস্থা ক্রমশ খারাপ হচ্ছিল প্লাসেন্টা (গর্ভফুল) থেকে প্রচুর রক্তক্ষরণের জেরে। উত্তরপ্রদেশ থেকে আসা, ৩২ সপ্তাহের ওই অন্তঃসত্ত্বার ‘ক্লাসিকাল সিজ়ার’ করে প্রাণের ঝুঁকি কাটাল সল্টলেকের বেসরকারি হাসপাতাল। সুস্থ পুত্রসন্তানের জন্ম দিয়েছেন তিনি।
মণিপাল হাসপাতালের স্ত্রী-রোগ চিকিৎসক অভিনিবেশ চট্টোপাধ্যায় ও পলি চট্টোপাধ্যায় জানান, ওই প্রসূতি ‘প্লাসেন্টা প্রিভিয়া’ (গর্ভাবস্থার শেষ কয়েক মাসে গর্ভফুল জরায়ুমুখ বন্ধ করে দেয়) এবং ‘প্লাসেন্টা অ্যাক্রেটা অ্যান্ড পারক্রেটা' (গর্ভফুল জরায়ুর প্রাচীরের শেষ স্তর পর্যন্ত পৌঁছে যায়)-য় আক্রান্ত ছিলেন। অভিনিবেশ বলেন, ‘‘প্লাসেন্টা অস্বাভাবিক ভাবে জরায়ুর গভীরে প্রবেশ করার পাশাপাশি মূত্রথলিতেও ঢুকে গিয়েছিল। প্রচুর রক্তক্ষরণ শুরু হয়েছিল।’’ প্রসূতির শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল করার সঙ্গেই গর্ভস্থ শিশুর ফুসফুস ও মস্তিষ্ক দ্রুত পরিণত করতে জীবনদায়ী ইনজেকশনও দেওয়া হয় হাসপাতালে। মঙ্গলবার ‘ক্লাসিকাল সিজ়ার’ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এতে জরায়ুর উপরের অংশে উল্লম্ব ছেদ করা হয়। ইন্টারভেনশনাল রেডিয়োলজিস্ট প্রসূতির ইলিয়াক ধমনীতে ক্যাথিটার লাগিয়ে দেন। যাতে সিজ়ারের সময়ে রক্তক্ষরণ নিয়ন্ত্রণ করা যায়। অভিনিবেশ ও তাঁর দল সিজ়ারের পরে ধমনীতে বেলুন ফুলিয়ে সাময়িক ভাবে রক্ত সরবরাহ বন্ধ করে, সিজ়ারিয়ান হিস্টেরেক্টমির মাধ্যমে জরায়ু বাদ দেন। বিদেশে প্লাসেন্টা প্রিভিয়ার সব ক্ষেত্রেই প্রসূতির জীবনের ঝুঁকি কমাতে এই পদ্ধতি ব্যবহৃত হয় বলে জানান অভিনিবেশ। তাঁর কথায়, ‘‘এটি দলগত সাফল্য।’’