দমদমের ইতিহাস প্রাচীন। সে কথা বার বারই বলেছেন ইতিহাসবিদ থেকে পুরাতত্ত্ববিদেরা। সেই ইতিহাসের সাক্ষ্য বহনকারী বিভিন্ন উপাদান বাঁচিয়ে রাখতে হলে শুধু আইন-আদালত বা প্রশাসনের ভরসায় না থেকে সাধারণ মানুষকে নিয়ে সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। সোমবার দমদমে সরোজিনী নায়ডু কলেজ ফর উইমেন-এ ‘ক্লাইভ হাউস: ইতিহাসের নীরব সাক্ষী’ শীর্ষক একটি রাজ্য স্তরের আলোচনাসভা এবং প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছিল। সেখান থেকেই উঠে এল এমন দাবি।
কলেজের সঙ্গে যৌথ ভাবে এই সভার আয়োজন করেছিল ‘গ্রেটার দমদম হেরিটেজ প্রিজ়ারভেশন সোসাইটি’ এবং ‘দেশকাল’ নামে একটি সংস্থা। আলোচকদের কথায় উঠে আসে, দমদমে অবস্থিত ক্লাইভ হাউসকে ঘিরে পূর্ণাঙ্গ প্রত্ন-খনন, ঐতিহ্যশালী ভবন এবং সংলগ্ন এলাকা সংরক্ষণ ও সংস্কারের আশু প্রয়োজন। কিন্তু দমদমের ঐতিহাসিক স্মারকগুলি একের পর এক ভাঙা পড়ছে।
আলোচনায় জানা যায়, ২০০১ সালে ক্লাইভ হাউস অধিগ্রহণ করে খননকার্য চালানো হয়েছিল। তার পরে ২০২২ সালের খননকার্যে সাতটি স্তরে খ্রিস্টপূর্ব ১২০০ থেকে ১৮০০ খ্রিস্টাব্দ সময়কালের প্রত্নসামগ্রী মিলেছে। বিভিন্ন মৃৎপাত্র থেকে অন্য একাধিক সামগ্রীর বিশ্লেষণে উঠে এসেছে সেই সময়কালের ভৌগোলিক তথ্য বা মানুষের খাদ্যাভ্যাস। অন্য জায়গার সঙ্গে বাণিজ্য-সংযোগ ছিল এই জায়গার। যোগসূত্র মিলেছে চন্দ্রকেতুগড়ের সঙ্গেও।
আলোচনা থেকে ক্লাইভ হাউসের সংরক্ষণ ও সংস্কারের পাশাপাশি ভবন সংলগ্ন সমগ্র প্রাঙ্গণ অধিগ্রহণ, পূর্ণাঙ্গ খননকার্য, ক্লাইভ হাউসে সংগ্রহশালা নির্মাণ ও ক্লাইভ হাউসকে ঘিরে আন্তর্জাতিক মানের পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার প্রস্তাবও উঠে আসে। পাশাপাশি, পূর্ব কলকাতা জলাভূমি থেকে বারাসত, দমদম, কাশীপুর থেকে দেগঙ্গা ও চন্দ্রকেতুগড় পর্যন্ত বৃহত্তর দমদমের পূর্ণাঙ্গ তথ্যভান্ডার গঠন ও প্রকাশের প্রস্তাবও ওঠে।