আইসার কলকাতার মোহনপুর ক্যাম্পাসের কাছে যে ভাড়াবাড়িতে থাকতেন গবেষক-পড়ুয়া অনমিত্র রায়, মঙ্গলবার দুপুরে সেখানে তালা ঝোলাল পুলিশ। যে পরীক্ষাগারে ওই গবেষককে অসুস্থ অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল, তা আগেই তালাবন্ধ করা হয়েছিল। কিন্তু অনমিত্রের মৃত্যুর পরে যে সতীর্থ ও গবেষণা সুপারভাইজ়ারের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ হয়েছে, মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি। ফলে, পড়ুয়াদের একাংশ পুলিশের ভূমিকায় প্রশ্ন তুলছেন। তবে রানাঘাট পুলিশ-জেলার সুপার আশিস মৌর্যের দাবি, “তদন্ত ঠিকই চলছে। প্রয়োজন মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” সন্ধ্যায় পঞ্জাবে আইসার মোহালি ক্যাম্পাসে পড়ুয়ারা শোক-মিছিল করেছেন।
আইসার কলকাতার তরফে এ দিনই বিবৃতিতে জানানো হয়, অতিরিক্ত ‘অ্যান্টি-র্যাগিং সেল’ চালু করা হয়েছে, যা স্বাধীন ভাবে কাজ করবে। ‘ইমার্জেন্সি অ্যান্ড ক্রাইসিস রেসপন্স কমিটি’ও চালু হয়েছে। সেটির নোডাল অফিসারের সঙ্গে ছাত্র-প্রতিনিধিরা ঘনিষ্ঠ ভাবে কাজ করবেন। ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত এবং পুলিশকে সহায়তা করতে বিশেষজ্ঞদের ‘ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি’-তে জোড়া হয়েছে। পড়ুয়াদের মানসিক সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে ‘মাইন্ড কেয়ার অ্যান্ড ওয়েলনেস সেন্টার’ ফের সক্রিয় করা হচ্ছে। এক জন স্বতন্ত্র ডিনের অধীনে ‘ওয়েলনেস অ্যান্ড ওয়েলফেয়ার কমিটি’ গঠনের তোড়জোড় চলছে।
অনমিত্র তাঁর মৃত্যুর আগে সতীর্থ সৌরভ বিশ্বাস ও গবেষণা সুপারভাইজ়ার অনিন্দিতা ভদ্রের বিরুদ্ধে দুর্ব্যবহার এবং অসহযোগিতার অভিযোগ তুলেছিলেন সমাজমাধ্যমে। ‘অ্যান্টি-র্যাগিং সেল’-এ তিনি ই-মেল করলেও, তারা সাড়াশব্দ করেনি বলেও অভিযোগ। ঘটনাচক্রে, ‘ডিন অব স্টুডেন্টস’ অ্যাফেয়ার্স’ হওয়ায় পদমর্যাদা বলে অনিন্দিতার স্বামী অয়ন বন্দ্যোপাধ্যায় ওই সেলের চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি ইস্তফা দিয়েছেন। পড়ুয়াদের একাংশের প্রশ্ন, ওই ‘সেল’ কার্যত নিষ্ক্রিয় ছিল বলেই কি অতিরিক্ত ‘অ্যান্টি-র্যাগিং সেল’ গড়তে হল! আইসার কলকাতার জনসংযোগ আধিকারিক ভাস্বতী ভৌমিক বলেন, “আমাদের বক্তব্য, বিবৃতিতে বলা হয়েছে।” বর্তমান ‘ডিন অব স্টুডেন্টস অ্যাফেয়ার্স’ বলরাম মুখোপাধ্যায় ফোন ধরেননি। জবাব মেলেনি মোবাইল-বার্তার।