• ২০১৩ মনে আছে? পঁচিশেও ফিরল সেই মীরা-স্মৃতি
    আজ তক | ১৩ আগস্ট ২০২৫
  • নির্বাচন কমিশনকেই যেন প্রধান বিরোধী দল হিসেবে দেখছে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। SIR (স্পেশাল ইন্টেনশিভ রিভিশন) নিয়ে যা চলছে, তাতে এমনই মনে হচ্ছে। আর যাতবার নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে রাজ্য সরকারের সংঘাত বাঁধবে, ততবারই যে নামটি উঠে আসবে, তা হল মীরা পাণ্ডে। সেই মীরা পাণ্ডে, ২০১৩ সালে পঞ্চায়েত ভোটের আগে যাঁর কাছে শেষ পর্যন্ত নতিস্বীকার করতে হয়েছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। ২০২৫ সালেও  SIR ইস্যুতে নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে রাজ্য সরকারের সংঘাত সপ্তমে। তফাত শুধু একটাই, সে বার রাজ্য নির্বাচন কমিশন ছিল, এবার জাতীয় নির্বাচন কমিশন। 

    ২০১৩ সালে কী হয়েছিল?

    ২০১১ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্ষমতায় আসার পরে ২০১৩ সালেই ছিল প্রথম পঞ্চায়েত ভোট। পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল সরকারের তখন বয়স দু বছরের কাছাকাছি। খুনোখুনি, অবাধে ভোট লুঠ, পঞ্চায়েত ভোটে পশ্চিমবঙ্গের মানুষ এই সব দেখেই অভ্যস্ত। ২০১৩ সালে যেন অপ্রত্যাশিত ধাক্কাটা খেয়েছিল তৃণমূল সরকার। 

    অবাধ নির্বাচন করতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবি করেন তত্‍কালীন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার মীরা পাণ্ডে।  আধাসেনা মোতায়েনের জন্য রাজ্যপালের কাছে আর্জি জানান। সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গড়িয়েছিল মামলা। দেশের শীর্ষ আদালতের নির্দেশে অতি স্পর্শকাতর এলাকায় সে বার আধাসেনা মোতায়েন করেই ভোট করিয়েছিলেন তিনি। যা নিয়ে তৎকালীন এই রাজ্য নির্বাচন কমিশনারকে তৃণমূল সরকারের বিরাগভাজনও হতে হয়। তবে পিছু হঠেননি তিনি।  ব্যস, মমতা সরকার রেগে আগুন। রাজ্য পুলিশ দিয়েই ভোট করতে হবে, দাবি করে তৃণমূল সরকার। সংঘাত গড়ায় আদালত পর্যন্ত। 

    সে বার পঞ্চায়েত ভোট হয়েছিল কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়েই

    কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল খোদ নির্বাচন কমিশন। সেই বছর কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার নির্দেশ দেওয়ার পর ৮২৫ কোম্পানি বাহিনী মোতায়েন করেছিল কমিশন। পাঁচ দফায় ভোট হয়েছিল ২০১৩ সালে। অর্থাৎ এক এক দফায় গড়ে প্রায় ১৬৫ কোম্পানি বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল। 

    কাট টু ২০২৫ সাল

    কাট টু ২০২৫। ভোটার তালিকা সংশোধনে SIR শুরু করেছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। বিহারে ইতিমধ্যেই এই প্রক্রিয়ায় প্রায় ৬৫ লক্ষ নাম বাদ পড়েছে। বিহারের পরেই পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন। এখানেও  SIR হবে। তোড়জোড় শুরু হয়ে গিয়েছে। কিন্তু মতা বন্দ্যোপাধ্যায় একেবারে রণংদেহী মেজাজে। এবারও মামলা গড়িয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। মমতা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, ভোটার তালিকায় একজনেরও নাম বাদ পড়লে কমিশনের অফিস ঘেরাও হবে। 

    আজ অর্থাত্‍ বুধবার নির্বাচন কমিশনের তলে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্য সচিব মনোজ পন্ত যাচ্ছেন দিল্লি। নির্বাচনের কাজের সঙ্গে যুক্ত চার আধিকারিককে সাসপেন্ড করা নিয়ে টানাপড়েন চলছে রাজ্য প্রশাসন এবং নির্বাচন কমিশনের মধ্যে। এই আবহে পন্তকে দিল্লিতে তলব।  


    ২০১৩ সালে মীরা পাণ্ডের কাছে ঝুঁকতে হয়েছিল রাজ্য সরকারকে। ২০২৫ সালে কী হবে? SIR তো দেশজুড়ে হবে, ঘোষণা করে দিয়েছে কমিশন।
  • Link to this news (আজ তক)