• গবেষক ছাত্রের মৃত্যুর পরে ক্রাইসিস বুঝছে IISER কলকাতা
    এই সময় | ১৩ আগস্ট ২০২৫
  • এই সময়: আইসার কলকাতার গবেষক ছাত্রের মৃত্যুর পর একের পর এক পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছেন কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার ইনস্টিটিউটের তরফে জানানো হয়েছে, সমস্ত অভিযোগ অবিলম্বে নিরসন করার জন্য একটি অতিরিক্ত অ্যান্টি-র‌্যাগিং সেল গঠন করা হয়েছে। এই সেলের দায়িত্বে থাকবেন একজন প্রফেসর-ইন-চার্জ, যিনি স্বাধীনভাবে কাজ করবেন। সেলের জন্য থাকবে পৃথক অফিস ও ছাত্রদের জন্য বিশেষ হেল্পলাইন নম্বর।

    পড়ুয়াদের জরুরি সহায়তার জন্য গঠিত হয়েছে এমার্জেন্সি অ্যান্ড ক্রাইসিস রেসপন্স কমিটি। একজন নোডাল অফিসার ও সহকারী নোডাল অফিসারের নেতৃত্বে এই কমিটি যে কোনও জরুরি পরিস্থিতিতে ছাত্রছাত্রীদের একক যোগাযোগ কেন্দ্র (SPOC) হিসেবে কাজ করবে। ছাত্র প্রতিনিধি ও মনোনীত অন্যান্য আধিকারিকরা নোডাল অফিসারদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সমন্বয় করবেন।

    গত ৮ অগস্ট ক্যাম্পাসে তাঁর নিজের ল্যাবের মধ্যেই অতিরিক্ত ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন ওই প্রতিষ্ঠানের গবেষক অনমিত্র রায়। পরে কল্যাণী এইমসে তাঁর মৃত্যু হয়। আত্মহত্যা করার কিছুক্ষণ আগে তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি দীর্ঘ পোস্ট করে মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ তোলেন তাঁরই ল্যাবের এক সিনিয়র গবেষকের বিরুদ্ধে। নিজের সুপারভাইজার অনিন্দিতা ভদ্রের বিরুদ্ধে ওই অভিযুক্ত গবেষককে আড়াল করার অভিযোগও জানিয়ে গিয়েছেন ওই মৃত গবেষক।

    এই ঘটনার তদন্তে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে নানা ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে একটি ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং কমিটিতে। তারা পুলিশের সঙ্গে সবরকম সহযোগিতা করবেন বলেও ইনস্টিটিউট জানিয়েছে। ছাত্রছাত্রী ও কর্মীদের মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়নে গঠিত হতে চলেছে একটি ওয়েলনেস অ্যান্ড ওয়েলফেয়ার কমিটি, যার চেয়ারম্যান থাকবেন একজন ডিন। ইতিমধ্যেই যে মাইন্ড কেয়ার ও ওয়েলনেস সেন্টার ক্যাম্পাসে রয়েছে তাকে আরও আধুনিক করে তোলা হবে বলে ওই বিবৃতিতে দাবি করেছে আইসার। নতুন কমিটি ক্যাম্পাসের সব পক্ষের মতামত নিয়ে এই ধরনের ঘটনার প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা প্রস্তাব করবে, যাতে ভবিষ্যতে এমন মর্মান্তিক ঘটনা এড়ানো যায় এবং জরুরি চ্যালেঞ্জগুলো চিহ্নিত করা যায়।

    গবেষক পড়ুয়ারা অবশ্য জানাচ্ছেন, এই তৎপরতা আগে দেখা গেলে হয়তো একটি প্রাণ অকালে ঝরে পড়ত না। কারণ ওই মৃত পড়ুয়া তাঁর ফেসবুক পোস্টে জানিয়েছেন, গত ১২ এপ্রিল তিনি তাঁর ইনস্টিটিউটের অ্যান্টি র‍্যাগিং সেলকে সব জানিয়ে অভিযোগ করেছিলেন। কিন্তু চার মাস বাদেও সেল কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। পরে জানা যায় পদমর্যাদাবলে ওই অ্যান্টি রাগিং সেলের চেয়ারপার্সন ছিলেন অভিযুক্ত সুপারভাইজারের স্বামী। এই ঘটনার পর ক্যাম্পাসে পড়ুয়াদের ব্যাপক ক্ষোভের আঁচ পেয়ে তিনি অবশ্য পদত্যাগ করেছেন।

  • Link to this news (এই সময়)