ফুটপাতবাসী ও ভবঘুরেদের সরাতে ‘স্থায়ী বন্দোবস্ত’ কলকাতা পুরসভার
বর্তমান | ১৩ আগস্ট ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ভবঘুরে ও ফুটপাতবাসীদের সরাতে কলকাতার বিভিন্ন এলাকায় পুলিসকে সঙ্গে নিয়ে ইতিমধ্যেই অভিযান চালিয়েছে কলকাতা পুরসভা। তবে এবার লাগাতার নজরদারি ও অভিযান চালাতে একটি ‘স্থায়ী ব্যবস্থা’ বা রেগুলার রুটিন তৈরির নির্দেশিকা জারি করল পুর কর্তৃপক্ষ। সেখানে বলা হয়েছে, পুলিসকে সঙ্গে নিয়ে ১০ দিন অন্তর অভিযান হবে। পাশাপাশি শহরের বিভিন্ন বাস যাত্রী প্রতীক্ষালয়, ফুটপাত ও সরকারি স্থানে নজরদারি চালিয়ে সাপ্তাহিক রিপোর্ট দিতেও বলা হয়েছে বিভিন্ন বিভাগকে।
এর আগেও শহরের চার জায়গায় অভিযান হয়েছে। সম্প্রতি দিন দশেক অন্তর অভিযান চালাতে সহযোগিতা চেয়ে পুলিসকে চিঠিও দিয়েছে পুরসভা। তার মধ্যেই গোটা প্রক্রিয়াটির জন্য একটি ‘স্থায়ী’ বন্দোবস্ত তৈরিতে নির্দেশিকা জারি করেছেন পুর কমিশনার ধবল জৈন। সেখানে বলা হয়েছে, পুরসভার সামাজিক সুরক্ষা বিভাগ একটি রোস্টার চালু করবে। ১০ দিন অন্তর অভিযান চালানো হবে। জঞ্জাল অপসারণ ও কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ ও স্থানীয় থানাকে সঙ্গে নিয়ে এই অভিযান চলবে। পাশাপাশি, বিজ্ঞাপন বিভাগ, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ নিয়মিত শহরের বাস শেল্টার, ফুটপাত ও সরকারি স্থানে নজরদারি চালিয়ে সাপ্তাহিক রিপোর্ট দেবে সামাজিক সুরক্ষা বিভাগকে। কোথায় কবে অভিযান হচ্ছে, সাপ্তাহিক রিপোর্ট কি থাকছে, সবটা মিলিয়ে ডেটাবেস করতে বলা হয়েছে সংশ্লিষ্ট সামাজিক সুরক্ষা বিভাগকে।
এর আগে মল্লিকবাজার, বালিগঞ্জ ফাঁড়ি থেকে গড়িয়াহাট, হাজরা মোড় থেকে গোপালনগর এবং পার্ক সার্কাস সেভেন পয়েন্ট ক্রসিং থেকে বেকবাগান, এই চার জায়গা থেকে ভবঘুরে এবং ফুটপাতবাসীদের সরিয়ে রাস্তা, ফুটপাত এবং ব্রিজের নীচের অংশ খালি করার পরিকল্পনা হয়েছিল। কিন্তু জিনিসপত্র তুলে নিয়ে যাওয়া হলেও তাঁদের সকলকে পুরোপুরি সরানো যায়নি। কেউ কেউ তখন পালিয়েও যান। কারও সঙ্গে পুলিস ও পুরসভার গণ্ডগোলও হয়।
ভবঘুরেদের সরিয়ে এলাকা খালি করতে এবং নতুন করে কেউ যাতে ফুটপাতে সংসার পাততে না পারেন তা নিশ্চিত করতে পুলিসি নজরদারি আরও কড়া হওয়া দরকার বলে মনে করে পুরসভা। এই মর্মে পুলিস কমিশনারকে ইতিমধ্যেই চিঠি পাঠিয়েছেন পুর-কমিশনার। তার পরিপ্রেক্ষিতে আগস্ট মাসজুড়ে অভিযানের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
শহরের বিভিন্ন রাস্তা, যাত্রী প্রতীক্ষালয়, ফুটপাত, ব্রিজের নীচে ভবঘুরে বা ফুটপাতবাসীদের আস্তানা তৈরি হয়েছে। প্লাস্টিকের ছাউনি করে বসবাস করেন তাঁরা। রাস্তার উপর চলে রান্নাবান্না। এসব জায়গায় অসামাজিক কাজকর্ম চলছে। তাছাড়া চোর, পকেটমার ঘাপটি মেরে গা ঢাকা দেয় বলেও অভিযোগ। তাই জায়গাগুলি খালি করে ভবঘুরে এবং ফুটপাতবাসীদের নাইট শেল্টারে পুনর্বাসনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুরসভা।