মানসিক ব্যাধিতে আক্রান্ত অভয়ার মা-বাবা! সাইকোথেরাপির পরামর্শ চিকিৎসক নারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের
প্রতিদিন | ১৩ আগস্ট ২০২৫
স্টাফ রিপোর্টার: শোকের আবহে নষ্ট হয়ে গিয়েছে মানসিক স্থিতিশীলতা। ঠিক থাকছে না কথার! একসময় একরকম ভাবছেন তো পরক্ষণেই অন্যরকম মেজাজ। এমন মানসিক অস্থিরতা, বিপর্যয়ের কারণে আরজিকরের মৃত তরুণী চিকিৎসকের মা-বাবাকে সমস্ত আন্দোলন থেকে সরে আসার পরামর্শ দিলেন সিপিএম মনোভাবাপন্ন চিকিৎসক নারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায়। আরজি করের পরবর্তী সময়ে একাধিক আন্দোলনে দেখা গিয়েছে নারায়ণবাবুকে। সেই সুবাদে অভয়ার মা-বাবাকে অত্যন্ত কাছ থেকে দেখেছেন তিনি। ইদানিং তাদের একাধিক বক্তব্য দেখে-শুনে নিশ্চিত নারায়ণবাবুর স্পষ্ট অভিমত, ‘‘পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিজঅর্ডারে ভুগছেন ওঁরা।’’
উল্লেখ্য সম্প্রতি বিজেপির ডাকা নবান্ন অভিযানে যোগ দিয়েছিলেন অভয়ার বাবা-মা। পুলিশ তাঁদের গায়ে হাত দিয়েছে বলে অভিযান শেষে বিস্ফোরক অভিযোগ করেন তাঁরা। যদিও তেমন কোনও ভিডিও অথবা ছবি প্রকাশ্যে আসেনি। তারই মধ্যে চিকিৎসক নারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায় এই অকপট উপদেশ ভাবাচ্ছে সকলকেই। তবে কি মিথ্যা বলছেন অভয়ার মা-বাবা? সেটাও এই মনের অসুখের জেরে? যদিও এতে তাঁদের দোষ দেখছেন না চিকিৎসক। বরং যে সমস্ত রাজনৈতিক দল তাঁদের জোর করে মিছিলে-মিটিংয়ে নিয়ে যাচ্ছেন তাঁদেরই বারণ করেছেন তিনি। ডা. নারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘এইরকম মনের অবস্থায় কোনও দলের অভয়ার মা-বাবাকে টেনে নিয়ে যাওয়া অমানবিক।’’
ঠিক কী হয়েছে অভয়ার মা-বাবার? ডা. নারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের জানিয়েছেন পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিজঅর্ডারে বা পিটিএসডিতে ভুগছেন মেয়েকে হারানো দম্পতি। এই অসুখের অন্যতম উপসর্গ, ‘‘অ্যরাউজাল অ্যান্ড রিঅ্যাক্টিভিটি সিম্পটম।” মনোবিদরা জানিয়েছেন, পিটিএসডি-তে আক্রান্তরা হঠাৎ হঠাৎ চমকে যান, আকস্মিক রাগে ফেটে পড়েন। ওই ব্যক্তির শুতে, খেতে, মনঃসংযোগ করতে কিংবা সাধারণ কাজকর্মে অসুবিধে হয়। একাধিকবার অভয়ার মার রাগের মাত্রা ছাড়িয়ে যেতে দেখা গিয়েছে। কখনও অভিযোগ করছেন, পাড়ায় কেউ আমাদের সঙ্গে কথা বলে না। এমন অভিযোগকে মনগড়া বলছেন মনোবিদরা। ডা. নারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিজঅর্ডারে ডিপ্রেশন চলে আসে। চিন্তা গ্রাস করে। ওর মাকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে ভীষণ মুড সুইং হচ্ছে। অভয়ার মা-বাবাকে এই কেস থেকে আপাতত সরিয়ে রাখা হোক। এর মধে্য আর ওঁদের না জড়ানোই ভালো। চিকিৎসকের পরামর্শ, এখন তাদের মেডিটেশন অথবা মনঃসংযোগ দরকার। প্রয়োজন সাইকোথেরাপির।