নির্যাতিতার পরিবারের ডাকা নবান্ন অভিযানকে কেন্দ্র করে ফের তুঙ্গে রাজনৈতিক তরজা। শনিবার বিজেপি নেতাদের সঙ্গে আন্দোলনে যোগ দেন নির্যাতিতার বাবা, মা। আন্দোলনের মাঝেই তৈরি হয় উত্তেজনার পরিস্থিতি। আহত হন নির্যাতিতার মা। এসবের মাঝেই এক সংবাদমাধ্যমে বিস্ফোরক অভিযোগ তোলেন নির্যাতিতার বাবা। তাঁর মন্তব্যের পরই তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ সরাসরি আইনি পদক্ষেপের বার্তা দেন। নিজের X হ্যান্ডেলে কুণাল ঘোষ লেখেন, 'আপনার প্রতি সম্মান, সহমর্মিতা রেখেই বলছি, সিবিআই নিয়ে আমাকে জড়িয়ে এইসব মিথ্যাচার হল ঠান্ডা মাথার অপরাধমূলক অপপ্রচার।'
মঙ্গলবার কুণাল ঘোষ তাঁর প্রথম X পোস্টে লেখেন, 'সিবিআই টাকা খেয়েছে। কুণাল ঘোষ গিয়ে সেটেলমেন্ট করেছে সিজিওতে', বললেন অভয়ার বাবা। মিথ্যাচার আর নাটকের সব সীমা পার করছেন উনি। কন্যাহারা পিতার যন্ত্রণা বুঝি। কিন্তু তাই বলে ওঁরা যাদের কথায় যা যা করছেন, যা যা বলছেন, সেসব নিয়ে প্রশ্ন তোলার অবকাশ থাকছে। এখানে এভাবে আমার নাম করে মিথ্যা অভিযোগ করলেন কার কথায়, কোন তথ্যে?'
এরপর তিনি আরও লেখেন, 'আমার নিজেরই দু'টো সিবিআই মামলা চলছে, আমি আইনের লড়াই করছি, আর আমি যাব অভয়া মামলা 'সেটল' করতে? আর সিবিআই এসব করবে? সবাই জানে সিবিআইকে নিয়ন্ত্রণ করে বিজেপি। উনি আবার তাদের সঙ্গে নবান্ন অভিযানে যান। আপনার প্রতি সম্মান, সহমর্মিতা রেখেই বলছি, সিবিআই নিয়ে আমাকে জড়িয়ে এইসব মিথ্যাচার হল ঠান্ডা মাথার অপরাধমূলক অপপ্রচার। আপনার কাছে এর কী তথ্য আছে অথবা কে আপনাকে এসব বলতে বলেছে, প্রকাশ করুন। যা ইচ্ছে বলে যাবেন, সেটা চলবে না।'
আইনি নোটিস পাঠালেন কুণাল ঘোষ
অন্য একটি X পোস্টে কুণাল ঘোষ লিখেছেন,
'অভয়ার বাবার প্রতি পূর্ণ সম্মান এবং সহমর্মিতা জানিয়েও বলছি, আজ ওঁনাকে আইনজীবীর নোটিস পাঠিয়েছি। আমার আইনজীবী অয়ন চক্রবর্তী চিঠি পাঠিয়েছেন। আশা করি কাল বা পরশু চিঠি পেয়ে যাবেন।'
তিনি বলেন, 'ওঁরা যা মুখে আসবে বলে যাবেন, যে যা শেখাবে তাই বলবেন, তা হতে পারে না। উনি ক্ষমা না চাইলে কোর্টে এসে যা বলেছেন তার প্রমাণ দিতে হবে। অয়ন ওঁকে চিঠি পাওয়ার পর ৪ দিন সময় দিয়েছে। তারপর মামলা করব।'
রাজনীতির আঁচ
আরজি কর মামলা নিয়ে একদিকে পরিবারের ক্ষোভ, অন্যদিকে কুণাল ঘোষের আইনি পদক্ষেপ, দুই পক্ষের অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগে ফের সরগরম রাজ্য রাজনীতি। বিজেপির সঙ্গে নির্যাতিতার পরিবারের নবান্ন অভিযানে অংশগ্রহণ, সিবিআই তদন্ত নিয়ে বিস্ফোরক অভিযোগ, আর তার জবাবে তৃণমূল নেতার পাল্টা চ্যালেঞ্জ, সব মিলিয়ে ক্রমশই চড়ছে রাজনৈতিক তাপমাত্রার পারদ। এই আইনি নোটিসের বিষয়টি এবার কোনদিকে এগোয়, এখন সেটাই দেখার।