উত্তরপাড়াজুড়ে পোস্টার, মোদির পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তোলা নিয়ে ‘সেটিং’ তত্ত্ব খারিজ কল্যাণের
প্রতিদিন | ১২ আগস্ট ২০২৫
সুমন করাতি, হুগলি: দলীয় সাংসদের সঙ্গে তর্কবিতর্কে জড়িয়ে এমনিতেই যথেষ্ট আলোচিত হয়েছেন। দলনেত্রীর উদ্দেশে সমালোচনামূলক বার্তা দিয়েও পরে অনুতাপ প্রকাশ করেছেন। দলের কর্তব্যে অবিচল থাকার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন। এত কিছুর পরও বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না শ্রীরামপুরের বর্ষীয়ান সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তাঁর বিরুদ্ধে এবার ‘সেটিং’ পোস্টার দেখা গেল উত্তরপাড়াজুড়ে। আসলে সোমবার প্রধানমন্ত্রী মোদির পাশে দাঁড়িয়ে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবিই এহেন পোস্টারের উৎস বলে মনে করা হচ্ছে। তবে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে মঙ্গলবারই এক্স হ্যান্ডলে দীর্ঘ পোস্ট করেছেন শ্রীরামপুরের সাংসদ। তাঁর দাবি, সংসদীয় কমিটির সদস্য হিসেবে কেন্দ্রের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করা কর্তব্য। আর সেই কাজটাই তিনি করেছেন। কল্যাণের আরও ব্যাখ্যা, দল এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি তাঁর আনুগত্য প্রশ্নহীন।
সোমবার দিল্লিতে বাবা খরক সিংহ মার্গে সাংসদদের জন্য নবনির্মিত আবাসনের উদ্বোধন অনুষ্ঠান ছিল। এদিন ১৮৪ টি ফ্ল্যাটের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। বিজেপির মন্ত্রী-সাংসদ, লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার সঙ্গে এদিন ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শ্রীরামপুরের তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে অন্যান্যদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন প্রধানমন্ত্রী। কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখোমুখি হয়ে স্মিত হেসে মোদি প্রশ্ন করেন, ‘সব কল্যাণ হ্যায়?’ তার জবাব দিয়ে কল্যাণ মোদির পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তোলেন। তা নিয়ে সমালোচনাও হয়।
এরপর মঙ্গলবার উত্তরপাড়া বিধানসভার কোন্নগর জুড়ে ‘সেটিং’ পোস্টার চোখে পড়ে। কীসের সেটিং, কেন সেটিং, বিজ্ঞাপন নাকি রাজনৈতিক কোনও ইঙ্গিতবাহী এসব পোস্টার, তা স্পস্ট নয়। সেটিং পোস্টারের দায় নেয়নি কেউ। তবুও সেই পোস্টার নিয়ে রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে। মোদির পাশে দাঁড়িয়ে কল্যাণের ছবি তোলাই যে এর মূল কারণ, তা বুঝতে বাকি নেই কারও। তবে এনিয়ে নিজের এক্স হ্যান্ডলে ব্যাখ্যা দিয়েছেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়।
সোমবার ঠিক কী কারণে তিনি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন, তা বিশদে জানিয়েছেন। বাবা খরগ সিং মার্গে সাংসদদের নতুন বাসভবনের উদ্বোধন সংক্রান্ত কাজে ব্যস্ত থাকায় তৃণমূল সাংসদদের সঙ্গে নির্বাচন কমিশন ঘেরাও কর্মসূচিতে থাকতে পারেননি বলে জানান শ্রীরামপুরের সাংসদ। এরপর তাঁর খোঁচা, ”আসলে আমি কোথাও কর্মসূচিতে না থাকলেই আমার বিরুদ্ধে নানা কথা বলা হয়। তাতেও অবশ্য কিছু যায় আসে না। কারণ, আমার নিজস্ব সততা, নিষ্ঠা আছে। আমি ১ লক্ষ ৭৫ হাজার ভোটে জিতেছি। দল ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি আমার আনুগত্য প্রশ্নহীন।”