বাঁকুড়ার সোনামুখীতে গুলি করে খুন করা হল তৃণমূল কংগ্রেসের এক বুথ কনভেনারকে। সোমবার রাত ৯টা নাগাদ সোনামুখী থানার অন্তর্গত চকাই গ্রামে এই ঘটনাটি ঘটে। নিহতের নাম সিকান্দার ওরফে সায়ন খাঁ (৪২)। এই খুনকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে তীব্র চাপানউতোর। এই ঘটনায় দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ধৃতদের নাম ইব্রাহিম শেখ ও খাসিম শেখ। আর কারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত? সেই বিষয় খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার সময় পখন্না বাজার থেকে বাইকে করে নিজের বাড়ি ফিরছিলেন সায়ন খাঁ। সেই সময় গ্রামে ঢোকার মুখে একটি সেচ খালের পাশে ওঁকে লক্ষ্য করে পরপর গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা। পিঠ ও মাথায় গুলি লাগলে ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়েন তিনি। পরে পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করে সোনামুখী গ্রামীণ হাসপাতালে পাঠায়। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
তৃণমূল কংগ্রেসের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সুব্রত দত্ত এই খুনের জন্য সিপিআইএম ও বিজেপিকে দায়ী করেছেন। তাঁর অভিযোগ, ‘আগামী বিধানসভা নির্বাচনে সোনামুখীতে বিজেপি নিশ্চিত পরাজয় বুঝে সিপিআইএম-এর সঙ্গে হাত মিলিয়ে আমাদের বুথ কনভেনারকে পরিকল্পিতভাবে খুন করেছে।’
মৃতের আত্মীয় সিন্টু শেখ বলেন, ‘বাড়ি আসার সময় গুলি করে খুন করা হয়েছে সিকান্দারকে। আমরা খবর পেয়ে গিয়ে দেখি বাইক থেকে ছিটকে দূরে পড়ে রয়েছে। তৃণমূল করত বলে গুলি করেছে সিপিএম ও বিজেপি। ভোটের ফলাফলে সবসময় আমরা লিডে থাকি। আর জামাইবাবু দলের হয়ে অনেক কাজ করত।’
অন্যদিকে, এই অভিযোগ নস্যাৎ করে সোনামুখীর বিজেপি বিধায়ক দিবাকর ঘরামী বলেন, ‘তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বই এই খুনের মূল কারণ। নিজেদের মধ্যে টাকার ভাগ-বাটোয়ারা নিয়েই এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।’ প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ২ মার্চও একই গ্রামে দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হন এক তৃণমূল নেতা। তার ছয় মাসের মধ্যেই ফের গুলিতে প্রাণ হারালেন আর এক নেতা।
পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। এই ঘটনায় দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ধৃতদের নাম ইব্রাহিম শেখ ও খাসিম শেখ। ওই এলাকায় একটি ড্রেন তৈরি নিয়ে নাসিম শেখ ও সিকান্দার খানের মধ্যে বিবাদ দেখা দিয়েছিল কয়েক মাস আগে। সেই বিবাদ থেকেই কি এই ঘটনা? তদন্ত করে দেখছেন তদন্তকারীরা। স্থানীয় প্রশাসনের তরফে এলাকায় বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণে রাখতে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার রাতে খুনের পরই নাসিম শেখ ও তাঁর পরিবার, আত্মীয়রা এলাকা ছেড়েছেন। পুলিশ তল্লাশি চালিয়ে ইব্রাহিম ও খাসিমকে পাকড়াও করে। বাকিদেরও খোঁজ চলছে। ঘটনার পর থেকে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে। অকুস্থল ঘিরে রাখা হয়েছে।