• ‘আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান’ শিবির পরিদর্শনে নামছেন মন্ত্রীরা
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ১২ আগস্ট ২০২৫
  • আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জনসংযোগ এবং প্রশাসনিক কার্যকারিতা বৃদ্ধিতে আরও এক ধাপ এগোল রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে শুরু হওয়া ‘আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান’ কর্মসূচিকে শক্তিশালী করতে এবার সরাসরি ময়দানে নামছেন রাজ্যের মন্ত্রীরা। সোমবার নবান্নে মন্ত্রিসভার বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দেন, রাজ্যের প্রতিটি জেলায় একজন করে মন্ত্রী শিবির পরিদর্শনের দায়িত্ব পালন করবেন।

    নবান্ন সূত্রে খবর, মন্ত্রীদের হাতে জেলাভিত্তিক দায়িত্বের তালিকা তুলে দেওয়া হয়েছে সিল করা খামে। প্রত্যেক মন্ত্রীকে প্রতি সপ্তাহে অন্তত একবার সংশ্লিষ্ট জেলায় গিয়ে শিবিরে উপস্থিত থাকতে হবে। শুধু উপস্থিতি নয়, শিবিরে জমা পড়া অভিযোগ, আবেদন ও পরামর্শগুলি দ্রুত সমাধানের ব্যবস্থা নিতে হবে বলেও জানানো হয়েছে। পাশাপাশি, স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে সমস্যা সমাধানে সমন্বয় সাধনের দায়িত্বও থাকবে তাঁদের কাঁধে।

    কোনও মন্ত্রীকেই তাঁর নিজের বিধানসভা কেন্দ্রের শিবির পরিদর্শনের দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। এর ফলে নিরপেক্ষতা বজায় থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে হুগলির শ্রীরামপুরে, বিদ্যুৎ মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস যাবেন হাওড়া সদরে, সেচ মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া দক্ষিণ কলকাতায়, পূর্ত মন্ত্রী পুলক রায় থাকবেন যাদবপুর ও ডায়মন্ড হারবারে।

    উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহ যাবেন বহরমপুরে, দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু থাকবেন তমলুকে, পঞ্চায়েত মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার কাঁথিতে, পর্যটন মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন যাবেন দমদম-বারাকপুরে, আইন মন্ত্রী মলয় ঘটক থাকবেন পশ্চিম মেদিনীপুরে এবং খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ মন্ত্রী অরূপ রায় যাবেন বনগাঁয়।

    সরকারি সূত্রের দাবি, এই উদ্যোগের প্রধান লক্ষ্য তিনটি – প্রশাসনিক গতিশীলতা বৃদ্ধি, তৃণমূল স্তরে প্রকৃত সমস্যার সঙ্গে মন্ত্রীদের পরিচয় এবং আসন্ন নির্বাচনের আগে জনসংযোগ মজবুত করা। এক মন্ত্রীর কথায়, ‘এই দায়িত্ব আমাদের কাছে এক সুযোগ। মানুষের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ এবং বাস্তব সমস্যা জানার মাধ্যমে আমরা আরও কার্যকর ভূমিকা নিতে পারব।’

    প্রশাসনিক বিশেষজ্ঞদের মতে, এই উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে ‘আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান’ প্রকল্পের উপর মানুষের আস্থা আরও বাড়বে। স্থানীয় স্তরে সমস্যার দ্রুত সমাধানও সম্ভব হবে। মুখ্যমন্ত্রীর কড়া বার্তা – শিবির পরিদর্শনের রিপোর্ট নিয়মিত নবান্নে জমা দিতে হবে। দায়িত্ব পালনে গাফিলতির ক্ষেত্রে তা নথিভুক্ত করে প্রয়োজনে ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

    সব মিলিয়ে, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা এই শিবিরগুলিতে এখন থেকে মন্ত্রীদের সরাসরি উপস্থিতি এবং তদারকিতে রাজ্যের জনমুখী প্রকল্পগুলি নতুন গতি পাবে বলেই আশাবাদী নবান্ন। প্রশাসন ও সাধারণ মানুষের মধ্যে দূরত্ব কমাতে এই পদক্ষেপ কতটা সফল হয়, সেদিকেই এখন নজর গোটা রাজ্যের।
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)