• ক্ষুদিরামকে নিয়েও ভাষাসন্ত্রাস, সরব মমতা
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ১২ আগস্ট ২০২৫
  • বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বসুর প্রয়াণ দিবসে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে একটি হিন্দি সিনেমার সমালোচনা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, সম্প্রতি ওই সিনেমায় ক্ষুদিরাম বসুকে ‘ক্ষুদিরাম সিং’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এই প্রসঙ্গে ফের একবার ভাষা সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি সিনেমার নাম উল্লেখ না করলেও বুঝতে অসুবিধে হয় না যে, তিনি অক্ষয় কুমার অভিনীত ‘কেশরী–২’ সিনেমার কথাই বলছেন। মমতার প্রশ্ন, ‘স্বাধীনতার জন্য যাঁরা জীবন দিয়েছেন তাঁদের অপমান করা হচ্ছে কেন? পথিকৃৎ অমর বিপ্লবী ক্ষুদিরামকে ধরেও টানাটানি করবে ভাষা-সন্ত্রাসীরা?’

    উল্লেখ্য, ১৯০৮ সালের ১১ আগস্ট মাত্র ১৮ বছর বয়সে ফাঁসি দেওয়া হয়েছিল স্বাধীনতা সংগ্রামী তথা বাংলার বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বসুকে। এদিন ক্ষুদিরামকে সশ্রদ্ধ প্রণাম জানিয়ে এক্স হ্যান্ডলে মমতা লেখেন, ‘একবার বিদায় দে মা ঘুরে আসি, হাসি হাসি পরব ফাঁসি দেখবে ভারতবাসী’। সেই পোস্টেই হিন্দি সিনেমায় বাংলার বিপ্লবীর নাম পরিবর্তনের প্রসঙ্গ তুলে সরব হন মমতা। তিনি লিখেছেন, মেদিনীপুরে অদম্য কিশোর ক্ষুদিরামকে দেখানো হয়েছে পাঞ্জাবের ছেলে হিসেবে। এই ঘটনা সহ্য করা যায় না।

    ক্ষুদিরাম বসুর স্মৃতি বিজরিত মেদিনীপুর জেলায় উন্নয়নের কিছু কয়েকটি খতিয়ান তুলে ধরেছেন মমতা। তিনি লেখেন, ক্ষুদিরাম বসুর জন্মস্মৃতি বিজড়িত মহাবনী ও সংলগ্ন অঞ্চলের উন্নয়নের জন্য মহাবনী ডেভেলপমেন্ট অথরিটি তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া মহাবনীতে শহিদ ক্ষুদিরামের মূর্তি স্থাপন, পাঠাগার সংস্কার, নতুন একটি সুবিশাল অডিটোরিয়াম ও কনফারেন্স রুম নির্মাণ করা হয়েছে। ক্ষুদিরামের স্মরণে একটি মুক্তমঞ্চও তৈরি করা হয়েছে। পাশাপাশি দর্শনার্থীদের জন্য নির্মিত হয়েছে আধুনিক কটেজ। ঐতিহ্যবাহী ক্ষুদিরাম পার্কের পুনরুজ্জীবন করা হয়েছে। গোটা এলাকাকে আলো দিয়ে সাজানো হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী আরও জানিয়েছে, শুধু মেদিনীপুরেই নয় ক্ষুদিরাম বসুকে শ্রদ্ধা জানাতে কলকাতার একটি মেট্রো স্টেশনের নামও তাঁর নামে রাখা হয়েছে।

    উল্লেখ্য, মুক্তির পরই বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছিল অক্ষয় কুমার অভিনীত কেশরী ২ সিনেমাটি। এই ছবিটি জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে তৈরি করা হয়। এই ছবিতে বাংলার বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বসু ও বারীন্দ্রকুমার ঘোষের নাম বদলে ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। সিনেমায় ক্ষুদিরাম বসুকে ‘ক্ষুদিরাম সিং’ এবং বারীন্দ্রকুমার ঘোষকে ‘বীরেন্দ্র কুমার’ বলে উল্লেখ করা হয়। তাঁদের বাংলার পরিবর্তে অমৃতসরের বাসিন্দা বলে দাবি করা হয়। সেই সময়ই এই ঘটনায় ফুঁসে উঠেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। সিনেমাটির বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগও দায়ের করা হয়েছিল। পথে নেমে প্রতিবাদ জানিয়েছিল একাধিক সংগঠন। এবার ক্ষুদিরাম বসুর প্রয়াণ দিবসে এই নিয়ে সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)