• সুগন্ধি ধানের চাষ বাঁচাতে প্রশাসনের উদ্যোগে বিনামূল্যে ‘গাছবীজ’ সরবরাহ
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ১২ আগস্ট ২০২৫
  • একটানা প্রায় দেড় মাসের বৃষ্টিতে এবার ধান চাষে অনেকটাই সমস্যা তৈরি হয়েছে। আর এ নিয়ে রাজ্যের শস্যগোলা পূর্ব বর্ধমানে চরম সংকটে চাষিরা। এই অবস্থায় চাষিদের সহায়তা করতে এগিয়ে এসেছে জেলা প্রশাসন। এ জেলার দক্ষিণ দামোদর লাগোয়া গ্রামগুলিতে সুগন্ধি ধানের চাষ বেশি হয়। গোবিন্দভোগ ধানের চাল রপ্তানি হয়।

    এবার প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে পূর্ব বর্ধমানের দক্ষিণ দামোদর লাগোয়া খণ্ডঘোষ ও রায়না ব্লকে। এই দুই ব্লকে গত এক দশকের বেশি সময় ধরে সুগন্ধি গোবিন্দভোগ ধানের চাষ বেশি হয়, যে ধানের চাল এখন বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। অতিবৃষ্টিতে দুই ব্লকেরই বিঘের পর বিঘে ধানের জমি জলের তলায় চলে গিয়েছে। বৃষ্টি কমলেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। ওই সব এলাকা ঘুরে দেখেছেন জেলাশাসক আয়েষা রানী এ, রাজ্যের কৃষিসচিব থেকে শুরু করে জনপ্রতিনিধিরা। আর তার পরেই জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের বিনামূল্যে ‘গাছবীজ’ দেবার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। খোদ জেলাশাসক এই উদ্যোগ নিয়েছেন।

    এ ব্যাপারে ওই এলাকার জনপ্রতিনিধি তথা জেলা পরিষদের অধ্যক্ষ অপার্থিব ইসলাম বলেন, এই প্রথম কৃষিপ্রধান এই জেলায় ‘গাছবীজ’ দেবার সিদ্ধান্ত নজীরবিহীন। জেলা প্রশাসনের তরফে এখানে যাঁদের গাছবীজ অর্থাৎ রোপণের আগে চারা বাড়তি আছে, তাঁদের কাছ থেকে তা কিনে নেওয়া হচ্ছে। সেই চারা বা ধানের গাছবীজ চাষিদের বিনামূল্যে দেওয়া হবে। ফলে চাষিরা সরাসরি জমিতে রোয়ার কাজ করতে পারবেন। কারণ বীজ ফেলে চারা তৈরি করার সময় পার হয়ে গেছে। খরচ-খরচা করে বীজ ফেলে চারা তৈরি করলেও সেই চারা পচে গেছে। গাছবীজ পেলে চাষিরা কিছুটা আর্থিকভাবে সহযোগিতা পাবেন।

    এরই মধ্যে সুগন্ধি ধানের বীজ সংগ্রহ এবং চাষিদের বিনামূল্যে দেওয়া নিয়ে জেলাশাসক জরুরি বৈঠকে বসেন। সেখানে ব্লকের আধিকারিক, পঞ্চায়েতের প্রধান, উপ-প্রধানদের ডাকা হয়। এদিকে জেলা প্রশাসনের তরফে জানানো হয় খণ্ডঘোষ, রায়না, মাধবডিহি সহ দক্ষিণ দামোদর এলাকায় প্রায় ৪৬ হাজার হেক্টর জমিতে সুগন্ধি ধানের চাষ হয়। আর খবর পাওয়া গিয়েছে, বেশিরভাগ চাষির হাতে নতুন করে চাষ করার জন্য বীজের অভাব। জেলাশাসক তাই যেসব চাষির কাছে গাছ-চারা আছে সেগুলি সংগ্রহ করার নির্দেশ দিয়েছেন। প্রয়োজনে চারা কিনে নেবার কথা বলা হয়েছে। অন্যদিকে যেসব জমিতে লালস্বর্ণ ধানের চাষ হয় সেই সব জমিতে আর নতুন করে চাষ সম্ভব নয়। এমনটাই জানানো হয়েছে কৃষিদপ্তরের পক্ষ থেকে। সে ক্ষেত্রে বিকল্প হিসাবে কলাই চাষের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এক্ষেত্রেও চাষিদের বীজ দেবার কথা ভাবা হয়েছে বলে প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে।
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)