বেলেঘাটাতেও 'ভুয়ো থানা'-ইন্টারপোল স্টিকারে তোলাবাজি, প্রাক্তন TMC নেতার আরও কীর্তি ফাঁস
আজ তক | ১২ আগস্ট ২০২৫
একের পর এক কুকীর্তি ফাঁস হচ্ছে নয়ডায় ভুয়ো থানা কাণ্ডে গ্রেফতার বীরভূমের বাসিন্দা বিভাস অধিকারীর। তদন্তে নেমে নয়ডা পুলিশ ফাঁস করেছে কলকাতার বুকে তার রমরমা দুর্নীতির কারবারির। জানা গিয়েছে, বেলেঘাটাতেও প্রতারণার ফাঁদ পেতে বসেছিল বিভাস ও তার ছেলে। তদন্তকারীদের দাবি, বাবা-ছেলে মিলে বেলেঘাটাতেও একটি নকল থানা খুলেছিল।
বেলেঘাটাতেও বিভাসের প্রতারণার ফাঁদ
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত জুলাই মাসে বেলেঘাটার সিআইটি রোডে একটি বাড়ির তিনতলাটি ভাড়া নেয় বিভাস। সেখানেই চলছিল 'ন্যাশনাল ব্যুরো অফ সোশ্যাল ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড জাস্টিস' নামে ফেক থানা। বড় হোর্ডিংয়ের আড়ালে আদতে চলত দুর্নীতির কারবার।
বেলেঘাটার এই বাড়িতে খোলা অফিসার কাচের দরজায় লাগানো ছিল 'US ইন্টারপোল' স্টিকার। সেই স্টিকার বিভাসের ছেলে নিজের গাড়িতেও ব্যবহার করত। সেই গাড়িতে চেপেই চোলাবাজির কারবার করত ছেলে।
স্থানীয় এক বাসিন্দার দাবি, কোমরে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে নিরাপত্তারক্ষীরা বেলেঘাটার ওই অফিস পাহারা দিত। বহু গাড়ির আসা-যাওয়া ছিল সেখানে। কিন্তু আচমকাই উধাও হয়ে যায় তারা। রাতারাতি খুলে ফেলা হয়েছিল সাইনবোর্ড।
বেলেঘাটার ওই বাড়ির মালিকের নাম অরুণ ঘোষ। মাসে ৪০ হাজার টাকা ভাড়া দিত বিভাস। ‘ন্যাশনাল ব্যুরো অফ সোশাল ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড সোশাল জাস্টিস’-এর নামে বিভিন্ন ব্যক্তিকে বিভাস অধিকারী নোটিস পাঠিয়ে তোলাবাজি করত বলেই জানিয়েছেন তদন্তকারীরা। বিভাসকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করছেন তদন্তকারীরা। তাকে জেরা করে আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সামনে আসবে বলে আশাবাদী তাঁরা।
‘ইন্টারন্যাশনাল পুলিশ অ্যান্ড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন’ লেখা সাইনবোর্ড লাগিয়ে নয়ডার সেক্টর ৭০ এলাকার বিএস-১৩৬ নম্বর ঠিকানায় ভুয়ো থানা খুলে বসেছিল বিভাস ও তার সঙ্গীরা। সেই ভুয়ো থানার পর্দাফাঁস করেছে নয়ডা পুলিশ। তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, কয়েকদিন আগেই কাজ শুরু করায় খুব বেশিদূর প্রতারণার জাল বিস্তার করতে পারেনি বিভাস অ্যান্ড কোং। www.intlpcrib.in ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ভুয়ো পরিচয়পত্র এবং নথি দেখিয়ে তোলাবাজির কারবার চলত। ধৃতরা দাবি করত, ব্রিটেনের তাদের অফিসের শাখা রয়েছে।
নিয়োগ দুর্নীতিতে যোগ
প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় যুব তৃণমূলের প্রাক্তন নেতা কুন্তল ঘোষ গ্রেফতার হওয়ার পরই এই বিভাস অধিকারীর নাম উঠে এসেছিল। সেই সূত্র ধরেই চলে তল্লাশি অভিযান। এক সময় বেসরকারি বিএড এবং ডিএলএড কলেজ সংগঠনের সভাপতি ছিল বিভাস। প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী এবং তৃণমূল বিধায়ক তথা প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠতা ছিল। আবার অনুব্রত মণ্ডলেরও খুব কাছের লোক বলে পরিচিত ছিল এলাকায়। তবে গোরু পাচার মামলায় কেষ্ট গ্রেফতার হওয়ার পর দলত্যাগ করে এই বিভাস। তারপর ‘অল ইন্ডিয়া আর্য মহাসভা’ নামে একটি নতুন দল তৈরি করেছিল।