নিজস্ব প্রতিনিধি, কেশপুর: শহিদ ক্ষুদিরাম বসুর আত্মবলিদান দিবসে শ্রদ্ধা জানাতে মোহবনী গ্রামে ভিড় উপচে পড়ল। এই গ্রাম বিপ্লবী ক্ষুদিরামের জন্মস্থান বলে পরিচিত। যদিও তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। সোমবার ওই গ্রামে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠান হয়। সেখানে জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদরি, রাজ্যের মন্ত্রী শিউলি সাহা, শ্রীকান্ত মাহাত, মহকুমা শাসক মধুমিতা মুখোপাধ্যায়, জেলা পরিষদের দলনেতা মহম্মদ রফিক সহ জেলা প্রশাসনের উচ্চপদস্থ আধিকারিক ও জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে স্কুলপড়ুয়াদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে মোহবনী ডেভেলপমেন্ট অথরিটির মাধ্যমে এলাকার উন্নয়নের জন্য ১০কোটি টাকা খরচ করে নানা প্রকল্পের রূপায়ণ করা হবে। সেই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এদিন বিধায়ক তথা তৃণমূলের ঘাটাল সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, শহিদ ক্ষুদিরাম বসু বাঙালি তথা দেশের গর্ব। স্বাধীনতা আন্দোলনে তাঁর অবদান ভোলার নয়। জেলা পরিষদের দলনেতা মহম্মদ রফিক বলেন, কংগ্রেস ও সিপিএমের আমলে কোনও মুখ্যমন্ত্রী ক্ষুদিরাম বসুকে সম্মান জানাতে পারেননি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেটা পেরেছেন। মোহবনী ডেভেলপমেন্ট অথরিটি নানা কাজ করছে। কোটি কোটি টাকার প্রকল্পের রূপায়ণ হওয়ায় মানুষ উপকৃত হচ্ছেন। এজন্য মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। কেশপুরের বিডিও কৌশিশ রায় বলেন, আশা করছি, খুব তাড়াতাড়ি আরও একাধিক প্রকল্পের কাজ শুরু হবে। এখানে পর্যটনশিল্পেরও বিকাশ হবে।
এই তরুণ বিপ্লবীর স্মৃতির সঙ্গে মেদিনীপুর জেলাবাসীর আবেগ জড়িত রয়েছে। তৎকালীন সময়ে প্রচলিত প্রথা অনুসারে, ক্ষুদিরামের মা লক্ষ্মীপ্রিয়া দেবী তিনমুঠো খুদের বিনিময়ে বড় মেয়ে অপরূপা দেবীর কাছে ছেলেকে বিক্রি করেছিলেন। একারণেই তাঁর নাম রাখা হয় ক্ষুদিরাম। মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুলের ছাত্র ক্ষুদিরাম ছোটবেলা থেকেই দেশপ্রেমিক ছিলেন। ১৯০৮খ্রিস্টাব্দের ১১ আগস্ট মাত্র ১৯বছর বয়সে তাঁর ফাঁসি হয়।
প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, কয়েকবছর আগে মোহবনী ডেভেলপমেন্ট অথরিটি তৈরি হয়। এই অথরিটির উদ্যোগে শিশু উদ্যান তৈরি, রাস্তা সংস্কার সহ একাধিক কাজ হয়েছে। উন্নয়নমূলক কাজের জন্য ২০২৩-’২৪ অর্থবর্ষে দু’কোটির বেশি টাকা বরাদ্দ হয়। পরের বছর সেই টাকার পরিমাণ বাড়িয়ে ন’ কোটি করা হয়। তৃণমূলের কেশপুর ব্লক সভাপতি প্রদ্যুৎ পাঁজা বলেন, এই এলাকায় প্রচুর কাজ হয়েছে। উন্নয়নই শেষ কথা।