• দিল্লিতে ধসে মৃতদের দেহ ফিরল গ্রামে, চোখের জলে শেষ বিদায় জানালেন বাসিন্দারা
    বর্তমান | ১২ আগস্ট ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বহরমপুর: মুর্শিদাবাদের নওদার গঙ্গাধারী জোড়তলা গ্রাম শোকে পাথর। সোমবার দুপুরে দিল্লি থেকে দেওয়াল ধসে মৃত চারজনের দেহ আসতেই কান্নার রোল ওঠে গ্রামে। কলকাতা বিমানবন্দর থেকে কফিনবন্দি দেহ জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে পৌঁছয় গ্রামে। 

    গত শনিবার অর্থাৎ ৯ আগস্ট, সকালে দিল্লির হরিনগরে দেওয়াল চাপা পড়ে মৃত্যু হয় ছ’ জনের। তাদের মধ্যে নওদার গঙ্গাধারী জোড়তলা গ্রামের একই পরিবারের চারজন। তাঁরা হলেন, রবিউল শেখ ও তাঁর মেয়ে রুকসানা খাতুন এবং রবিউলের ভাইয়ের বউ রুবিনা বিবি ও তাঁর এক মেয়ে। পরিযায়ী শ্রমিক দুই ভাই তাঁদের স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে দিল্লির হরিনগরে বাড়ি ভাড়া করে বাস করছিলেন। ফেরি করে সংসার চলত তাদের। কিন্তু ভারী বৃষ্টি ও জমা জলে পুরনো পাঁচিল ভেঙে পড়ে ঘটে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। চারজনের মৃত্যুর পাশাপাশি আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই পরিবারেরই হাসিবুল মণ্ডল। রবিবার জেলার দুই সাংসদ আবু তাহের খান ও খলিলুর রহমান তদারকি করে দিল্লি থেকে নিহত চারজনের দেহ ময়নাতদন্তের পর বাড়ির উদ্যেশ্যে পাঠিয়ে দেন। নিথর দেহ নিয়ে ফিরে আসেন মৃত শ্রমিক রবিউল মণ্ডলের স্ত্রী পরভিনা বিবি। স্বামী, সন্তানকে হারিয়ে শোকে পাথর তিনি। তাঁকে আগলে রাখতে হিমশিম খাচ্ছেন পরিবারের বাকিরা। 

    স্থানীয় মধুপুর পঞ্চায়েতের সদস্য মনিরুল শেখ বলেন, মৃতদের দেহ আজ বাড়িতে ফিরল। আমাদের সাংসদ দিল্লিতে থেকে পুরো ব্যাবস্থাপনা করে দেহ বাড়িতে ফিরিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী এবং সরকারকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। দিল্লিতে প্রচণ্ড বৃষ্টি হচ্ছিল। পুরানো পাঁচিল ভেঙে পড়ে। মোট ছ’ জন মারা যায়, তার মধ্যে চারজনই আমাদের এখানকার। স্থানীয় বাসিন্দা শাব্দুল শেখ বলেন, বিভিন্ন গ্রামের মানুষ বাইরে গিয়ে মার খাচ্ছে। নির্যাতন হচ্ছে পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর। সরকারের কাছে আবেদন এই রাজ্যে যেন এরা কাজ পায়। তাহলে এই ধরনের ঘটনা ঘটবে না। 

    বিডিও দেবাশিস সরকার বলেন, কলকাতা এয়ারপোর্ট থেকে অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। আমাদের প্রশাসনের প্রতিনিধিরা দেহ গ্রামে নিয়ে এসেছেন। সকাল ছ’টায় রওনা দিয়ে দুপুরের মধ্যে মৃতদের পরিবারের হাতে দেহ তুলে দেওয়া হয়। প্রশাসন সবসময় পাশে ছিল এবং আগামীতেও থাকবে। রাজ্যের নির্দেশ অনুসারে আমরা দেহ সুষ্ঠভাবে বাড়িতে পৌঁছনোর সবরকম ব্যবস্থা করতে পেরেছি। 

            শোকার্ত পরিবার। নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)