• ডাব বিক্রি করে চলে সংসার, কুড়িয়ে পাওয়া ২ লক্ষ টাকা ফেরালেন বহরমপুরের সনাতন
    বর্তমান | ১২ আগস্ট ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বহরমপুর: ডাব বিক্রি করে চলে সংসার। নুন আনতে পান্তা ফুরোয়। তিনিই ফিরিয়ে দিলেন টাকা ভর্তি ব্যাগ। এক দু’হাজার নয়, ব্যাগের মধ্যে ছিল প্রায় ১ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা। যা দেখে যে কারও মনের মধ্যে লোভ জন্ম নিতে পারে। ছিল রাতারাতি বড়লোক হওয়ার সুযোগও! কিন্তু, সেই রাস্তায় হাঁটেননি বহরমপুরের সনাতন হালদার। প্রকৃত ব্যক্তিকে ডেকে তিনি ওই ব্যাগ ফেরত দেন। যা ফিরে পেয়ে ব্যাগের মালিক পীযূষ মণ্ডল খুব খুশি। তিনি সনাতনবাবুর সততাকে কুর্নিশ জানান। শুধু পীযূষবাবু নন, ওই বাজারের অন্যান্য ব্যবসায়ীরাও সনাতনবাবুর ভূয়সী প্রশংসা করেন। 

    স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলেন, এতটা টাকা পেয়েও এমন মানসিকতা সবার থাকবে না। আমরা দেখছি, ৬০-ঊর্ধ্ব ওই ডাব বিক্রেতা বহুদিন ধরে এখানে ভ্যানে করে এনে ডাব বিক্রি করছেন। কখনও কারও সঙ্গে বাজে ব্যবহার করেন না। বরং নিজের প্রয়োজনের অর্থ হয়ে গেলে উনি অনেককেই খুব অল্পদামে ডাব খাওয়ান। এদিনের ঘটনা প্রমাণ করে দিল তাঁর কোনও লোভ নেই। আজকের দিনে এমন মানুষ সত্যিই পাওয়া খুব মুশকিল।

    সোমবার দুপুরে চুয়াপুর মোড় সংলগ্ন এলাকায় একটি গোলাপি রঙের ব্যাগ কুড়িয়ে পান ডাব বিক্রেতা সনাতনবাবু। ব্যাগটিতে এক লক্ষ টাকার একটি চেক ও নগদ ৯০ হাজার টাকা ছিল। চেকে লেখা নাম দেখে তিনি জানতে পারেন, তা পীযূষ মণ্ডলের। তাঁকে ফোন করে ডেকে তিনি ওই টাকা ফেরত দেন।

    সনাতনবাবু বলেন, ব্যাগটা দেখতে পেয়ে আমি তুলে নিই। দেখি, ওতে অনেক টাকা রয়েছে। চেকে লেখা নাম ও ফোন নম্বর দেখে ডেকে পাঠাই। ওই ব্যক্তির হাতে টাকা তুলে দিলাম।

    তিনি আরও বলেন, পরের টাকা সেটা যতই হোক না কেন, আমি কেন নেব? আমি ওই টাকা নিয়ে নিলেও কোনও লাভ হতো না। বরং পরে ক্ষতি হয়ে যেত। ডাব বিক্রি করেই আমার ভালোভাবে সংসার চলে। কখনও লোভ করিনি। 

    টাকা ও চেকবুক ফেরত দিতে পেরে আমি খুবই খুশি। নিজের ব্যাগ ফেরত পাওয়ার পর পীযূষবাবু বলেন, ব্যাগটা হারিয়ে ফেলেছিলাম। অত টাকা ফিরে পাব ভাবিনি। সনাতনবাবুদের মতো ভালো মানুষ আছে বলে আজ আমি রক্ষা পেলাম। উনি মহৎ মানুষ। তাঁর এই উপকার আজীবন মনে রাখব।  নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)