• গঙ্গা-দামোদরে কানায় কানায় জল, প্রতিমা গড়তে মিলছে না পলিমাটি
    বর্তমান | ১২ আগস্ট ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, আসানসোল: বাঙালির প্রাণের পুজো দুর্গোৎসব শুরু হতে ৫০ দিনও নেই। বিগ বাজেটের পুজো মণ্ডপগুলিতে ব্যস্ততা আগেই শুরু হয়ে গিয়েছে। অনেক জায়গায় মণ্ডপের কাঠামোও তৈরি হয়ে গিয়েছে। শিল্পাঞ্চলের কুমোরটুলিগুলিতে এখন ব্যস্ততা তুঙ্গে। দিন রাত প্রতিমা গড়ার কাজ চলছে। আর এখানেই বেঁধেছে বিপত্তি। একে টানা বৃষ্টিপাতের জেরে প্রতিমা শুকাতে হিমশিম অবস্থা। তার উপর মাটি পাওয়া যাচ্ছে না। আসানসোল, দুর্গাপুরের ‘কুমোরটুলি’গুলিতে মূলত মাটি আসে কাটোয়া, কালনার গঙ্গামাটি। বর্তমানে গঙ্গা কানায় কানায় পূর্ণ হওয়ায় মাটি পাওয়া যাচ্ছে না। দামোদরে মাটি দিয়ে যে ম্যানেজ করা হবে তারও উপায় নেই। জানা গিয়েছে, এখন এক লরি মাটির দাম প্রায় ৫৫ হাজার টাকা। যা দেওয়ার সাধ্য নেই বহু মৃৎশিল্পীরই।

    দুর্গাপুরের বেনাচিতি বাজারের অরুণ পাল। বিখ্যাত এই মৃৎশিল্পী স্টিল সিটির অধিকাংশ বিগ বাজেটের পুজোর মূর্তি গড়েন। তার হাতে মা জীবন্ত হয়ে ওঠেন। তিনি জানালেন সমস্যার কথা। তিনি বলেন, আমরা বেশি পরিমাণ মাটি বৈশাখ মাসেই কিনে রাখি। কিন্তু, এই সময়েও হঠাৎ মাটির প্রয়োজন হয়। আমারই এক লরি মাটির প্রয়োজন। দাম বলছে, ৫৫ হাজার টাকা। এত দাম দিয়ে ছোট মৃৎশিল্পীরা কী করে মাটি কিনবে। তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী পুজোর জন্য‌ এত টাকা বরাদ্দ করছেন। উনি যদি মৃৎশিল্পীদের সস্তায় মাটি দেওয়ার ব্যবস্থা করেন খুব ভালো হয়। তবে দেখতে হবে মৃৎশিল্পীর নামে অন্য কোথাও ওই মাটি চলে না যায়।

    আসানসোলের কুমোরটুলি হল মহিশীলা কলোনি। সেখানে শিল্পীদের নাওয়া খাওয়া মাথায় উঠেছে। আসানসোলের বৃষ্টি যেন থামছেই না। এই অবস্থায় মূর্তি শুকাবে কী করে? মৃৎশিল্পী অভিজিৎ রুদ্রপাল বলেন, মাটির দাম প্রতি বছর বাড়ছে। গত বছর এক লরি মাটি কিনেছি ৩২ হাজার টাকায়। এবছর সেই মাটি কিনেছি ৩৯ হাজার টাকায়। বৈশাখ মাসেই মাটির এই দাম ছিল। এখনও আর মাটি কেনাই যাবে না। সোলার সামগ্রীর দাম বেড়ে গিয়েছে। অথচ পুজো কমিটি গুলি প্রতিমার দাম বাড়াচ্ছে না। অন্যান্য বছরের তুলনায় পুজো এবার একটু আগেই শুরু হচ্ছে। সেপ্টেম্বর মাসেই দুর্গাপুজো শুরু। স্বাভাবিকভাবে তার আগে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। এর পাশাপাশি এবার শিল্পাঞ্চলজুড়ে ব্যাপক বৃষ্টি হয়েছে। শুধু শিল্পাঞ্চল নয়, সারা দেশেই এবছর বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বেশি। যার ফলে নদীগুলি কানায় কানায় পূর্ণ। তাই আপৎকালীন মাটি জোগাড় করতে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন শিল্পীরা। 
  • Link to this news (বর্তমান)