নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: গত সাড়ে তিন মাস ধরে লুকোচুরির পর অবশেষে ধরা পড়ল এলাকার ‘ত্রাস’। সোমবার সকালে জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের ভান্ডিগুড়ি চা বাগানে খাঁচাবন্দি হয় পূর্ণবয়স্ক একটি চিতাবাঘ।
গত ১৯ এপ্রিল সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ ভান্ডিগুড়ি চা বাগানের ৬০ নম্বর সেকশনে কীটনাশক স্প্রে করছিলেন বছর চল্লিশের ঝুটুং ওরাওঁ। সেসময় ঝোপের আড়ালে লুকিয়ে থাকা পেল্লাই সাইজের একটি চিতাবাঘ ঝাঁপিয়ে পড়ে তাঁর উপর। আচমকা চিতাবাঘের হামলায় খানিকটা ঘাবড়ে যান ওই শ্রমিক। কিন্তু হাল ছাড়েননি তিনি। কয়েক মিনিট ধরে রীতিমতো চিতাবাঘের সঙ্গে লড়াই চলে ওই শ্রমিকের। পাশেই বাগানের অন্য সেকশনে তখন পাতা তোলার কাজ চলছিল। ঘটনাটি টের পেতেই চিৎকার করে ওঠেন বাকি শ্রমিকরা। এরপরই চিতাবাঘটি ঝুটুংকে ছেড়ে দিয়ে বাগানের ঝোপের মধ্যে লুকিয়ে পড়ে। হামলায় মারাত্মকভাবে জখম হন ওই চা শ্রমিক। তাঁর গলায় থাবা বসিয়ে মাংস খুবলে নেয় চিতাবাঘ।
এরপর থেকে ওই এলাকায় চিতাবাঘের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। কয়েকদিন চা বাগানে ঠিকমতো কাজ হয়নি। রাত জেগে পাহারা দিতে থাকেন শ্রমিকরা। তাঁদের দাবি, মাঝেমধ্যে এলাকায় চিতাবাঘের উপস্থিতি টের পাচ্ছিলেন তাঁরা। কখনও তল্লাটে চিতাবাঘের পায়ের ছাপ মিলছিল। কখনও সশরীরে উপস্থিতি জানান দিচ্ছিল সে। আর এতেই ভয় বাড়ছিল এলাকাবাসীর মনে। বাগানে খাঁচা পাতা থাকলেও তাতে ধরা পড়ছিল না চিতাবাঘ।
অবশেষে ভান্ডিগুড়ি চা বাগানে পেতে রাখা খাঁচায় রবিবার রাতে ধরা পড়ে চিতাবাঘ। সেই খবর চাউর হতেই এদিন সকাল থেকে খাঁচাবন্দি চিতাবাঘ দেখতে ভিড় জমান শ্রমিকরা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান বনকর্মীরা। তাঁরা খাঁচাবন্দি চিতাবাঘটিকে উদ্ধার করে নিয়ে যান। স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর সেটিকে বৈকুণ্ঠপুরের জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হয় বলে বনদপ্তর সূত্রে খবর। নিজস্ব চিত্র।