• বাঁধে বালির বস্তা ফেলে রক্ষা বাসিন্দাদের, ফুলহার-কালিন্দীর যৌথ ‘হানা’য় দিশেহারা নাজিরপুরের ৫টি গ্রাম
    বর্তমান | ১২ আগস্ট ২০২৫
  • সংবাদদাতা, মানিকচক: বর্ষায় উত্তাল ফুলহার ও কালিন্দী নদীর মাঝে পড়ে দিশেহারা মানিকচকের নাজিরপুরের পাঁচটি গ্রাম। রবিবার রাতে লস্করপুর গ্রামে কালিন্দীর জল প্রবেশ করায় আতঙ্কিত বাসিন্দারা। অন্যদিকে লক্ষ্মীকোলে বাঁধের ফাটল দিয়ে ফুলহারের জল গ্রামে ঢুকছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, পরিস্থিতি সামাল দিতে কোনও ব্যবস্থাই করছে না প্রশাসন।

    মালদহ জেলার মানিকচক ব্লকের নাজিরপুরের হাহাজান ঘাট পেরলেই পাঁচটি গ্রাম। যার মধ্যে হরিপুর, লস্করপুর, মহম্মদপুর, লক্ষ্মীকোল- এই গ্রামগুলি মানিকচক ব্লক ও আটগামা বলরামপুর গ্রামটি রতুয়া-১ ব্লকের অন্তর্গত। এই পাঁচটি গ্রামকে ঘিরে রয়েছে ফুলহার ও কালিন্দী নদী। কয়েকদিন ধরেই বাড়ছে ফুলহারের জলস্তর, জারি হয়েছে হলুদ সতর্কতা। এবার চোখ রাঙাচ্ছে কালিন্দী। ইতিমধ্যেই লস্করপুর, মহম্মদপুর ও আটগামা বলরামপুরের ফসলি জমি জলমগ্ন। তার মধ্যেই রবিবার গভীর রাতে লস্করপুর কালীমন্দির সংলগ্ন বাঁধের একাংশ দিয়ে জল ঢুকতে শুরু করে। খবর পেয়ে গ্রামবাসীরা তড়িঘড়ি ছুটে যান ঘটনাস্থলে। পৌঁছন নাজিরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান দেবাশিস মণ্ডল। সকলের তৎপরতায় বালির বস্তার মাধ্যমে সেই জল আটকানোর ব্যবস্থা করা হয়। সোমবার বিষয়টি মানিকচক ব্লক প্রশাসন এবং সেচদপ্তরের আধিকারিকদের জানানো হয়। তবে, দুপুর গড়ালেও কাজ শুরু করেনি প্রশাসন।

    ঠিক একইভাবে লক্ষ্মীকোল ও হরিপুর গ্রামে প্রবেশ করেছে ফুলহারের জল। বাড়িঘর থেকে শুরু করে ফসলি জমি জলমগ্ন। তার উপর বাঁধের বিভিন্ন জায়গায় ইঁদুর গর্ত করে দেওয়ায় তা দিয়ে জল ঢুকছে সংরক্ষিত এলাকায়। তবে, সেচদপ্তর বালির বস্তা দিয়ে মেরামতির কাজ শুরু করেছে। কিন্তু এভাবে প্রতিনিয়ত জল বাড়লে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা স্থানীয়দের। 

    নাজিরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান বলেন, এলাকার পরিস্থিতি সত্যিই খারাপ। পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছি। তবে সেচদপ্তর উদ্যোগ না নিলে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হবে। বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কায় বাসিন্দারা আতঙ্কে রয়েছেন।

    সোমবার লস্করপুর গ্রামের অবস্থা পরিদর্শনে গিয়ে সেচদপ্তর ও প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন মালদহ জেলা বামনেতা দেবজ্যোতি সিনহা। তিনি বলেন, নজরদারির অভাবে এই পরিস্থিতি। সেচদপ্তর নজরদারি করলে বাঁধের ছিদ্র আগাম সংস্কার করা হতো, লস্করপুরে বাঁধ তৈরি হতো। কিন্তু কিছুই হচ্ছে না, শুধু ভূতনি গোপালপুরে ভাঙনের নামে টাকা লুট করা হচ্ছে। এই সমস্ত কিছুর পিছনে রয়েছেন একাংশ জনপ্রতিনিধি। 

    যদিও পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে এবং নজরদারি চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মালদহ জেলা সেচদপ্তরের আধিকারিক শিবনাথ গঙ্গোপাধ্যায়।  নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)