ইঁদুর থেকে ছড়ানো লেপ্টোস্পাইরা রোগ নিয়ে আতঙ্কিত রাজগঞ্জবাসী
বর্তমান | ১২ আগস্ট ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি ও সংবাদদাতা, রাজগঞ্জ: লেপ্টোস্পাইরা রোগ নিয়ে রাজগঞ্জে আতঙ্ক বাড়ছে। ওই ব্লকের সন্ন্যাসীকাটা পঞ্চায়েতের চেকরমারি গ্রামে অনেকেই এই রোগে আক্রান্ত বলে অভিযোগ। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, লেপ্টোস্পাইরা রোগে আক্রান্ত হলে জ্বর থাকবে। সঙ্গে মাথাব্যথা থাকতে পারে। শরীর দুর্বল লাগবে। জন্ডিসের মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে। কোনওক্ষেত্রে কনজাংটিভাইটিসের মতো চোখ লাল হতে পারে।
আচমকা কীভাবে এমন রোগ ছড়াল, তা ভেবে পাচ্ছেন না স্থানীয়রা। তবে সন্ন্যাসীকাটা অঞ্চলে একটি পোল্ট্রিফার্ম রয়েছে। সেই ফার্মে জমে থাকা মুরগির বিষ্ঠার কারণে ওই এলাকায় কিছুদিন আগে মাছির মারাত্মক উপদ্রব হয়েছিল। মাছির হাত থেকে রেহাই পেতে মশারির ভিতর বসে খাওয়াদাওয়া সারতে হচ্ছিল এলাকার কয়েকটি গ্রামের মানুষকে। মাছি থেকে কোনওভাবে ওই রোগ ছড়াল কি না, তা নিয়েও সন্দেহ দানা বেঁধেছে বাসিন্দাদের মনে। এরইমধ্যে চেকরমারি গ্রামের বাসিন্দা এক মহিলার মৃত্যুতে উদ্বেগ বেড়েছে। ওই মহিলা জ্বরে আক্রান্ত ছিলেন বলে দাবি স্থানীয়দের। তাঁর ছেলেও লেপ্টোস্পাইরার উপসর্গ নিয়ে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন।
জলপাইগুড়ি জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অসীম হালদার সোমবার বলেন, ইঁদুরের মূত্র থেকে মূলত লেপ্টোস্পাইরা রোগ ছড়ায়। তবে এলাকার পোল্ট্রিফার্ম থেকে কোনওভাবে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে কি না, সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আগে যখন ওই এলাকায় মাছির উপদ্রব হয়েছিল, সেই সময় স্প্রে করা হয়। সন্ন্যাসীকাটা পঞ্চায়েতের প্রধান রুবা খানমের স্বামী রৌশন হাবিব বলেন, কোথা থেকে সংক্রমণ ছড়াল বুঝতে পারছি না। এদিন এলাকার পোল্ট্রিফার্ম থেকে মুরগির বিষ্ঠার নমুনা সংগ্রহ করেছে প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন দপ্তর। রিপোর্ট এলে বোঝা যাবে। লেপ্টোস্পাইরার পাশাপাশি চেকরমারি ও পাশের পেলকুগছ ও গিরানগছ গ্রামের বেশকিছু বাসিন্দা হেপাটাইটিস ‘এ’, হেপাটাইটিস ‘ই’তে আক্রান্ত। এনিয়ে মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, মূলত দূষিত জল থেকে হেপাটাইটিস ‘এ’ ছড়ায়। সেক্ষেত্রে ওই গ্রামে পানীয় জল কোনওভাবে সংক্রামিত হয়েছে কি না, দেখা হচ্ছে। তাঁর দাবি, এলাকায় অস্থায়ী মেডিক্যাল ক্যাম্প বসানো হয়েছে। আক্রান্তের খোঁজ মিললে সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা শুরু করা হচ্ছে। এদিন আক্রান্ত গ্রামে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে আসেন রাজগঞ্জের বিধায়ক খগেশ্বর রায়। সঙ্গে ছিলেন রাজগঞ্জের ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক রাহুল রায়। বিএমওএইচ বলেন, জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তর পানীয়জলের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠিয়েছে। বিধায়ক খগেশ্বর রায় বলেন, কীভাবে লেপ্টোস্পাইরা ও হেপাটাইটিস ‘এ’ ছড়াল, খতিয়ে দেখছে স্বাস্থ্যদপ্তর। আক্রান্ত এলাকায় গিয়ে বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেছি। সংক্রমণ রুখতে স্বাস্থ্যদপ্তর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে। আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই।