• নামতে নামতে ১৩৩ নম্বরে, ৯ বছরে সবচেয়ে নীচে ভারতীয় ফুটবল! ফিফার ঘাড়ে দায় ঠেললেন ফেডারেশন সভাপতি কল্যাণ
    আনন্দবাজার | ১১ আগস্ট ২০২৫
  • ক্রমশ খারাপ হচ্ছে ভারতীয় ফুটবলের অবস্থা। ফিফা ক্রমতালিকায় নেমেই চলেছে তারা। নামতে নামতে এখন ভারত ১৩৩ নম্বরে। গত ৯ বছরে ফিফা ক্রমতালিকায় সবচেয়ে নীচে নেমেছে ভারতীয় ফুটবল। এর দায় কার? সর্বভারতীয় ফুটবল সংস্থার (এআইএফএফ) সভাপতি কল্যাণ চৌবে দায় ঠেলেছেন ফিফার ঘাড়েই। তাঁর মতে, ফিফার নীতির কারণেই নাকি ক্রমতালিকায় পিছিয়ে যাচ্ছে ভারত।

    ক্রমতালিকায় কোন দল কোথায় থাকবে তা ঠিক হয় ‘এলো’ মডেলের ভিত্তিতে। সেখানে শুধু বর্তমান নয়, প্রতিটা দলের অতীতের পারফরম্যান্সও খতিয়ে দেখা হয়। পাশাপাশি যে দলের বিরুদ্ধে খেলা হচ্ছে, সেই দলের র‌্যাঙ্কিংও গুরুত্ব পায়। এই পদ্ধতিকেই দায়ী করেছেন কল্যাণ। তিনি বলেন, “ফিফা র‌্যাঙ্কিং ঠিক করার সময় কোনও দলের অতীতের পারফরম্যান্সও দেখা হচ্ছে। এই পদ্ধতিতে পয়েন্ট যোগ-বিয়োগ হচ্ছে। কোনও দল কতগুলো ম্যাচ খেলল, কার কার বিরুদ্ধে খেলল, তাদের র‌্যাঙ্কিং কোথায়, সব দেখা হচ্ছে। তাই আমরা নামছি। আমি যখন দায়িত্ব নিয়েছিলাম তখন ভারত ছিল ৯৯ নম্বরে। দু’বছরে আমরা ১৩৩ নম্বরে নেমে গিয়েছি।”

    কল্যাণের দায়িত্ব নেওয়ার পর ২০২৩ সালে অস্ট্রেলিয়া, উজবেকিস্তান, সিরিয়ার মতো শক্তিশালী দলের বিরুদ্ধে হেরেছিল ভারত। সেই হার ভারতকে বড় ধাক্কা দিয়েছে। শক্তিশালী দলকে হারাতে পারলে বা ড্র করলে যেমন পয়েন্ট অনেকটা বাড়ে, তেমনই তাদের কাছে হারলে পয়েন্ট অনেক কমে। সেই ধাক্কা খেয়েছে ভারত। পাশাপাশি মানোলো মার্কেজ় কোচ থাকাকালীন গত দু’বছরে আটটা আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলে একটাও জিততে পারেনি ভারত। তারও প্রভাব পড়েছে। ফলে পয়েন্ট তালিকায় পতন হয়েছে সুনীল ছেত্রীদের।

    সর্বভারতীয় ফুটবল সংস্থার সভাপতি জানিয়েছেন, ফিফা প্রথম ক্রমতালিকা প্রকাশের পর থেকে ভারতীয় ফুটবলের উত্থান-পতন হয়েছে। একমুখী গ্রাফ কখনও দেখা যায়নি। তিনি বলেন, “১৯৯২ সালের ডিসেম্বরে যখন ফিফা প্রথম ক্রমতালিকা প্রকাশ করেছিল, তখন ভারতের র‌্যাঙ্কিং ছিল ১৪৩। সেখান থেকে ১৯৯৬ সালে আমরা ৯৪ নম্বরে উঠেছিলাম। আবার ২০১৫ সালে ১৭৩ নম্বরে নেমে গিয়েছিল। তার তিন বছর পর আবার ৯৭-এ উঠেছিলাম। এই ছবিটা বুঝিয়ে দিচ্ছে, আমাদের উত্থান-পতন হয়েছে।”

    এই প্রসঙ্গে আইএসএল-সহ ভারতের ঘরোয়া লিগগুলোকেও নিশানা করেছেন কল্যাণ। তাঁর মতে, পরিকাঠামো-সহ বিভিন্ন দিকে উন্নতি করলেও তার ফল পাওয়া যায়নি। তিনি বলেন, “গত ১০ বছরে ভারতের ঘরোয়া ফুটবলের উন্নতি হয়েছে। ভাল স্টেডিয়াম তৈরি হয়েছে। পেশাদার ক্লাব তৈরি হয়েছে। বেতন বেড়েছে। আইএসএল এখন এশিয়ার সেরা লিগগুলোর মধ্যে একটা। কিন্তু লাভ কী হয়েছে? তার প্রভাব তো জাতীয় দলের খেলায় চোখে পড়ছে না। সেটাই চিন্তার কারণ।”

    ভারতীয় ফুটবলে ডামাডোল তৈরি হয়েছে। আগামী মরসুমে আইএসএল হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। লিগের ক্লাবগুলোর সঙ্গে বৈঠক করেও কোনও সমাধান বার করতে পারেনি এআইএফএফ। বাইচুং ভুটিয়ার মতো প্রাক্তন ফুটবলার ক্রমাগত কল্যাণ-সহ ফুটবলকর্তাদের নিশানা করছেন। কয়েক দিন আগে ভারতীয় ফুটবলের কোচ বদল হয়েছে। খালিদ জামিলকে দেওয়া হয়েছে দায়িত্ব। এখন দেখার খালিদের হাত ধরে কল্যাণের মুখে হাসি ফোটে কি না।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)