• বেলেঘাটাতেও বিভাসের নকল থানা! দুর্নীতির শিকড়ের খোঁজে মরিয়া তদন্তকারীরা
    প্রতিদিন | ১২ আগস্ট ২০২৫
  • অর্ণব আইচ: নকল থানা তৈরির অভিযোগে ধৃত বিভাস অধিকারীর দুর্নীতির আরও পর্দাফাঁস। বেলেঘাটাতেও ছড়িয়ে রয়েছে তাঁর দুর্নীতির শিকড়। তদন্তকারীদের দাবি, সেখানেও নকল থানা খুলে প্রতারণার জাল বিছিয়েছিলেন বিভাস ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা। 

    গত জুলাইয়ের প্রথমে বেলেঘাটার সিআইটি রোডে একটি বাড়ির তিনতলা ভাড়া নেন বিভাস। বেলেঘাটার বাড়ির তিনতলায় ‘ন‌্যাশনাল ব্যুরো অফ সোশাল ইনভেস্টিগেশন অ‌্যান্ড সোশাল জাস্টিস’-এর নামে বড় হোর্ডিং লাগানো হয়। আবার ভিতরে কাচের দরজায় রয়েছে ‘ইউএসএ ইন্টারপোল’ স্টিকার। এ ছাড়াও দরজায় ছিল ‘পুলিশ’ স্টিকার। অফিসের ভিতরে পর পর রয়েছে ‘ইন্টারন‌্যাশনাল পুলিশ’-এর স্টিকার ও হোর্ডিং। মাঝেমধ্যেই সেখানে নীল-লাল বাতি লাগানো গাড়ি ঢুকতেন। তিন-চারজন বাউন্সার তথা নিরাপত্তারক্ষী নীল পোশাক পরে কোমরে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে পাহারা দিতেন। এক বাসিন্দার দাবি, গ্রেপ্তারের আগের রাতে নিরাপত্তারক্ষীদের খাবার নিয়ে ঢুকতে দেখা যায়। এরপর রাতারাতি তাঁরা উধাও হয়ে যান এবং সাইনবোর্ড খুলে ফেলা হয়।

    স্থানীয়দের অভিযোগ, বিভাস অধিকারী বেলেঘাটায় যে ফ্ল্যাটটি ভাড়া নিয়েছিলেন, তার মালিক অরুণ ঘোষ। মাসে ৪০ হাজার টাকা ভাড়া নিতেন। তবে ফ্ল‌্যাট মালিকের দাবি, “মাসখানেক আগে অফিসের কথা বলে ভাড়া নিয়েছিল। পুলিশের কিছু কাজের কথাও বলেছিল। ১১ মাসের চুক্তি ছিল, বাকিটা জানি না।” ‘ন‌্যাশনাল ব্যুরো অফ সোশাল ইনভেস্টিগেশন অ‌্যান্ড সোশাল জাস্টিস’-এর নামে বিভিন্ন ব‌্যক্তিকে বিভাস অধিকারী নোটিস পাঠিয়ে তোলাবাজি করতেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। কতজনের কাছ থেকে তিনি ও তাঁর লোকেরা তোলাবাজি করতেন, তা খতিয়ে দেখে হচ্ছে।

    লালবাজারের সূত্র জানিয়েছে, কিছুদিন আগে ওই হোর্ডিং ঘিরে এলাকার কিছু বাসিন্দা প্রতিবাদ করেন। তাঁরা সন্দেহের বশে পুলিশকে জানান। গত ৩০ জুলাই পুলিশ ওই হোর্ডিং তুলে দেয়। তখনই এক আইনজীবী বেলেঘাটা থানায় গিয়ে এই ব‌্যাপারে পুলিশের বিরুদ্ধেই অভিযোগ জানাতে যান। পুলিশের পক্ষে তাঁকে ওই সংস্থার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। যদিও এরপর আইনজীবী আর অভিযোগ জানাননি। বিভাসকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করছেন তদন্তকারীরা। তাঁকে জেরা করে আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সামনে আসবে বলেই আশা করা হচ্ছে।
  • Link to this news (প্রতিদিন)