শুধুমাত্র বাংলাভাষায় কথা বলায় বাংলাদেশি বলে সন্দেহ! এই সন্দেহেই মুম্বই পুলিশ এক গৃহবধূকে ২৪ ঘণ্টা আটক রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করল। দক্ষিণ ২৪ পরগনার বজবজের বাসিন্দা সোমা বিবি পরে অবশ্য সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপ ও বজবজ থানা পুলিশের সহযোগিতায় মুক্তি পান।
ওই মহিলার পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বজবজ ১ নম্বর ব্লকের উত্তর রায়পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দা জাহির জমাদার কর্মসূত্রে দীর্ঘদিন ধরে নভি মুম্বই এলাকায় বসবাস করছিলেন স্ত্রী সোমা বিবিকে নিয়ে। সেখানে একটি শপিং মলে ও দুটি বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করতেন সোমা, আর জাহির ছিলেন এক বহুতলের নিরাপত্তারক্ষী। দুই ছেলে ও তাঁদের পরিবার বর্তমানে বজবজেই থাকেন।
পরিবারের দাবি, গত বৃহস্পতিবার রাত ৮টা নাগাদ শিরোনা বাজারে কাজ সেরে ছেলের সঙ্গে ফোনে কথা বলতে বলতে বাড়ি ফিরছিলেন সোমা বিবি। সেই সময়, বাংলায় কথা বলার কারণে মুম্বই পুলিশের এক মহিলা অফিসার তাঁকে বাংলাদেশি সন্দেহে আটক করে নিয়ে যান। পুলিশ তাঁকে লকআপে না রেখে থানায় বসিয়ে রাখেন। টানা ২৪ ঘণ্টা ধরে চলে পরিচয়পত্র যাচাই ও প্রশ্নবাণ।
ঘটনার খবর পৌঁছায় বজবজে। সঙ্গে সঙ্গে উত্তর রায়পুর পঞ্চায়েত ও বজবজ থানার পুলিশ উদ্যোগী হয় যোগাযোগে। পাশাপাশি, ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অফিসেও জানানো হয় বিষয়টি। তাঁদের তৎপরতায় শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ সোমা বিবিকে মুক্তি দেয় মুম্বই পুলিশ।
সোমা বিবির বড় ছেলে সাহাবুদ্দিন জমাদার বলেন, ‘আমার মা দীর্ঘদিন ধরে বৈধভাবে মুম্বইতে কাজ করছেন। এমন আচরণে আমরা গভীরভাবে মর্মাহত। এখন তাঁকে ফিরিয়ে আনার জন্য ট্রেনের টিকিট কাটা হয়েছে। মুম্বইতে তাঁকে আর পাঠাতে চাই না।’ এই ঘটনার প্রেক্ষিতে বাংলাভাষী শ্রমজীবী মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। শুধুমাত্র ভাষার ভিত্তিতে এই ধরনের আচরণ মানবাধিকারের পরিপন্থী বলেই মনে করছে ওয়াকিবহল মহল।